Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

উত্তর বলে দিচ্ছেন পার্শ্বশিক্ষকরাই, বিতর্ক নওদার স্কুলে

পর্ষদের নির্দেশ রয়েছে, মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন পার্শ্ব শিক্ষকেরা স্কুলে ঢুকতে পারবেন না। কিন্তু অভিযোগ, পরীক্ষার শুরুর দিন থেকেই নওদার টুঙ্গি স্বামী স্বরূপানন্দ হাইস্কুলে সহ শিক্ষকদের মতোই পরীক্ষার হলে ঢুকছেন আটজন পার্শ্ব শিক্ষকেরা। তাঁদের একাংশ গৃহ শিক্ষকতা করেন। ওই পড়ুয়াদের সাহায্য করার জন্যই তাঁরা হলে ঢুকছেন।

নির্দেশিকায় স্পষ্ট, পরীক্ষাহলে প্যারা টিচারকে ঢুকতে মানা করা হয়েছে (লাল রঙে চিহ্নিত)।—নিজস্ব চিত্র

নির্দেশিকায় স্পষ্ট, পরীক্ষাহলে প্যারা টিচারকে ঢুকতে মানা করা হয়েছে (লাল রঙে চিহ্নিত)।—নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নওদা শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:০৩
Share: Save:

পর্ষদের নির্দেশ রয়েছে, মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন পার্শ্ব শিক্ষকেরা স্কুলে ঢুকতে পারবেন না। কিন্তু অভিযোগ, পরীক্ষার শুরুর দিন থেকেই নওদার টুঙ্গি স্বামী স্বরূপানন্দ হাইস্কুলে সহ শিক্ষকদের মতোই পরীক্ষার হলে ঢুকছেন আটজন পার্শ্ব শিক্ষকেরা। তাঁদের একাংশ গৃহ শিক্ষকতা করেন। ওই পড়ুয়াদের সাহায্য করার জন্যই তাঁরা হলে ঢুকছেন।

শ্যামনগর, ডাকাতিয়াপোতা, বালি ও পাটিকাবাড়ি স্কুলের ৭৬৩ জন পড়ুয়ার ওই স্কুলে ‘সিট’ পড়েছে। বুধবার থেকে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সোমবার ছিল অঙ্ক পরীক্ষা। এ দিন হল থেকে বেরিয়ে পড়ুয়া ও তাদের অভিভাবকেরা ক্ষোভ উগরে দেন। তাঁরা বলেন, ‘‘ওই স্কুলের কয়েকজন পার্শ্ব শিক্ষক বিভিন্ন ঘরে ঢুকে বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে। ওঁরা নিজেদের ছাত্রদের উত্তর বলে দিয়েছেন। এ নিয়ে ঘরের মধ্যে চিৎকার চেঁচামেচি বেধে যায়। অনেকেই জানা অঙ্কের উত্তর মেলাতে পারেনি।’’ এক ছাত্র জানাল, এমনটা ইংরেজি পরীক্ষার দিনও ঘটেছিল। ওই শিক্ষকদের কাছে অনেকেই টিউশন নেয়। ওঁরা ওই ছাত্রদের ফিস ফিস করে ছোট প্রশ্নের উত্তর বলে দিয়েছিল।

জেলার শাসকদলের শিক্ষক সংগঠনের এক নেতাও জানাচ্ছেন, মাধ্যমিকে উত্তর বলে দিতে হবে—এই শর্তেই অনেক পড়ুয়া ওই পার্শ্ব শিক্ষকদের কাছে টিউশন নেয়। সেই শর্ত পূরণ করতে ওই শিক্ষকেরা এমনটা করে থাকেন। তবে স্কুলকে সতর্ক থাকা দরকার। ওঁদের তো পরীক্ষার হলে ঢোকার কোনও অধিকারই নেই।

নওদা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তথা জেলা পরিষদের কমার্ধ্যক্ষ মোসারফ হোসেন বলছেন, ‘‘পার্শ্ব শিক্ষকদের এই ‘কীর্তি’—র কথা আমার কানে এসেছে। বিষয়টি প্রশাসনের শীর্ষ স্তরে জানাব।’’ মধুপুর টোকিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জুলফিকার আলি ভুট্ট বলেন, ‘‘কয়েকজন ছাত্র জানিয়েছে, পার্শ্ব শিক্ষকেরা পরীক্ষার হলে ঢুকে ১৫ জনকে উত্তর বলে দিয়েছে।’’

স্কুল কর্তৃপক্ষ কেন ওই পার্শ্ব শিক্ষকদের পরীক্ষার হলে ঢুকতে দিলেন? ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রণব মণ্ডল আমতা আমতা করে বলছেন, ‘‘অনেক দিন ধরেই আমি অসুস্থ। স্কুলে সব দিকে নিখুঁত ভাবে নজর দিতে পারি না। কী ভাবে এমনটা ঘটল, তা খতিয়ে দেখব।’’

ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের ইনচার্জ সুধাকর ঘোষ বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ওঁরা হয়ত স্কুলের বারান্দায় ছিল। হলে ঢোকেনি।’’ কিন্তু পরীক্ষা চলাকালীন পার্শ্ব শিক্ষকদের তো স্কুলে ঢোকারই কথা নয়। এ প্রশ্নের অবশ্য কোনও উত্তর দেননি সুধাকরবাবু।

জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) পূরবী দে বিশ্বাস বলেন, ‘‘পার্শ্ব শিক্ষকদের পরীক্ষা কেন্দ্রে থাকার প্রশ্নই আসে না। তার উপর উত্তর বলে দেওয়া হয়েছে বলে শুনছি। এ নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করা খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Madhyamik students
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE