দিন কয়েক আগেও গোষ্ঠী কোন্দলের কথা উঠলেই জেলার নেতারা হাসতে হাসতে বলতেন, ‘‘ওটা তো দলের অলঙ্কার, ও দিয়ে আমাদের আটকানো যায়?’’
পঞ্চায়েত ভোট কড়া নাড়ছে দরজায়। বিজেপি-র দিল্লি-নেতাদের রাজ্যে আনাগোনা বেড়েছে। এ বার তাই কাটা ছেঁড়া শুরু হয়েছে তৃণমূলে।
দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পঞ্চায়েত ভোটকে যে পাখির চোখ করেছেন, দিন কয়েক আগে দলের কোর কমিটির সভায় তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, জানিয়ে দিয়েছেন, কাউকেই রেয়াত করছেন না তিনি।
সেই ধমক খেয়ে দলের কোন্দল ঢাকতে শেষ পর্যন্ত সভা ডাকল নদিয়া জেলা তৃণমূল। আর, সেখানেই দলের কাজিয়া থামাতে, বেনজির ভাবে কড়া কথায় সমঢে দেওয়া হল দলীয় নেতাদের অনেককেই।
শনিবার কৃষ্ণনগরে হওয়া সভার পরে জেলার এক প্রবীণ নেতা তাই বলছেন, ‘‘গোষ্ঠী কোন্দল নিয়ে জেলা দফতরে তাড়া তাড়া অভিযোগ, সময়ে রাশ টানলে এমন প্রকাশ্যে ধমকাতে হত না।’’
এ দিনের সভায় সব থেকে বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন দলের প্রাক্তন জেলা সবাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত। সভার গতির বিপরীতে গিয়ে আচমকাই দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়কে আক্রমণ করে যে শুরুটা করে দিয়েছিলেন গৌরী, সভায় সেই খেই ধরে রাখলেন অন্যরাও।
এ দিন, গৌরীর হুঁশিয়ারি ছিল, ‘‘এখনও যাঁরা কাঁচরাপাড়ার নেতার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, তাঁদের ওখানে গিয়েই থাকতে হবে।’’ প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি মুকুলের হাত এখনও নদিয়ায় বিস্তৃত? এবং জেলা নেতাদের কাছে এখনও তিনি জুজু?
দিন কয়েক আগে দলের জেলা নেতৃত্বকে ডেকে কড়া ভাষায় এই কোন্দল থামানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জেলা সভাপতি উজ্জ্বল বিশ্বাস, শঙ্কর সিংহরাও বিরোদ মেটানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। তবে গৌরিশঙ্করের মতো উগ্র ছিলেন না কেউই। দলের নেতাদের একাংশের বক্তব্য, ‘‘গৌরীদার হাত থেকে জেলার সভাপতিত্ব গিয়েছে। তাঁর ‘বন্ধু’ উজ্জ্বল বিশ্বাসই এখন শেষ কথা। হারানো জমি ফিরে পেতেই তাই গৌরীর এমন আস্ফালন!’’
তবে, এ দিনের সভায়, শান্তিপুরের বিবদমান দুই নেতাকে ফের এক বার সমঝে দেওয়া হয়েছে। গৌরীশঙ্কর তাঁদের বলেন, ‘‘অরিন্দম ও অজয়ের মধ্যে একটা সমস্যা তৈরি হয়েছে। এরা কেউই ২০১১ সালের আগে দলটা করতেন না। মনে রাখবেন, দু’জনকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।’’
সদ্য তৃণণূলে পা দেওয়া শঙ্কর সিংহও পরামর্শ দিতে রেয়াত করেননি, “চাকদহের পুরপ্রধান দীপক চক্রবর্তীর সঙ্গে দীর্ঘ দিন রাজনীতি করেছি। আবার দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের মধ্যে দিয়েই বিধায়ক হয়েছে রত্না ঘোষ। দু’জনই বিচক্ষণ। আলোচনা করে মিটিয়ে নিন।” শান্তিপুরের প্রসঙ্গে শঙ্কর ধরিয়ে দেন, “অরিন্দম ও অজয়ের মধ্যে একটা বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সেটা মেটানো যাবে না
এমনটা নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy