দিন কয়েক আগেই শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, রাজ্যের সব স্কুলেই পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সরকারি বই-ই পড়াতে হবে। বাজার চলতি হরেক প্রকাশনার বই স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হবে না। কিন্তু শিক্ষাবর্ষ শুরুর দু’মাস পেরিয়েছে। অথচ এখনও অনেক স্কুলেই বই আসেনি। এ দিকে মাস খানেক পরেই শুরু হবে প্রথম ইউনিট টেস্ট। বই না আসায় পড়ুয়ারা তার প্রস্তুতি নিতে পারছে না। শিক্ষকেরাও ক্লাসে গিয়ে বুঝতে পারছেন না, কী পড়াবেন।
শিক্ষকদের দাবি, গোটা তেহট্ট মহকুমার কোনও স্কুলেই সব বই আসেনি। কোনও ক্লাসে সাকুল্যে একটা বিষয়ের বই এসেছে। অনেক ক্লাসের আবার কোনও বই-ই আসেনি। হোগলবেড়িয়া আদর্শ শিক্ষা নিকেতনে দশম শ্রেণিতে ৩৭০ জন ছাত্র ছাত্রী রয়েছে। তাদের মধ্যে মাত্র ১৭০ জন ইংরেজি বই পেয়েছে। বাংলা বই পেয়েছে ২৮০ জন। ওই স্কুলেই নবম শ্রেণিতে ৪০০ জন ছাত্র রয়েছে। বেশিরভাগ পড়ুয়াই পর্ষদ প্রকাশিত বাংলা-ইংরেজি বই পায়নি। একই ভাবে ষষ্ঠ শ্রেণির অনেক পড়ুয়াই বাংলা সহায়ক বই পায়নি।
যমশেরপুর বিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাপস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “প্রতিটি ক্লাসে প্রায় এক তৃতীয়াংশ ছাত্র-ছাত্রীকে এখনও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পায়নি। তারা ক্লাসে অন্যের বইয়ে উঁকি মেরে পড়ছে। এ ভাবে পড়াশোনা সম্ভব নয়। অবর বিদ্যালয় পরিদর্শককে জানিয়েও বই মিলছে না। এ দিকে পরীক্ষাও এগিয়ে আসছে।’’
কেচুয়াডাঙা বিধানচন্দ্র কৃষি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক ছাত্র জানায়, এপ্রিলে প্রথম ইউনিট টেস্ট হবে। এখনও বই মিলল না। এই সব বই বাজারেও পাওয়া যায় না।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) মিতালি দত্ত বলেন, “এমনটা হওয়ার কথা নয়। স্থানীয় অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিস থেকে প্রতিটি স্কুলে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বই সরবরাহ করা হয়। বই না পেলে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক আমাকে জানালেই বই দেওয়া হবে।’’ করিমপুর চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক মহম্মদ গিয়াসুদ্দিনকে বারবার ফোন করা হলেও সাড়া মেলেনি।
অন্যদিকে মুর্শিদাবাদে হাই মাদ্রাসা ও সিনিয়র মাদ্রাসার সব ছাত্রছাত্রী এখনও সরকারি বই পায়নি। মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল মাদ্রাসা শিক্ষক সংগঠনের কর্তা মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘‘অষ্টম শ্রেণির ইতিহাস বই এখনও মেলেনি।’’ হরিহরপাড়ার পদ্মনাথপুর হাইমাদ্রাসার নবম ও দশম শ্রেণির সব ছাত্রছাত্রী বই পায়নি। হরিহরপাড়া হাজি আলম বক্স সিনিয়র
মাদ্রাসায় অষ্টম শেণির পড়ুয়ারা এখনও অনেক বই-ই পায়নি। ওই সিনিয়র মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণিতে ভুল করে বিলি করা হয়েছে হাই মাদ্রাসার আরবি ব্যাকরণ বই। সারা জেলা জুড়েই বই-এর আকাল। মাদ্রাসা বোর্ডের মুর্শিদাবাদ জেলা সরবরাহ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মী রাকিব মণ্ডল বলেন, ‘‘এ বিষয়ে অধিকর্তা (মাদ্রাসা শিক্ষা) যা বলার বলবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy