Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ইন্দ্রনীলকে উঠতে দেখেই ‘ঐক্য’ মঞ্চ ছাড়লেন হুমায়ুন

কংগ্রেসের গড়ে ‘মহামিছিল’-এর ডাক দিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলায় দলের ‘ঐক্য’ ফেরাতে চেয়েছিল শাসকদল। শনিবার দুপুরে দলের এক ঝাঁক শীর্ষ নেতার সামনে ‘সমন্বয়’ ফেরানোর সেই চেষ্টায় কার্যত জল ঢেলে দিলেন দলের সেই নেতারাই। মঞ্চে এক জনকে উঠতে দেখেই অন্য দিকের সিঁড়ি দিয়ে নেমে গেলেন অন্য জন। শুধু তাই নয়, লোকসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী ইন্দ্রনীল সেন যখন বলছেন, “কে মঞ্চ থেকে নেমে গেলেন জানিনা। অনেক কর্মীর মাঝে নির্দিষ্ট এক জন কর্মীকে খেয়াল করা সম্ভব নয়।”

মঞ্চে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাশে তখন ইন্দ্রনীল সেন। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

মঞ্চে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাশে তখন ইন্দ্রনীল সেন। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

শুভাশিস সৈয়দ
বহরমপুর শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৪ ০১:৫৫
Share: Save:

কংগ্রেসের গড়ে ‘মহামিছিল’-এর ডাক দিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলায় দলের ‘ঐক্য’ ফেরাতে চেয়েছিল শাসকদল।

শনিবার দুপুরে দলের এক ঝাঁক শীর্ষ নেতার সামনে ‘সমন্বয়’ ফেরানোর সেই চেষ্টায় কার্যত জল ঢেলে দিলেন দলের সেই নেতারাই।

মঞ্চে এক জনকে উঠতে দেখেই অন্য দিকের সিঁড়ি দিয়ে নেমে গেলেন অন্য জন। শুধু তাই নয়, লোকসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী ইন্দ্রনীল সেন যখন বলছেন, “কে মঞ্চ থেকে নেমে গেলেন জানিনা। অনেক কর্মীর মাঝে নির্দিষ্ট এক জন কর্মীকে খেয়াল করা সম্ভব নয়।”

যাঁর দিতে তাঁর তির, প্রাক্তন মন্ত্রী তথা দলের প্রাক্তন জেলা কার্যকরী সভাপতি হুমায়ুন কবীর তাই শুনে বলছেন, “এক জন অরাজনৈতিক ব্যক্তি আমাকে কর্মী বলল, না নেতা বলল, তাতে আমার কিছু এসে যায় না। ওঁর সঙ্গে তো আমি কথাই বলিনা।”

দিন কয়েক আগে তৃণমূলের ‘দুর্নীতি’ ও ‘অপশাসনের’ বিরুদ্ধে নিজের খাসতালুক বহরমপুরে বিশাল মিছিল করেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তারই পাল্টা জবাব দিতে শনিবার মহামিছিলের ডাক দিয়েছিল তৃণমূল। তবে দলের অন্দরের খবর, মিছিলের আড়ালে মুর্শিদাবাদে দলের ঐক্য ফেরানোই ছিল মূল লক্ষ্য। জেলার ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতাদের তৃণমূল ভবনে ডেকে আগাম সে বার্তাও দিয়েছিলেন শীর্ষ নেতারা। কিন্তু তা যে বিক্ষুব্ধদের ক্ষোভ প্রশমনে যথেষ্ট ছিল না এ দিন ফের তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।

ইন্দ্রনীল-হুমায়ুন ‘সম্পর্ক’ নিয়ে কিছু দিন ধরেই অস্বস্তিতে রয়েছে দল। একদা অধীর-ঘনিষ্ঠ হুমায়ুন কংগ্রেস ছেড়ে শাসকদলে পা দেওয়ার পুরস্কার পেয়েছিলেন হাতেনাতে। প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের মন্ত্রী হিসেবেই দলে অভিষেক হয়েছিল তাঁর। শুধু তাই নয়, উপনির্বাচনে পরাজয়ের পরেও মুখ্যমন্ত্রীর ‘প্রশ্রয়ে’ মাস কয়েক মন্ত্বীর চেয়ার থেকে গিয়েছিল তাঁর হাতেই। লোকসভা নির্বাচনেও তাঁকেই বহরমপুর থেকে প্রার্থী করা একরকম ‘নিশ্চিত’ বলে প্রচার করেছিলেন তাঁর অনুগামীরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শিকে ছেঁড়ে গায়ক ইন্দ্রনীলের। দু-জনের সম্পর্কে ‘মেঘ জমতে’ থাকে সেই থেকেই।

সেই সময় মঞ্চ থেকে নেমে পাশের চায়ের দোকানে এসে বসেন হুমায়ুন কবীর। বহরমপুরে শনিবার।

হুমায়ুন অনুগামীদের অভিযোগ, নির্বাচনে ভরাডুবির পরে, ইন্দ্রনীল দলনেত্রীর কান ভারী করেন--নির্বাচনে হুমায়ুন তাঁকে সাহায্যই করেননি বলে। দলের জেলা পর্যবেক্ষক হিসেবে পুরনো কমিটিও ভেঙে দেন ইন্দ্রনীল। বাদ পড়েন হুমনায়ুন-সহ অন্য পদাধিকারীরা। দলের একাংশের অভিযোগ, নির্বাচনের পরে বহরমপুরে আর বিশেষ যাতায়াত ছিল না ‘বহিরাগত’ ইন্দ্রনীল সেনের। তাঁকে দিয়ে অধীরের গড়ে সংগঠন মজবুত সম্ভব নয় বুঝতে পেরেই কী ফের হুমায়ুনের ‘শক্তিবৃদ্ধি’র চেষ্টা শুরু হয়। দলের মুশির্দাবাদ জেলার যুগ্ম পর্যবেক্ষক আশিস চক্রবর্তী শুক্রবারও বৈঠক করে জানিয়ে দেন, “জেলা নেতাদের কয়েক জনের অভিমান ছিল। সেই অভিমান মুছতে, হুমায়ুনকে নিয়ে চলতে হবে বলে জেলা নেতৃত্বকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” ওই বৈঠকে অবশ্য ডাক পাননি ইন্দ্রনীল। এ দিনের মহামিছিলেও ‘ব্যক্তিগত’ কারনে তাঁর না থাকারই কথা ছিল।

কিন্তু মিছিল শুরু হতেই দেখা যায়, দলের মহাসচিব পার্থ চট্ট্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে হাজির ইন্দ্রনীল। পার্থবাবুর সঙ্গে তাঁকে মঞ্চে উঠতে দেখেই নেমে যান হুমায়ুন। খানিক পরে তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করেন, কমিটি থেকে বাদ পড়া অন্য জেলা নেতা, সাগির হোসেন, মহম্মদ আলিরা। মঞ্চ থেকে নেমে খানিক দূরে একটি চায়ের দোকানে বসে হুমায়ুন বলেন, “ওঁকে (ইন্দ্রনীল) দেখেই তো মঞ থেকে নেমে এলাম। ওঁর সঙ্গে এক মঞ্চে থাকা যায় নাকি!”

অথচ মহামিছিল কিংবা মঞ্চ থেকে নাগাড়ে বার্তা দেওয়া হল দলীয় ‘ঐক্যের’। যা শুনে হুমায়ুন বলছেন, “চিৎকার করলেই ঐক্য হয় না। ঐক্যের বাতাবরণ তৈরি করতে হয়।”

দিনান্তে ইন্দ্রনীলের পাল্টা জবাব, “কে কী বলছে তা নিয়ে বিভ্রান্ত হবেন না। আমি আপনাদের সঙ্গে আছি।”

সহায়িকা নিয়োগের পরীক্ষা বাতিল

নিজস্ব সংবাদদাতা • কৃষ্ণনগর

মন্ত্রীর নির্দেশে স্থগিত হয়ে গেল অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকা নিয়োগের পরীক্ষা। রবিবার কৃষ্ণনগর-১ ও ২, নবদ্বীপ ও চাপড়া ব্লকের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী পদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা ছিল। কিন্তু নিয়োগ কমিটির সভাপতি তথা কারিগরি শিক্ষা দফতরের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাসের চিঠি পেয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সদর মহকুমা প্রশাসন। মন্ত্রীর বক্তব্য, আগে কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকের লিখিত পরীক্ষায় এমন প্রশ্ন ছিল যা অষ্টম-উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের পক্ষে যথেষ্ট কঠিন। তিনি বলেন, “প্রশ্ন পত্রের মান নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। আমি খতিয়ে দেখে আপাতত পরীক্ষা স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছি।” মহকুমা শাসক মৈত্রেয়ী গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যসূচি অনুযায়ী প্রশ্নপত্র তৈরি হয়েছিল। মন্ত্রীর নির্দেশে পরীক্ষা আপাতত স্থগিত করে দিয়েছি। পরবর্তী নির্দেশ পেলে বলতে পারব আবার পরীক্ষা হবে কিনা, বা কবে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE