শুরুটা করেছিলেন নেতারা। আর খুশির ঈদে সেই বৃত্তটা সম্পূর্ণ করলেন দলীয় কর্মী-সমর্থকরা।
রমজান মাস জুড়ে ইফতারকে কার্যত জনসংযোগের অন্যতম মাধ্যম হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন নেতারা। একই দিনে একাধিক ইফতারে যোগ দিতে ছুটেছেন কোনও নেতা, এমন নজিরও নেহাত কম নেই। রোজার শেষে ঈদের সকালে নেতাদের শুভেচ্ছা জানাতে উপহার নিয়ে বাড়িতে ছুটে এলেন দলীয় কর্মী-সমর্থকরা। ইফতারের আয়োজন ও ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে এ বার বিশেষ ভূমিকা নিয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশও। ইমামদের কাছেও পুলিশের তরফে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে ঈদের সওগাত।
ইফতারে যোগ দিতে তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী হুমায়ুন কবীর গোটা রমজান মাস জুড়ে ছুটে বেরিয়েছেন জেলার এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত। তবে ঈদের দিনটা তিনি তাঁর শক্তিপুরের বাড়িতেই কাটিয়েছেন। মঙ্গলবার নারকেলবাড়ির ঈদগাহে সকাল আটটায় ঈদের নমাজ সেরে তিনি সটান বাড়িতে চলে আসেন। নমাজ সেরে তাঁর বাড়িতেও ততক্ষণে হাজির হয়ে গিয়েছেন দলীয় কর্মী-সমর্থক ও তাঁর অনুগামীরা। কারও হাতে রান্না করা সেমুই। কারও হাতে মাংস। কেউ আবার এনেছেন হাড়িভর্তি রসগোল্লা। ফোন ও এসএমএসেও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অনেকে। হুমায়ুন বলেন, “বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনও এসেছিলেন। সকলের সঙ্গেই দিনটা খুব ভাল কাটালাম।”
সোমবার সন্ধ্যায় হাজারেরও বেশি রোজদার নিয়ে জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ের প্রাঙ্গণে টুপি মাথায় ইফতারের দেখভাল করেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। রোজদারদের সঙ্গে দু’হাত তুলে সবার মঙ্গল কামনায় দোয়া করেছিলেন তিনি। রাত পোহাতেই অনুগামীদের ভিড় বাড়তে থাকে অধীর চৌধুরীর বাসভবনেও। সেখানে তাঁকে ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে অনুগামীরা নিয়ে আসেন ফুলের মালা, সেমুই, মাংস, বিরিয়ানি, পোলাও, কাবাব ও মিষ্টি-সহ আরও নানা পদ। তবে বুধবারের লোকসভা অধিবেশনে যোগ দিতে এ দিন দুপুরেই তাঁকে দিল্লি ছুটতে হয়। বাড়ি থেকে তিনি দিল্লি রওনা দেওয়ার আগে জেলা কংগ্রেস ভবনে গিয়েছিলেন। সেখানেও ভরতপুর, হরিহরপাড়া-সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাঁর জন্য কর্মী-সমর্থকরা নিয়ে এসেছিলেন বিরিয়ানি, পোলাও, মাংস, পোস্তর বড়া, মিষ্টি, পায়েস ও সেমুই। কখনও একটুকরো মাংস, কখনও একটু কাবাব, কখনও বা একটা পোস্তর বড়া মুখে দিয়ে ‘দাদা’ তাঁর নিজস্ব ভঙ্গিতেই বলেছেন, “ঈদের মাংসের স্বাদই আলাদা। বেড়ে হয়েছে পোস্তর বড়াটাও।” সকাল থেকেই তাঁর মোবাইলের ইনবক্স ভরে গিয়েছে শুভেচ্ছা বার্তায়। প্রতি-শুভেচ্ছা জানাতে অধীর ছিলেন অক্লান্ত। অধীর বলেন, “ঈদ, পুজোর মতো উৎসবগুলো একইসঙ্গে ধর্মীয় ও সামাজিক। ফলে এই সামাজিকতা রক্ষা করে মানসিক তৃপ্তি পাওয়া যায়। পাশাপাশি সৌহার্দ্য ও সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে ওঠে।” ঈদ কেমন কাটালেন মুর্শিদাবাদের আর এক হুমায়ুন কবীর (জেলা পুলিশ সুপার)। মঙ্গলবার সকালে গোরাবাজার রাজামিঞার মোড়ের মসজিদে আমজনতার সঙ্গেই ঈদের নমাজ পড়েছেন জেলা পুলিশ সুপার। সেখানে সকলের সঙ্গে কোলাকুলি করে তিনি ঈদের প্রীতি বিনিময় করেন। এরপর তিনি গোটা শহর চক্কর দেন। তারই মধ্যে ইনবক্স খুলে শুভেচ্ছা বার্তা পড়তে ভোলেননি তিনি। এ বার জেলা পুলিশের তরফে জেলার বিভিন্ন থানায় ইফতারের আয়োজন করা হয়েছিল। ঈদের দিন ইমামদের কাছে পুলিশের তরফে পৌঁছে দেওয়া হয় ফুল ও মিষ্টি। পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “জেলার প্রতিটি থানা থেকে কাছাকাছি এলাকার ইমামদের কাছে খুশির ঈদের সওগাত পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।” সেই সওগাত ঠিকমতো পৌঁছেছে কি না তা নিজে ফোন করেও খোঁজ নেন পুলিশ সুপার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy