Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

কৃষ্ণনাথ কলেজে ছাত্র সংঘর্ষ পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকায়

ফের রণাঙ্গন শিক্ষাক্ষেত্র। আবারও আঙুল উঠছে বহিরাগতদের দিকে। বহরমপুর কলেজে ছাত্র সংঘর্ষের ঘটনার দু’দিনের মধ্যেই বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজের একই চিত্র। সোমবার দুপুর ১২ টা নাগাদ কলেজে ছাত্র সংসদ কার্যালয়ে বসে ছিলেন ছাত্র পরিষদের সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ সে সময় আচমকাই তাঁদের উপর হামলা চালায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বহিরাগতরা। উভয় পক্ষের সংঘর্ষে আহত হন ন’জন। এর মধ্যে আট জনই ছাত্র পরিষদের সদস্য। পাঁচ জন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

সংঘর্ষের জেরে পাশের স্কুলেও চলছে ভাঙচুর। নিজস্ব  চিত্র।

সংঘর্ষের জেরে পাশের স্কুলেও চলছে ভাঙচুর। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৪ ০১:২২
Share: Save:

ফের রণাঙ্গন শিক্ষাক্ষেত্র। আবারও আঙুল উঠছে বহিরাগতদের দিকে। বহরমপুর কলেজে ছাত্র সংঘর্ষের ঘটনার দু’দিনের মধ্যেই বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজের একই চিত্র। সোমবার দুপুর ১২ টা নাগাদ কলেজে ছাত্র সংসদ কার্যালয়ে বসে ছিলেন ছাত্র পরিষদের সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ সে সময় আচমকাই তাঁদের উপর হামলা চালায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বহিরাগতরা। উভয় পক্ষের সংঘর্ষে আহত হন ন’জন। এর মধ্যে আট জনই ছাত্র পরিষদের সদস্য। পাঁচ জন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

জেলা পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “ঘটনায় দু’পক্ষই বহরমপুর থানায় অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছে। তবে এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।” যদিও গোটা ঘটনায় কার্যত সাক্ষী থেকেছে পুলিশ।

দুপুর ১২টা নাগাদ পশ্চিম দিকের পিছনের দরজা দিয়ে কিছু বহিরাগত কলেজে ঢোকেন। অভিযোগ, তাঁরা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থক। কলেজ ভবনের নীচের তলায় ছাত্রসংসদ কার্যালয়ের মধ্যে ঢুকে ছাত্র পরিষদের সদস্যদের এলোপাথাড়ি মারতে শুরু করেন। বাদ যায়নি ছাত্রীরাও। হাতে ছিল লাঠি-বাঁশ-বেঞ্চির ভাঙা কাঠ। ঘটনায় কলেজের দিবা বিভাগের ছাত্রসংসদের সাধারণ সম্পাদক ছাত্র পরিষদের বিপ্লব কুণ্ডুর মাথা ফেটে যায়। পাঁচটি সেলাই পড়েছে তাঁর মাথায়। পাল্টা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন ছাত্র পরিষদের সদস্যরাও। কিন্তু সংখ্যায় কম থাকায় একতরফা মারধর চলে। খবর পেয়ে কলেজে জড়ো হন ছাত্র পরিষদের সদস্যরা। এবার তাঁরা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের উপরে পাল্টা চড়াও হয়। ভয়ে কলেজের ঠিক পিছনেই একটি স্কুলে ঢুকে পড়ে ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন টিএমসিপি সদস্যরা। শুরু হয় ইট-বৃষ্টি। দু’পক্ষের ওই সংঘর্ষে দিশেহারা ছাত্রছাত্রীরা কলেজ ছাড়েন তড়িঘড়ি। কলেজ অধ্যক্ষ কল্যাণাক্ষ ঘোষ বলেন, “শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী ও ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে আমরা শিউরে উঠছি। এ দিন কলেজে শেষে ১০ জ নের একটি প্রতিনিধি দল ওই বিষয়ে বহরমপুর মহকুমাশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের কাছে গিয়ে আলোচনাও করেছি। তাঁরা নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছেন। যদিও আমি কলেজ বন্ধ রাখার পক্ষে নই। পরিস্থিতি দেখে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

ফের রণক্ষেত্র শিক্ষাঙ্গন। ছাত্র পরিষদ-তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সংঘর্ষে সোমবার উত্তেজনা ছড়াল বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

এ দিকে ঘটনার পরেই শুরু হয়েছে চাপানউতোর। কলেজে হামলা চালানোর ঘটনার দায় ঝেড়ে ফেলতে মরিয়া তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। তাদের সাফাই ছাত্র পরিষদই বহিরাগতদের নিয়ে কলেজে ঢুকেছিল। টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি রাজা ঘোষ বলেন, “পুলিশ ও প্রশাসনিক বৈঠকে কলেজে কোনও বহিরাগত ঢুকবে না বলে সিদ্ধান্ত হওয়ার পরেও ছাত্র পরিষদ তা মানছে না। দিনের পর দিন বহরমপুর ও কৃষ্ণনাথ কলেজ ছাত্রসংসদ কার্যালয়ে ঢুকে বহিরাগতরা আড্ডা দিচ্ছে। তারা আমাদের সদস্য-সমর্থকদের ভয় দেখিয়ে ছাত্র পরিষদ করতে বাধ্য করছে। এ দিন তারই প্রতিবাদ করেছেন সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা। তাদের সঙ্গে আমাদের দলীয় সদস্য-সমর্থকরা থাকলেও থাকতে পারে। তবে সরাসরি জড়িত নয়।”

অন্য দিকে ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি সরফরাজ শেখ রুবেল বলেন, “পুলিশ ও প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদতে পরিকল্পিত ভাবে এ দিন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বহিরাগতরা আমাদের ছাত্র-সমর্থকদের উপরে হামলা চালিয়েছে। বিপ্লব কুণ্ডু ছাড়াও অমিত চৌবে, মইনুল হক, সাহিল শেখ ও বশির আলি বিশ্বাস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।”

জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র অশোক দাস গোটা ঘটনায় দায়ী করেছেন পুলিশি নিষ্ক্রিয়তাকে। সরাসরি আইসিকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, “বহরমপুর থানার আইসি পদে অরুণাভ দাস যত দিন থাকবেন, কলেজে ওই ধরনের ঘটনা বার বার ঘটবে। তাঁর পক্ষপাতমূলক আচরণ হিংসার পরিবেশ তৈরিতে সাহায্য করছে।” আইসি অরুণাভ দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

krishnath college students clash
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE