লোকসভা ভোটের পর নদিয়া জেলায় বাড়ছে বিজেপির প্রাথমিক সদস্য সংখ্যা। সিপিএম, কংগ্রেস ও তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার হিড়িক লেগেছে বলে দাবি বিজেপির নেতৃত্বের। এই জেলায় লোকসভার দু’টি আসনেই হেরেছে বিজেপি। তারপরেও জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যে ভাবে অন্য দলের নীচু স্তরের কর্মী-সমর্থকরা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। বিজেপির এক জেলা নেতা বলছেন, “রাজ্যে ক্ষমতায় আছে তৃণমূল। সেই দলেই তো লোকজনের যাওয়ার কথা। কিন্তু তৃণমূলের অনেকেই বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন।” তবে সিংহভাগ লোকজন সিপিএম থেকেই আসছেন বলে দাবি বিজেপির ওই নেতার।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নদিয়া জেলায় ২০০৯ সাল পর্যন্ত বিজেপির প্রাথমিক সদস্যের সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ১২৫ জন। ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ১০ হাজার ১৪০ জন বিজেপির সদস্য পদ গ্রহণ করেন। তারপর থেকে লোকসভা ভোটের আগে পর্যন্ত আরও প্রায় আড়াই হাজার প্রাথমিক সদস্য হন। ফলে লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির প্রাথমিক সদস্যের সংখ্যা ছিল ১৬ হাজার ৭৬৫ জন। কিন্তু লোকসভা ভোটের পরে সেই সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার ৬০০ জন বেড়েছে। দলের জেলা সভাপতি কল্যাণ নন্দী বলেন, “লোকসভা ভোটের পর দু’মাসে প্রায় ২০ হাজার ৬০০ জন আমাদের দলের প্রাথমিক সদস্য পদ গ্রহণ করেছেন।”
কী কারণে লোকসভা ভোটের পর মাত্র দু’মাসে এত দ্রুত বাড়ছে বিজেপি? কল্যানবাবুর দাবি, “যাঁরা আমাদের দলের সদস্যপদ গ্রহণ করছেন তাঁদের সিংহভাগই সিপিএম থেকে আসছেন।” কারণ হিসেবে কল্যাণবাবু জানাচ্ছেন, সিপিএম সাংগঠনিকভাবে ক্ষীণ হয়ে যাওয়ার জন্য তারা কর্মীদের নিরাপত্তা দিতে পারছে না। সেই কারণেই সিপিএমের লোকজন বিজেপিতে আসছেন। পাশাপাশি শাসকদলের প্রতি মোহভঙ্গ হওয়ার কারণে তৃণমূলেরও অনেকে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন বলে মত কল্যাণ নন্দীর। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, লোকসভা ভোটের আগেই জেলার অন্য রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা তাদের প্রতি আকৃষ্ট হন। সেই কারণেই জেলার দুই লোকসভা আসনেই তারা বিপুল ভোট পায়। কিন্তু ভোটের ব্যস্ততার দরুণ তাঁদের প্রাথমিক সদস্য পদ দেওয়া যায়নি। সদ্য দলে আসাদের সিংহভাগই নতুন প্রজন্মের বলে জানাচ্ছেন দলের জেলা কমিটির মুখপাত্র সৈকত সরকার।
অনেকের ধারণা, শিক্ষাক্ষেত্রে তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের গা-জোয়ারির মনোভাব ও সরকারি চাকরিতে নিয়োগে অস্বচ্ছতা যুব সমাজকে শাসকদল থেকে বিমুখ করেছে। একই সঙ্গে এই যুবকেরা নিকট অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে সিপিএমেও যোগ দিতে পারছেন না। ফলে তাঁদের রাজনৈতিক গন্তব্য বলতে বিজেপি।
বিজেপির শক্তিবৃদ্ধি প্রসঙ্গে সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য এসএম সাদি বলেন, ‘‘আমাদের দলের বিতাড়িতরাই রাজনৈতিক আশ্রয় পেতে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন।” জেলা তৃণমূলের সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘আমাদের জন প্রতিনিধি বিজেপিতে যাননি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy