Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

নায়িকার নামে চাঙ্গা শাড়ি-বাজার

বোকা বাক্সের কী মহিমা! মন্দা বাজার চাঙ্গা করতে দরকার শুধু ‘টিভি সিরিয়ালে’র নায়িকাদের নামটুকু। তা সে সালোয়ার হোক বা শাড়ি, চুলের ছাট হোক বা পায়ের চটি। শান্তিপুর থেকে ফুলিয়া, বাজার ব্যবসায়ীরাও সে কথাই জানালেন। তাঁদের কথা অনুযায়ী গত দশ বছরের তুলনায় এ বার বাজার নাকি অনেকটাই চাঙ্গা।

ফুলিয়ায় জমে উঠেছে শাড়ির বাজার। নিজস্ব চিত্র।

ফুলিয়ায় জমে উঠেছে শাড়ির বাজার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিপুর শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:২৬
Share: Save:

বোকা বাক্সের কী মহিমা!

মন্দা বাজার চাঙ্গা করতে দরকার শুধু ‘টিভি সিরিয়ালে’র নায়িকাদের নামটুকু। তা সে সালোয়ার হোক বা শাড়ি, চুলের ছাট হোক বা পায়ের চটি। শান্তিপুর থেকে ফুলিয়া, বাজার ব্যবসায়ীরাও সে কথাই জানালেন। তাঁদের কথা অনুযায়ী গত দশ বছরের তুলনায় এ বার বাজার নাকি অনেকটাই চাঙ্গা। আর পিছনে রয়েছেন পাখি ঘোষ দস্তিদার বা বাহামণি সোরেন। তবে এই ট্রেন্ড নতুন নয়। গত কয়েক বছর ধরেই বাজার মাত করে আসছে টেলিভিশনের ধারাবাহিকগুলি। এক দশক বা তার আগেও পুজোর বাজারে থাকত বলিউড সিনেমার ধারা। নয়ের দশকের শেষে বাজার গরম ছিল হলিউডি ‘টাইটানিক’-র ছোঁয়ায়। গত বছর পর্যন্ত চলেছে বাংলা ‘পাগলু’-র দাপট। তবে এখন তার পাশে সমান তালে পাল্লা দিয়ে চলে ধারাবাহিকের নায়ক নায়িকার ফ্যাশন। আর শুধুই কি নায়ক নায়িকা, খলনায়িকাদের সাজপোশাকও রীতিমতো সাড়া ফেলে পুজোর বাজারে।

তাই টুসু, বাহা, কাজলদের পাশেই জায়গা করে নিয়েছে গীতা শাড়িও। ধারাবাহিকের নাম হোক বা চরিত্রের নাম শাড়ি বিকোচ্ছে হু হু করে। এমনটাই দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা। শান্তিপুরের বিখ্যাত কাপড়ের হাট বঙ্গঘোষ ও জগদ্ধাত্রী তাঁত কাপড় হাটের সম্পাদক অরুণ ঘোষ বলেন, ‘‘এবার একাধিক সিরিয়ালের নামে শাড়ি বাজারে এসেছে। দ্রুত জনপ্রিয় হওয়া এই সব শাড়ির চাহিদাও আকাশ ছোঁয়া। চাহিদা অনুযায়ী শাড়ি সরবরাহ করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের।” তবে যাই হোক ধারাবাহিকের কল্যাণে সুদিন ফিরছে তাঁতের। শান্তিপুরের ব্যবসায়ীদের দাবি, নানা কারণে বেশ কয়েক বছর ধরেই শান্তিপুরের শাড়ির চাহিদা যেন কিছুটা কমে আসছিল। কিন্তু এই ধারাবাহিকের হাত ধরে শান্তিপুরি তাঁতের বাজার আবার চাঙ্গা হতে শুরু করেছে। আশায় বুক বাঁধছেন ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে তাঁতশিল্পীরা।

এমনকী সাধারণ থেকে অতিসাধারণ শাড়িও নতুন আঙ্গিক পেয়ে দেদার বিক্রি হচ্ছে ‘ফ্যাশন ট্রেন্ড’ নামে। এক ব্যবসায়ী জানান, আগে ‘মাঠা’ কাপড় বা কম দামের কাপড় বুনে তাঁত শ্রমিকদের রোজগার তেমন হত না। কিন্তু এখন সেই ‘মাঠা’ কাপড়ই ‘হট’। সঙ্গে শুধু মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে ‘সিল্ক’ বা ‘ঘিচা’ নামের বিশেষ ধরণের সুতো। এই শাড়িই আধাঅধি দুই রঙের আঁচলে সুতোর গিট দিয়ে ‘ঝুলপি’ তৈরি করে ‘আঁচল’ ধারাবাহিকের চরিত্র গীতার নামে চালান হচ্ছে। আবার সেই একই শাড়ির আঁচলে কদম ফুলের লেস লাগিয়ে নাম দেওয়া হয়েছে ‘বোঝেনা সে বোঝে না’। অনেকে আবার একে ডাকছেন ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’ বলে। নাম যাই হোক, আদতে ‘হাফ-হাফ’ এই শাড়ি অনায়াসে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে আটশো থেকে তিন-চার হাজার টাকাতেও।

শাম্তিপুর তাঁত বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক তারক দাস বলেন, “ধারাবাহিকের নামে তৈরি শাড়ির চাহিদাই এবার সব চাইতে বেশি। শান্তিপুরের বাজার ভাল। তাই ব্যবসায়ীরা যেমন এবার লাভের মুখ দেখছেন, তেমনই শ্রমিকরাও মজুরি পাচ্ছেন বেশি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

pujo saree santipur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE