পুকুর বোজানোর প্রতিবাদ করায় সরকারি আধিকারিকের সামনেই একটি পাক্ষিক পত্রিকার সম্পাদককে নিগ্রহ ও খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে কৃষ্ণগঞ্জের পূর্ণগঞ্জ এলাকায়। নিগৃহীত ওই সম্পাদকের নাম স্বপন ভৌমিক। তিনি কৃষ্ণগঞ্জ থানায় স্থানীয় তিন জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। জেলা পুলিশের ডিএসপি (সদর) অভিষেক মজুমদার বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
দীর্ঘ দিন ধরেই একটি পাক্ষিক পত্রিকার সম্পাদনা করে আসছেন স্বপনবাবু। তিনি চূর্ণী ও ইছামতি নদী সংস্কার অন্দোলনের সঙ্গেও যুক্ত। মাসখানেক আগে তিনি বাড়ির পাশে একটি পুকুরে মাটি ফেলে বোজাতে দেখেন। এরপরই তিনি গোটা বিষয়টি জানিয়ে জেলাশাসককে চিঠি দেন। স্থানীয় প্রশাসন নড়েচড়ে বসলে বন্ধ করে দেওয়া হয় মাটি ফেলার কাজ। জেলাশাসকের নির্দেশে শুরু হয় তদন্ত।
এদিন দুপুরে স্বপনবাবুকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান ব্লকের ভূমি ও ভূমি উন্নয়ন আধিকারিক। স্বপনবাবু বলেন, ‘‘এই পুকুর বোজানোর কাজে এলাকারই কয়েকজন প্রোমোটার জড়িত। আমি বাধা দেওয়ায় তাদের ব্যবসায় অনেক টাকা ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। তদন্ত চলাকালীন আমি নথি হিসাবে ঘটনাস্থলের ছবি তুলতে যাই। তখনই ওরা চড়াও হয়।”
অভিযুক্তদের মধ্যে অন্যতম সাধন হালদার অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘আমরা কোনও জলাশয় বোজানোর ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। আজ ওখানে কি হচ্ছে সেটা দেখতে গিয়েছিলাম। তখনই কিছু না জানিয়ে আমার ছবি তুলতে শুরু করে। আমি তাতে বাধা দিয়েছি মাত্র। স্বপনবাবুকে আমরা কিছুই করিনি। উনি বানিয়ে বলছেন।’’ ওই জলাভূমির মালিক গোবিন্দ দে বলেন, ‘‘জায়গাটা জলাভূমি হলেও আগাছায় ভরা। তাছাড়াও এই জলাভূমির কারণে বর্ষায় এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়ির ক্ষতি হয়ে যায়। তাই এলাকার মানুষ আমার উপরে ক্ষুব্ধ। আমি জলাশয়টার পাড় বাঁধানোর কথা ভাবছিলাম। সেই কারণেই আমি পাড়ে কিছুটা মাটি ফেলেছি। পুরোপুরি বুজিয়ে ফেলার কোনও উদ্দেশ্য আমার ছিল না।’’
তালদহ-মাজদিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য তৃণমূলের সুরজ আচার্য অবশ্য মেনে নিয়েছেন, পুকুরে মাটি ফেলার কাজ চলছিল। তিনি বলেন, ‘‘বেশ কিছু দিন ধরেই ওই পুকুরে মাটি ফেলা হচ্ছিল। তবে এখন বন্ধ আছে। স্বপনবাবু জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ করেছেন বলে অমি আর আলাদা করে কোনও অভিযোগ করিনি।’’ এ দিকে, অভিযুক্তরা এলাকায় সক্রিয় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত। কৃষ্ণগঞ্জ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি লক্ষণ ঘোষ চৌধুরী অবশ্য বলেন, “অভিযুক্তদের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy