Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

মান্নানের তালুকে অধীরের জনসভা

মান্নানের খাসতালুকে সভা করলেন অধীর। নাম না করে বললেন, ‘যে কেউ তৃণমূলে যোগ দিলেই কংগ্রেস দুর্বল হয়ে যায় না।’ মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ মান্নান হোসেনের ছেলে সৌমিক হোসেন সম্প্রতি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এরপর থেকেই অধীর-মান্নান সম্পর্ক নিয়ে রাজ্য-রাজনীতিতে জলঘোলা হচ্ছে বিস্তর।

বহরমপুরে প্রতিবাদ মিছিলে অধীর চৌধুরী। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

বহরমপুরে প্রতিবাদ মিছিলে অধীর চৌধুরী। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৪ ০১:০৬
Share: Save:

মান্নানের খাসতালুকে সভা করলেন অধীর। নাম না করে বললেন, ‘যে কেউ তৃণমূলে যোগ দিলেই কংগ্রেস দুর্বল হয়ে যায় না।’

মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ মান্নান হোসেনের ছেলে সৌমিক হোসেন সম্প্রতি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এরপর থেকেই অধীর-মান্নান সম্পর্ক নিয়ে রাজ্য-রাজনীতিতে জলঘোলা হচ্ছে বিস্তর।

রবিবার মান্নান হোসেনের ‘খাসতালুক’ রাধারঘাট এলাকায় একটি সভার আয়োজন করে বহরমপুর ব্লক কংগ্রেস। উত্তরপাড়া মোড়ে ব্লক কংগ্রেস কার্যালয়ের সামনে অস্থায়ী মঞ্চ করে ওই সভা হয়। সেখানে চাঁচাছোলা ভাষায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, “কেউ বা কারা যদি মনে করে তৃণমূলে যোগ দিয়ে আমি দেশ উদ্ধার করব, তারা করুক। কংগ্রেস ছেড়ে দু-চার জন চলে গেলে দলের কোনও ক্ষতি হবে না।”

অধীর চৌধুরীর নাম না করে পাল্টা মান্নান হোসেন আবার বলেন, “আমার বাড়ির পিছনে চাঁই সম্প্রদায়ের মানুষ বাস করেন। যে কোনও ঘটনা ঘটলে ওই সম্প্রদায়ের মোড়ল বিচার করেন। শেষ পর্যন্ত সকলে এক জোট হয়ে এক দিন ওই মোড়লের বিরুদ্ধেই ফতোয়া জারি করে বসে। আমি চাই না কারও হাল ওই মোড়লের মতো হোক।” মান্নানের দাবি, “গত কয়েক দিনে আমার এলাকায় কংগ্রেসের তিনটে সভা হয়েছে। প্রথম দিন এলাকার চারটে পঞ্চায়েতের কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের নিয়ে, দ্বিতীয় দিন জঙ্গিপুরের সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় ছিলেন। তৃতীয়টা উত্তরপাড়া মোড়ে এ দিনের সভা। কোনও ক্ষেত্রেই আমাকে ডাকা হয়নি। পঞ্চায়েত ভোটের সময় এই নেতা-নেত্রীরা কোথায় ছিলেন?”

দুই নেতার বাগযুদ্ধ চলছে ক’দিন ধরেই। তাতে অবশ্য ভাটা পড়েনি কর্মী-সমর্থকদের উচ্ছ্বাসে। এ দিনের সভাকে ঘিরে কংগ্রেসের সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। সভায় আনুষ্ঠানিক ভাবে কংগ্রেসে যোগ দেন বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএম সদস্য সুজাউদ্দৌলা।

সভায় বিজেপি ও তৃণমূলকেও আক্রমণ করেন অধীর। তিনি বলেন, “চার দিকে শুধু নাটক আর নাটক। দিল্লিতে নরেন্দ্র মোদী, রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এ দিকে সারদা কাণ্ডে কোটি কোটি টাকা লুঠ করে এখন বলছে শিল্পপতি আনতে সিঙ্গাপুর গেলাম। সিঙ্গুরে হল না। গেল সিঙ্গাপুর।” তাঁর কথায়, “সিপিএম গত ৩৪ বছরে ৬৫ হাজার কলকারখানা বন্ধ করেছে। সেখানে তৃণমূলের তিন বছরের রাজত্বে রাজ্যে প্রায় ২৩০০ কল-কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে গিয়ে কোনও দেশ উদ্ধার হবে না।”

এ দিন ওই সভার আগে রাজ্য জুড়ে শাসকদলের বিভিন্ন নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বহরমপুরে মিছিল বের করে কংগ্রেস। ওই মিছিলের সম্মুখভাগে ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। মিছিলের মুখ যখন বহরমপুর টেক্সটাইল কলেজ পেরিয়ে গিয়েছে, তখনও মিছিলের লেজ জেলা কংগ্রেস কার্যালয় ছাড়িয়ে মোহনের মোড়ের দিকে রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

public meeting adhir chowdhury baharampur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE