প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ঘুরে দেখছেন সোমা ভট্টাচার্য। —নিজস্ব চিত্র
রেশমবীজ সংরক্ষণের জন্য দেশের বৃহত্তম হিমঘর নির্মাণের কাজ শুরু হল বহরমপুরে। পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব ভারতে রেশমবীজ সংরক্ষণের হিমঘরও এটিই প্রথম। দেশে রেশমবীজ সংরক্ষণের হিমঘর আজ পর্যন্ত আরও দু’টি রয়েছে-- একটি মহিশূরে ও অন্যটি বেঙ্গলুরুতে। তবে ওই দু’টি হিমঘরে ৫ লক্ষ রেশমবীজ সংরক্ষণের ক্ষমতা রয়েছে। বহরমপুরের ‘কেন্দ্রীয় রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’-এর অধিকর্তা এস নির্মল কুমার বলেন, “বহরমপুরের হিমঘরে ২০ লক্ষ রেশমবীজ সংরক্ষণ করা যাবে।” তিনি জানান, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি-সম্পন্ন ওই হিমঘরে স্বয়ংক্রিয় অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তাপ নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
প্রস্তাবিত হিমঘরটির প্রকল্পব্যয় প্রায় এক কোটি টাকা। নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। সোমবার আনুষ্ঠানিক শিলান্যাস করেন রাজ্যের সুতি ও রেশম দফতরের কমিশনার সোমা ভট্টাচার্য এবং মুর্শিদাবাদ জেলাশাসক রত্নাকর রাও। শ্রীনগর, মহিশূর, কর্ণাটক ও বহরমপুর মিলে দেশে মোট চারটি ‘কেন্দ্রীয় রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ রয়েছে। বহরমপুর শহর লাগোয়া চোঁয়াপুর থেকে শুরু করে দেড় কিলোমিটার দূরের পঞ্চাননতলা পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ রেললাইন এবং ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের মধ্যবর্তী এলাকার গড়ে উঠছে ‘কেন্দ্রীয় রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’। ১৯৪৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ওই গবেষণা কেন্দ্রের জন্য মোট জমির পরিমাণ ৭৫ একর। তার মধ্যে ৩০ একর জুড়ে রয়েছে আবাসন ও পুকুর। লাগোয়া বাকি ৪৫ একর এলাকায় রেশম, পলুপোকা ও তুঁত চাষ হয়। সেখানেই রয়েছে গবেষণাগার ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। অধিকর্তা নির্মলবাবু বলেন, “এখানে হিমঘর না থাকায় বেঙ্গালুরু থেকে রেশমবীজ নিয়ে আসতে হয়। ফলে অনেক রেশমবীজ নষ্ট হয়ে যায়। পরিবহণ খরচের ফলে রেশমবীজের দাম খুব বেড়ে যায়।” নির্মীয়মাণ হিমঘরটিতে আগামী বছরের শেষাশেষি থেকে রেশমবীজ সংরক্ষণ করা যাবে, জানান তিনি।
এই রাজ্যে বৎসরে ২৩০০ মেট্রিক টন রেশম উৎপাদন হয়। তার জন্য প্রয়োজন ৫ কোটি রেশমবীজ। গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানী এম ভি শান্তা কুমার বলেন, “হিমঘরের কাজ সম্পূর্ণ হলে সেখানে এক সঙ্গে ২০ লক্ষ রেশমবীজ সংরক্ষণ করা যাবে। গবেষেণা কেন্দ্রের অনুমোদিত রেশমবীজ চাষির মধ্যে বিলি করা হবে।” রাজ্যের চাষিদের চাহিদা মেটাতে এই পরিমাণ যথেষ্ট, দাবি তাঁর। উদ্বৃত্ত বীজ বহরমপুরের হিমঘর থেকে সরবরাহ করা হবে উড়িষ্যা, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ছত্রিশগড়, অসম, মণিপুর, ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম ও অরুণাচল প্রদেশে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy