Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ফুলবাড়িতে বহিষ্কৃত চার তৃণমূল সদস্য

ভোট গণনার মুখে গৌতম দেবের বিধানসভা এলাকার চার পঞ্চায়েত সদস্যকে দল থেকে বহিষ্কারের ঘটনায় গুঞ্জন ছড়িয়েছে। শনিবার বিকেলে ফুলবাড়ি-২ দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে ওই সদস্যদের বহিষ্কারের কথা জানান এলাকার তৃণমূল নেতা তথা ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দেবাশিস প্রামাণিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৬ ০১:৪৭
Share: Save:

ভোট গণনার মুখে গৌতম দেবের বিধানসভা এলাকার চার পঞ্চায়েত সদস্যকে দল থেকে বহিষ্কারের ঘটনায় গুঞ্জন ছড়িয়েছে। শনিবার বিকেলে ফুলবাড়ি-২ দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে ওই সদস্যদের বহিষ্কারের কথা জানান এলাকার তৃণমূল নেতা তথা ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দেবাশিস প্রামাণিক।

নানা ধরনের অনৈতিক কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগে গৌতম দেবের নির্দেশেই ওই চারজনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হল বলে তিনি জানিয়েছেন। তৃণমূল সূত্রে জানানো হয়, ওই চারজন ফুলবাড়ি-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব ধনতলা এবং পশ্চিম ধনতলা এলাকা থেকে নির্বাচিত সদস্য। তাঁরা হলেন, উত্তম সরকার, দ্রৌপদী সরকার, অটল দাস এবং দেবেশ মণ্ডল। বহিষ্কৃতদের দাবি, তৃণমূলের নেতারাই বিভিন্ন দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। জমি কেনাবেচার অবৈধ কারবার থেকে নানা ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট রাজ চলছে। তা নিয়ে এলাকার বাসিন্দারাও ক্ষুব্ধ। এ সব দেখেই দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। তা টের পেয়েই তড়িঘড়ি দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। মিথ্যে দোষারোপ করে দুর্নীতির দায় তাদের উপরে চাপানোর চেষ্টা চলছে। তৃণমূল নেতৃত্বের অবশ্য অভিযোগ, নদীর চরে খাস জমি কেনাবেচা থেকে সরকারি প্রকল্পে ঘর পাইয়ে দিতে প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা চাওয়ার মতো নানা দুর্নীতিতে যুক্ত ওই সদস্যরা। আগে তাদের সতর্ক করেও লাভ হযনি। গৌতম দেব বলেন, ‘‘ওই নেতাদের বিরুদ্ধে নানা অনৈতিক কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তাদের বহিষ্কার করে দলে বার্তা দেওয়া হল। ভবিষ্যতেও এ ধরনের কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগ মিললে বরদাস্ত করা হবে।’’

বহিষ্কৃতদের পাল্টা অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূলের নেতা, কর্মীরাই নানা ভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত। বহিষ্কৃতদের মধ্যে উত্তমবাবু, অটলবাবুরা জানান, তৃণমূলের অন্দরে দুর্নীতি দেখে তারা দল ছেড়ে সিপিএমে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সিপিএম থেকেই তৃণমূলে এসেছিলেন তাঁরা। দুই এক দিনের মধ্যেই আনুষ্ঠানিক ভাবে ফের সিপিএমে যোগ দেওয়ার কথাও রয়েছে। সেই খবর জেনেই তৃণমূলের নেতারা এ দিন বেলা ৯টা নাগাদ অঞ্চল সভাপতির বাড়িতে বৈঠক ডাকেন। উত্তমবাবু বলেন, ‘‘আমাদেরও ফোন করে আসতে বলা হয়। কিন্তু আমরা চার জন কেউ যাইনি। তৃণমূল নেতৃত্ব দুর্নীতিতে মজে রয়েছে। নদীর জায়গা দখল আর বিক্রির কারবার চলছে। বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ এসব নিয়ে ক্ষিপ্ত। ভোটেও তার প্রভাব পড়তে চলেছে।’’ বস্তুত, ভোটের ফল তৃণমূলের পক্ষে থাকবে কি না তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বহিষ্কৃতদের একাংশ। সে কারণে তাদের দোষারোপ করার চেষ্টা শুরু হয়েছে বলে দাবি অটলবাবুর মতো নেতাদের। তাঁর কথায়, তাদের নানা ভাবে দায়ী করতে তৎপর হয়েছেন তৃণমূলের নেতাদের একাংশ। এ ভাবে দলের অন্দরে নেতা, কর্মীদের দুর্নীতি চাপা দিয়ে রাখা যাবে না বলে তিনি পাল্টা সরব হন।

দেবাশিসবাবুর কথায়, ‘‘এলাকায় ভোটের ফল তৃণমূলের পক্ষেই থাকবে। গৌতমবাবু স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন দলের মধ্যে কোনও অন্যায়, অনৈতিক কাজকর্ম মেনে নেওয়া হবে না।’’ তিনি জানান, ফুলবাড়ি এলাকায় জোড়াপানি নদীর চর দখল করে বিক্রি করার মতো অনৈতিক কাজে যুক্ত উত্তম সরকার এবং দ্রৌপদী সরকার। অটল দাস এবং দেবেশ মণ্ডল নামে অপর যে দুই সদস্যকে বহিষ্কার করা হয়েছে তারা মহানন্দার চর দখল করে বিক্রি কাজে যুক্ত। সেই সঙ্গে অভিযোগ, ইন্দিরা আবাস যোজনা বা সরকারি বরাদ্দে ঘর তৈরির মতো প্রকল্পে সুযোগ করে দেওয়ার কথা বলে প্রার্থীদের কাছ থেকে ৫ হাজার, ১০ হাজার টাকা নিতেন ওই দুই ব্যক্তি।

ওই সমস্ত অভিয়োগ তাঁরা অস্বীকার করেন। উল্টে অভিযোগ, তাঁদের জমি কেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলে তা ফেরত দেওয়া হবে বলা হয়েছিল। কিন্তু ফেরত দেওয়া হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Phulbari TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE