Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Dengue

ফের ডেঙ্গি উপসর্গ প্রাণ কাড়ল মালদহে

বৃহস্পতিবার মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল ইংরেজবাজার শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের পুরাটুলির বাসিন্দা জ্বরে আক্রান্ত সমাপ্তি দাসকে(২৬)।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৭ ০১:০৫
Share: Save:

ফের ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে মালদহে মৃত্যু হল একজনের।

বৃহস্পতিবার মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল ইংরেজবাজার শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের পুরাটুলির বাসিন্দা জ্বরে আক্রান্ত সমাপ্তি দাসকে(২৬)। কিন্তু সঠিক চিকিৎসা হচ্ছে না বলে অভি়যোগ করে শুক্রবার বিকেলে হাসপাতাল থেকে তাঁকে মালদহের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করেন পরিবারের লোকজন। রাতেই তিনি মারা যান।

তাঁর মৃত্যুর কারণ হিসেবে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ লিখেছে, ‘কার্ডিও রেসপিটরি ফেইলিওর ইন সেপটিক শক’। কিন্তু পরিবারের দাবি, ডেঙ্গিতেই মৃত্যু হয়েছে সমাপ্তির। এ নিয়ে শুক্রবার রাতে নার্সিংহোমে উত্তেজনাও ছড়ায়। ইংরেজবাজার থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

তাঁর পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে, সোমবার রাতে তিনি জ্বরে আক্রান্ত হন। পরদিন স্থানীয় একজন ডাক্তারকে দেখিয়ে রক্ত পরীক্ষা করানো হয়। রিপোর্টে এনএস-ওয়ান পজিটিভ ছিল, তবে প্লেটলেট ছিল ২ লক্ষ ৪০ হাজার। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মৃতার দাদা বিশ্বনাথ দাসের অভিযোগ, হাসপাতালে বেড না মেলায় মেঝেতে রেখেই চিকিত্সা চলছিল। হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষায় দেখা যায় যে প্লেটলেট ৫৬ হাজারে নেমে গিয়েছে। শুক্রবার বোনের মুখ দিয়ে রক্তও বের হচ্ছিল।

তাঁর দাবি, বাধ্য হয়েই শুক্রবার বিকেলে বোনকে হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে মালদহেরই একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করেন তাঁরা। সেখানে প্লেটলেট নেমে এসেছিল ১৬ হাজারে। প্লেটলেট দেওয়ার পাশাপাশি এক বোতল রক্তও দেওয়া হয়। কিন্তু রাত সাড়ে আটটা নাগাদ বোন মারা যায়। তাঁর ও পরিবারের অন্য সদস্যদের অভিযোগ, সমাপ্তির মৃত্যু ডেঙ্গিতে হলেও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ডেথ সার্টিফিকেটে সে কথা লিখতে রাজি হননি। যদিও নার্সিংহোমের এক কর্তা বলেন, ‘‘রোগীর যে কারণে মৃত্যু হয়েছে ডাক্তার সে কথাই লিখেছেন।’’

এদিকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার অমিত দাঁ বলেন, ‘‘হাসপাতালে পরিষেবা মিলছে না এ অভিযোগ ঠিক নয়। মহিলাদের ওই ওয়ার্ডে ১১০ শয্যায় ২৪০ জন ভর্তি। তবুও পরিষেবা ঠিকই দেওয়া হচ্ছে। তবে লিখিত অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখা হবে।’’

বছর চারেক আগে সমাপ্তিদেবীর বিয়ে হয়েছিল পুরাতন মালদহের মঙ্গলবাড়িতে। তিন বছর আগে স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে তিনি বাপের বাড়িতেই থাকতেন। একটি বইয়ের দোকানে কাজ করতেন। এই মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে ক্ষোভ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, মশা মারতে পুরসভার কোনও উদ্যোগই নেই। কদাচিত কামান দাগা বা তেল স্প্রে করা হয়। পুরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, ‘‘পুরসভার সব এলাকাতেই কামান দাগা ও তেল স্প্রে করা হচ্ছে জোরকদমে।’’ মালদহ জেলাজুড়েই ডেঙ্গি জাঁকিয়ে বসেছে।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেই খবর, এখন পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে তিনশো ছাড়িয়ে গিয়েছে। সরকারি মতে জেলায় ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে একজনের। তাঁর নাম চায়না ঘোষ (৪০)। বাড়ি পুরাতন মালদহের নারায়ণপুরের পাড়াদিঘি গ্রামে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Death মালদহ ডেঙ্গি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE