Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ছোবলে মৃত শিশু ভাসল কলার ভেলায়

সে স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়াশুনো করত। এ দিন সকালে বাড়ির উঠোনে খেলাধূলা করার সময়ে একটি সাপ তার ডান পায়ে ছোবল দেয়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৭ ১৩:০০
Share: Save:

সাপের ছোবলে মৃত এক শিশুকে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়াল। বুধবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুর ও বিহারের সীমানাবর্তী এলাকা করণদিঘি থানার নাগর নদীতে। মৃত ওই কন্যাশিশুর নাম অনিতে মুর্মু। বাড়ি করণদিঘির থানা সংলগ্ন বিহারের বলরামপুর থানার দাড়িভিট এলাকায়। সে স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়াশুনো করত। এ দিন সকালে বাড়ির উঠোনে খেলাধূলা করার সময়ে একটি সাপ তার ডান পায়ে ছোবল দেয়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এরপরেই এদিন সন্ধ্যায় মৃত ওই শিশুর পরিবারের লোকেরা প্রতিবেশীদের একাংশকে নিয়ে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরের নাগর নদীতে কলাগাছের ভেলায় ওই শিশুটির মৃতদেহ ভাসিয়ে দেন। করণদিঘি থানার আইসি গৌতম চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘বিষয়টি শুনেছি। পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগ দায়ের হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, অনিতের যুগলবাবু বাবা পেশায় হাট ব্যবসায়ী। মা আরতিদেবী দিনমজুরের কাজ করেন। অনিতের দাদা অনিল অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করার পর দিনমজুরির কাজে যোগ দিয়েছে।

যুগলবাবুর কথায়, ‘‘এগারো বছরের কম বয়সী কোনও শিশু সাপের কামড়ে মারা গেলে তার মৃতদেহ নদীতে ভাসিয়ে দিলে তার প্রাণ ফিরে আসে।’’ এটি যে একটি কুসংস্কার তা তিনিও অবশ্য স্বীকার করেন। এলাকার বাসিন্দারা বলেন, তাঁরাও জানেন এটি কুসংস্কার। প্রশাসন জানিয়েছে, এই কুসংস্কার দূর করতে এলাকায় সচেতনতা প্রচার করা হবে।

জেলা বিজ্ঞানমঞ্চের প্রাক্তন সদস্য তথা শিক্ষাবিদ্ সোমনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কুসংস্কারের জেরে এমন ঘটনা ঘটেছে। সাপের ছোবলে সঙ্গে সঙ্গে কারও মৃত্যু হয় না। ওই শিশুটিকে সঠিক সময়ে কোনও সরকারি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে অ্যান্টি ভেনাম ভ্যাকসিন দেওয়া হলে তাকে হয়তো বাঁচানো সম্ভব হত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE