Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ফের প্রস্তুতি বিরোধীদের, চিন্তা তৃণমূলে

আদালতের রায় পঞ্চায়েত ভোট আপাতত অনিশ্চিত। ভোটের দিন পিছোলে নতুন করে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়ও মিলতে পারে বলে আশাবাদী দলের নেতারা।

সভা: ভোট প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত হলেও প্রচার থেমে নেই। তৃণমূলের সভা কোচবিহারে। নিজস্ব চিত্র

সভা: ভোট প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত হলেও প্রচার থেমে নেই। তৃণমূলের সভা কোচবিহারে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৪৬
Share: Save:

মালবাজার পঞ্চায়েত সমিতির যে আসনগুলিতে দলের প্রার্থীর জেতার সম্ভাবনা প্রবল ছিল সেখানেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়ে গেল শাসক দল, এমনই আক্ষেপ করছিলেন বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি। তিনদিন আগেই জলপাইগুড়ির বিজেপি পার্টি অফিসে বসে আক্ষেপ করছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবারের ছবিটা পুরোপুরি বদলে গেল। মালবাজারের আসনগুলিতে কারা প্রার্থী হতে পারে তা নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। কি ভাবে মনোনয়ন জমা দেওয়া হবে তা নিয়ে কৌশল তৈরিতে ব্যস্ত বিজেপি নেতারা।

আদালতের রায় পঞ্চায়েত ভোট আপাতত অনিশ্চিত। ভোটের দিন পিছোলে নতুন করে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়ও মিলতে পারে বলে আশাবাদী দলের নেতারা। সেই পরিকল্পনাতেই ব্যস্ত গেরুয়া শিবির। বিজেপির জেলা সভাপতি দেবাশিসবাবু বলেন, “নতুন করে মনোনয়ন শুরু হলে জেলার সব আসনে আমরা প্রার্থী দেব। এবার যাতে কেউ আটকাতে না পারে তার জন্য পাল্টা কৌশলও হবে।” সূত্রের খবর জেলার সব ব্লক থেকে বাছাই কর্মী এনে মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। জেলা বিজেপির এক নেতার কথায়, “এক এক দিন এক এক জায়গার মনোনয়ন হবে।“

উল্টো দিকে চিন্তার ভাঁজ তৃণমূল শিবিরে। এমনিতেই জেলায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরাবার তৃণমূল। জেলা পরিষদের ১৯টি আসনে প্রার্থীপদের দাবিদার ত্রিশ জন। গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন আসনে চারজন করেও দাবিদার রয়েছেন। জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “পরিস্থিতি যা হয়ে রয়েছে তাতে নতুন করে মনোনয়ন শুরু হলে আমাদের লাঠি হাতে বিডিও অফিসের সামনে দাঁড়াতে হবে। বিরোধীদের আটকাতে নয়, দলের বিক্ষুব্ধদের মনোনয়ন দিতে বাধা দেওয়াই হবে আমাদের মূল লক্ষ্য।

আলিপুরদুয়ারের বিরোধী শিবিরের আশা, হাইকোর্টের চূড়ান্ত নির্দেশ যেদিনই হোক না কেন, ফের মনোনয়ন জমা দেওয়ার অন্তত একটা দিন পাওয়া যাবে৷ সেদিনই শুধুমাত্র তৃণমূলের মনোনয়ন জমা পরা আসনগুলিতে তাঁরাও মনোনয়ন দিতে পারবেন৷

কারণ, আলিপুরদুয়ার ১ নম্বর ব্লকে গোটা একটি গ্রাম পঞ্চায়েত-সহ জেলায় ৩০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কোনও মনোনয়ন দাখিল হয়নি। বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, ‘‘যে সব আসনে আমরা মনোনয়ন জমা দিতে পারিনি সেখানে প্রার্থীরা তৈরিই রয়েছেন৷ হাইকোর্ট এ ব্যাপারে কিছু নির্দেশ দিলেই তারা মনোনয়ন জমা দেবেন৷’’ কংগ্রেসের জেলা সভাপতি বিশ্বরঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘আমরা আশা হাইকোর্ট ফের মনোনয়ন জমা দেওয়ার সুযোগ দেবে৷ সেজন্যই এই মুহূর্তে তিন স্তর পঞ্চায়েতের বিভিন্ন আসনে আরো কিছু প্রার্থী যাতে আমরা দিতে পারি সেই প্রস্তুতিই চলছে৷’’ বামফ্রন্টের জেলা নেতারাও জানিয়েছেন, তারাও বেশ কিছু আসনে নতুন করে প্রার্থী বাছাই করে ফেলেছেন৷

আশঙ্কাও রয়েছে বিরোধীদের মধ্যে৷ তাঁদের অনেকেরই অভিযোগ, ফের সুযোগ মিললেও কেউ যাতে মনোনয়ন জমা দিতে না পারেন, সেজন্য নিয়মিত ওই প্রার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিয়ে চলেছেন শাসক দলের নেতা-কর্মীরা৷ অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের নেতারা৷ দলের জেলা সভাপতি মোহন শর্মা বলেন, ‘‘আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী৷ সেজন্যই বিরোধীরা এত আসনে বিনা বাধায় মনোনয়ন জমা দিয়েছেন৷ হাইকোর্টের কোন রায়ে আবার যদি মনোনয়নের সুযোগ আসে তবে বিরোধীরা বিনা বাধাতেই তা জমা দিতে পারবেন৷’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE