আক্রান্ত: সামশেরগঞ্জে বোমা ফেলা হয়েছে ডালুবাবুর গাড়িতে (বাঁ দিকে)। এর প্রতিবাদে কংগ্রেস কর্মীদের বিক্ষোভ মালদহে (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র
মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জে নিজের সাংসদ এলাকায় গিয়ে বোমাবাজির মুখে পড়লেন দক্ষিণ মালদহের সাংসদ তথা হেভিওয়েট কংগ্রেস নেতা আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালুবাবু)। অল্পের জন্য রক্ষা পান তিনি। আর সেই ঘটনাকে সামনে রেখেই মালদহে ভোট ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ল কংগ্রেস নেতৃত্ব।
সোমবার বিকেলে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ডালুর উপরে হামলার প্রতিবাদে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো হয়। শুধু জেলা সদরই নয়, প্রতিটি ব্লক এবং অঞ্চলে প্রতিবাদ সভা করা হবে বলে জানায় কংগ্রেস নেতৃত্ব। ডালুর উপরে আক্রমনের প্রভাব আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে পড়বে বলে মত রাজনৈতিক মহলের। তাঁদের দাবি, এ দিনের ঘটনার পর দক্ষিণ মালদহ এলাকায় ব্যাকফুটে চলে যাবে তৃণমূল। যদিও ঘটনায় আমল দিতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব।
বুধবার সকালে মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জে দলীয় কার্যালয়ের সামনে গাড়ি নিয়ে হাজির হন দক্ষিণ মালদহের সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী। তিনি গাড়ি থেকে নামতেই শুরু হয় বোমাবাজি। ঘটনায় আহত হন ডালুর ঘনিষ্ঠ সঙ্গী রাজীব চৌধুরী। তাঁর বাম হাতে আঘাত লাগে। অভিযোগ, সামসেরগঞ্জে কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়েও বোমাবাজি করা হয়। ঘটনায় আতঙ্কিত ডালু বলেন, ‘‘পুলিশকে আগাম জানিয়েই আমি এলাকায় গিয়েছিলাম। তারপরেও বেশকিছু তৃণমূলের গুন্ডা আমাদের লক্ষ্য করে বোমাবাজি করে।’’ কোনও রকমে দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে পড়লে সেখানেও বোমাবাজি করা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। আক্রান্ত রাজীব বলেন, ‘‘সাহেবকে(ডালু) কোনও রকমে আড়াল করে কার্যালয়ে ঢুকিয়েছি। তা না হলে এ দিন আরও বড় ঘটনা ঘটতে পারত।’’
প্রয়াত গণিখান চৌধুরীর ভাই হলেন আবু হাসেম খান চৌধুরী। গণিখানের সময় থেকে সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত তিনি। এমনকী, প্রয়াত কংগ্রেস নেতা গণিখান চৌধুরীর জেতা আসন থেকেই ২০০৬ সাল থেকে লড়াই করছেন ডালু। মালদহের পাঁচটি বিধানসভা ছাড়াও মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা এবং সামসেরগঞ্জ দক্ষিণ মালদহের অধীনে। কিন্তু কেন তাঁর উপরে হামলা? কংগ্রেস নেতাদের দাবি, মালদহে কংগ্রেসের মুখ হলেন ডালু। তাঁর উপরে আক্রমণ হলে দলীয় কর্মীদের মনোবল ভেঙে যাবে। তাই এদিন পরিকল্পিত ভাবেই তাঁর উপরে হামলা চালানো হয়েছে।
ঘটনার প্রতিবাদে পঞ্চায়েত স্তরে প্রতিবাদ সভা চলবে বলে জানিয়েছেন কংগ্রেসের সাধারন সম্পাদক নরেন্দ্র নাথ তিওয়ারি। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ডালুবাবুর মতো মানুষের উপরে বোমাবাজি করেছে। এখানেই তাদের নোংরা রাজনীতি স্পষ্ট।’’ কংগ্রেসের বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘‘ডালুবাবু আমাদের অভিভাবক। মালদহের মানুষ তৃণমূলকে পঞ্চায়েতে এর জবাব দেবে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘‘কোথায় কি হয়েছে তা আমাদের জানা নেই।’’
সোমবার দিনভর দলীয় অফিসের সামনেই শ’খানেক মনোনয়নে ইচ্ছুক দলীয় প্রার্থীকে নিয়ে দুষ্কৃতীরা তাঁকে কার্যত আটকে রাখে বলে অভিযোগ। সমস্তটাই ঘটেছে কয়েক ডজন পুলিশের সামনেই।
ডালুর অভিযোগ, ‘‘পাশেই দলীয় অফিসে গিয়ে প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের মনোনয়ন দাখিল করতে পাঠাব, ঠিক ছিল এমনটাই। দুষ্কৃতী তান্ডব ও বোমাবাজী দেখেও সামশেরগঞ্জ পুলিশ ছিল নীরব দর্শক। বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে কার্যত দাপিয়ে বেড়িয়েছে তারা। ”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy