বিক্ষোভ: উত্তপ্ত কুশমণ্ডিতে লাঠি হাতে বিরোধীরা। নিজস্ব চিত্র
মনোনয়ন জমাকে কেন্দ্র করে তাণ্ডব দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমণ্ডিতে। কুশমণ্ডির বিডিও অফিসে বিরোধীদের মনোনয়ন ছিঁড়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল শাসকদলের বিরুদ্ধে। ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবাদে পথ অবরোধ করে বিরোধীরা। কুশমণ্ডির আরএসপি বিধায়ক নর্মদা রায় দলের মহিলা প্রার্থীদের গাড়ি করে বিডিও অফিসের সামনে আসতেই বাধার মুখে পড়েন বলে অভিযোগ। তাঁকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। মনোনয়নে নিরাপত্তা দিতে জেলা পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে রাজ্যের নির্বাচন কমিশনের ইস্তফা দাবি করল বাম ও বিজেপি নেতৃত্ব।
এ দিন দুপুর থেকেই দফায় দফায় শাসক দলের সঙ্গে বাম ও বিজেপি'র সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কুশমণ্ডি। শাসক ও বিরোধী দুই পক্ষই একে অপরের দিকে পাথর, ইট ছোড়ার নালিশ জানিয়েছে। তির, ধনুক নিয়ে বিজেপির সমর্থকেরা তাঁদের উপর হামলা চালায় বলে তৃণমূলের অভিযোগ। এ দিকে বাম ও বিজেপির অভিযোগ, এ দিন সকাল থেকেই কুশমণ্ডি বিডিও অফিস ঘিরে রেখেছিলেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা। তাঁরা মনোনয়ন জমা দিতে গেলে মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। বামেদের অভিযোগ, সিপিএম ও আরএসপির আট জন প্রার্থীকে নিয়ে মনোনয়ন দিতে যান কুশমণ্ডির আরএসপির বিধায়ক নর্মদা রায়। তখন তাঁকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়। এর পরেই বামেরা কুশমণ্ডি থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। নর্মদা রায় বলেন, ‘‘গোটা বিডিও অফিস চত্বর ঘিরে রেখেছিল তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। সেখানেই আমাকে ও দলের প্রার্থীদের হেনস্থা করা হয়। ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়।’’
এরই মধ্যে বিজেপি তাদের প্রার্থীদের নিয়ে মনোনয়ন দিতে গেলেই রাস্তাতেই তৃণমূলের সঙ্গে মারপিটে জড়িয়ে পরে। স্থানীয় বিজেপি নেতা রণজিৎ রায় বলেন, ‘‘তৃণমূলের লোকজন আমাদের উপরে ইট, বাঁশ নিয়ে হামলা করে। আমাদের চারজন কর্মীকে মারধর করেছে।’’ তৃণমূল নেতা সুনির্মলজ্যোতি বিশ্বাস বলেন, ‘‘বিজেপির লোকজন বাইরে থেকে লোক এনে আমাদের প্রার্থী ওমপ্রকাশ ঝায়ের বাড়িতে গিয়ে তাকে মারধর করে। গাড়ি ভাঙচুর করে। পুলিশকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।’’
এই ঘটনার জেরে প্রায় এক ঘণ্টা কুশমণ্ডি-রায়গঞ্জ রাজ্য সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। এলাকার দোকান, বাজার, সব বন্ধ হয়ে যায়। আরএসপির জেলা সম্পাদক বিশ্বনাথ চৌধুরী জানান, এসপিকে ফোন করে তিনি বিষয়টি বলেন। এরপর এসডিপিও ফোন করে নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে ফের মনোনয়ন জমা দিতে বিডিও অফিসে যেতে বলেন। কুশমন্ডি থানার আইসির পাহারায় বিধায়ক নর্মদা দ্বিতীয়বার মহিলা প্রার্থীদের নিয়ে বিডিও অফিস চত্বরে গেলে হামলার মুখে পড়েন। পুলিশের লাঠি কেড়ে নিয়ে বিধায়কের উপর চড়াও হয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। হামলার সময় আইসি সহ পুলিশ কর্মীরা দাঁড়িয়ে ছিলেন বলে বিধায়কের অভিযোগ। জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী বলেন, ‘‘সর্বত্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। বিরোধীদের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।’’ তৃণমূল জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র হামলার অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, বিরোধীরা প্রার্থী খুঁজে পায়নি। তাই নিজেরা গোলমাল করে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy