অসহায়: ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালের সামনে তসিরুদ্দিনের দেহ নিয়ে শোকার্ত পরিজন। নিজস্ব চিত্র
এটা যে ঘটবে এবং প্রধান শিক্ষক হিসাবে আমাকে যে এটা দেখতে হবে তা ভাবলেই গা শিউরে উঠছে। যখন খবরটা শুনি তখনই বুকের ভিতরটা মুচড়ে উঠেছিল। ঠিক শুনছি তো? আর যখন রেল লাইনে ছিন্নভিন্ন মৃতদেহটি দেখতে যাই, চমকে উঠি।
রাজকুমার কী ভাবে ইটাহার থেকে অত দূরে গেল, এখনও বুঝতে পারছি না আমরা। কী হয়েছিল তার? তাকে কি কেউ অপহরণ করে? অনেক প্রশ্নেরই উত্তর পাইনি।
আমার স্কুলের সহশিক্ষকদের মধ্যে রাজকুমার রায় অন্যতম। আমার ছোট ভাইয়ের মতো। মিষ্টভাষী হিসাবে পরিচিত। তিনি প্রিসাইডিং অফিসার হিসাবে ভোট গ্রহণের কাজে গিয়েছিলেন ইটাহারে। রাত ৮টার সময় তিনি স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। তারপর থেকে কোনও খোঁজ নেই। কেন? প্রশাসন কী করছে? কেন রাতে খোঁজ মিলছে না জানার পরও পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি? এই কথাগুলোই মনে ঘুরে ফিরে আসছে। ভোট মানে তো গণতন্ত্র। সেটাকে রক্ষা করতে গিয়ে ও নিজের জীবনটা বিসর্জন দিল।
ওর পরিবারের কথা ভেবে আরও অসহায় মনে হচ্ছে নিজেকে। এক ছেলে এক মেয়ে। তারা এখনও বড় হয়নি। বৃদ্ধ বাবা, মা। কী বলে তাদের সান্ত্বনা দেব। তাঁর সুখের সংসার নিমেষে অন্ধকার হয়ে গিয়েছে।
একজন প্রধানশিক্ষককে তাঁর প্রিয়তম সহকর্মীর ছিন্নভিন্ন লাশ তুলতে হচ্ছে। এর থেকে আর কোনও ভয়াবহ দৃশ্য হতে পারে কি?
(রহটপুর হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy