Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বন্দুক নিয়ে লুট রতুয়ায়

এদিনও রতুয়ার বুথগুলিতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল না। পুলিশের ঢিলেঢালা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। রতুয়ার ঘটনায় শাসক এবং বিরোধীদের মধ্যে শুরু হয়েছে চাপানউতোর।

লুট: বন্দুক কাঁধে ব্যালট বাক্স নিয়ে গেল দুষ্কৃতীরা। নিজস্ব চিত্র

লুট: বন্দুক কাঁধে ব্যালট বাক্স নিয়ে গেল দুষ্কৃতীরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৮ ০২:২৪
Share: Save:

সোমবার, নির্বাচনের দিন সন্ত্রাস এড়ানো যায়নি। বুধবার পুনর্নির্বাচনেও গুলি ও বোমার দাপটে উত্তপ্ত হয়ে উঠল মালদহের রতুয়া। এই পরিস্থিতিতে অস্বস্তি এড়াতে পারছে না জেলা পুলিশ প্রশাসন। রাজ্য নির্বাচন কমিশন রতুয়ার ঘটনা নিয়ে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে জেলা প্রশাসনের কাছে। নির্বাচন কমিশনার একাধিকবার রতুয়ার পরিস্থিতি নিয়ে ফোন করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

অভিযোগ, এদিনও রতুয়ার বুথগুলিতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল না। পুলিশের ঢিলেঢালা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। রতুয়ার ঘটনায় শাসক এবং বিরোধীদের মধ্যে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। ভোটের দিন ব্যালট বক্স লুঠ থেকে শুরু করে গুলি, বোমাবাজি চলেছে রতুয়ায়। ওখানেই আক্রান্ত হয়েছেন ওসি দেবব্রত চক্রবর্তী। এদিন জেলার ৫৫টি বুথের সঙ্গে রতুয়ার একাধিক বুথেও এদিন পুনর্নির্বাচন হয়েছে। এদিনও এইসব বুথে দুষ্কৃতীদের আগ্নেয়াস্ত্র হাতে নিয়ে দাপাদাপি দেখলেন সাধারণ মানুষ। বিরোধীদের অভিযোগ, রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে।

এলাকায় তৃণমূলের দাপুটে নেতা ইয়াসিন শেখের স্ত্রী পায়েল খাতুন রতুয়ার ২১ নম্বর জেলা পরিষদের তৃণমূল প্রার্থী ছিলেন। কয়েক বছর আগে ভালুকায় সম্পত্তির লোভে এক বৃদ্ধাকে খুনের ঘটনায় নাম জড়ায় ইয়াসিনের। ওই মামলায় প্রায় আড়াই বছর তিনি মালদহ জেলে ছিলেন। মাস তিনেক আগে জামিনে ছাড়া পান তিনি। ইয়াসিন ২০১৩ সালে নির্দল হয়ে পঞ্চায়েত সমিতির আসনে জেতেন। সিপিএম পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষও হন তিনি। ২০১৪ সালে তৃণমূলে যোগ দেন ইয়াসিন। রতুয়ার তৃণমূলের দলীয় অনুষ্ঠানে দলেরই এক জেলা নেত্রীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে ইয়াসিনের বিরুদ্ধে।

সব মিলিয়ে রতুয়ায় সন্ত্রাসের ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র। তিনি বলেন, ‘‘গুন্ডারা তৃণমূল দল চালাচ্ছে। ভোট লুঠ করে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত ভাবে নালিশ জানিয়েছি।’’ তবে ইয়াসিন শেখের কথায়, ‘‘বিজেপি-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ব্যালট বাক্স লুঠ করে পালিয়ে যায়। গ্রামে অশান্তি করেছিল। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।’’ বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মানবেন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের মুখে এই কথা মানায় না। পুনর্নির্বাচনের নামে এদিন প্রহসন হল রতুয়ায়।’’

পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। প্রশাসনের এক কর্তা আক্ষেপ করে বলেন, ‘‘রতুয়া ছাড়া সমস্ত বুথেই পুনর্নির্বাচন সুষ্ঠু ভাবে হয়েছে। শুধু রতুয়ার জন্যই কমিশনের রোষের মুখে পড়তে হচ্ছে।’’ জেলা প্রঞ্চায়েত আধিকারিক সুকান্ত সাহা বলেন, ‘‘সুষ্ঠু ভাবেই নির্বাচন হয়েছে এ দিন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Panchayat Elections 2018
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE