Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

নির্দলদের নেপথ্যে কে, প্রশ্ন দিনহাটায়

বিরোধীরা নেই কোথাও। লড়াই যে নির্দলের সঙ্গে, তাঁরাও আখেরে তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি-সহ পোস্টার নিয়েই প্রচার করছেন তাঁরা। স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে এঁদের বেশির ভাগই যুব তৃণমূল সদস্য হিসেবে পরিচিত।

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৮ ০২:৩৪
Share: Save:

বিরোধীরা নেই কোথাও। লড়াই যে নির্দলের সঙ্গে, তাঁরাও আখেরে তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি-সহ পোস্টার নিয়েই প্রচার করছেন তাঁরা। স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে এঁদের বেশির ভাগই যুব তৃণমূল সদস্য হিসেবে পরিচিত। দিনহাটায় এই ‘গোঁজ প্রার্থীদের’ নেপথ্যে কারা? এই নিয়েই সরগরম গোটা কোচবিহার।

দলীয় সূত্রের খবর, এই নির্দল প্রার্থীদের পিছনে রয়েছেন দলের নতুন প্রজন্মের নেতারা। সেই সূত্রেই উঠে এসেছে যুব তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক নিশীথ প্রামাণিকের নাম। মনোনয়ন পর্বে গোঁজ সমস্যা মেটাতে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করেন বিধায়ক উদয়ন গুহ। যুব এবং তৃণমূলের দ্বন্দ্ব যে মিটে গিয়েছে, তা বোঝাতে কয়েক দিন আগে নিশীথবাবুকে নিয়ে রোড শো-ও করেছেন উদয়ন।

তার পরেও বৃহস্পতিবার রাতে খরখরিয়া জুনিয়র হাইস্কুলের মাঠে এক সভায় উদয়নের দিকে এক নির্দল প্রার্থী তেড়ে যান বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। তাঁর হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল বলেও দাবি করেছে একটি পক্ষ। যদিও উদয়ন সে কথা অস্বীকার করেছেন। তবে সভায় যে গোলমাল হয়, তা মেনে নিয়ে বলেন, “দলেরই কয়েক জন নির্দল হিসেবে দাঁড়িয়েছেন। তাঁদের এই ভূমিকার জন্যে বিরোধীদের সুবিধে হচ্ছে। তবে সামগ্রিক ভাবে যুব সংগঠন আমাদের সঙ্গেই আছে। যুব নেতারা আমাদের সঙ্গেই প্রচারে অংশ নিয়েছেন।”

উদয়নবাবু কারও নাম সরাসরি না করলেও তাঁর অনুগামীরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, দিনহাটায় গোঁজ প্রার্থী দেওয়ার পিছনে রয়েছে নিশীথবাবু। সেই প্রার্থীরা সরাসরি নিশীথবাবুকেই তাঁদের নেতা হিসেবেই দাবি করেন। যা শুনে মুচকি হেসে নিশীথবাবু বলেন, “কেউ যদি আমাকে নেতা বলে দাবি করে, তা হলে আমি কি করতে পারি?” সেই সঙ্গে তিনি অভিযোগ তোলেন, এ বারে দিনহাটায় অনেক পঞ্চায়েত সমিতি, গ্রাম পঞ্চায়েতের বিদায়ী সদস্যকে প্রার্থী করা হয়নি। তাঁরাই ক্ষুব্ধ হয়ে নির্দল হিসেবে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, “কোনও নেতার বাড়ি থেকে তিন জন প্রার্থী হয়েছেন। কোথাও দু’জন। অথচ বিদায়ী সদস্যরা অনেকেই বাদ পড়েছেন। এই সমস্যার কারণ কিছু নেতার বিচক্ষণতার অভাব।’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘আমি অবশ্য দলের প্রতীক পাওয়া প্রার্থীদের হয়েই প্রচার করছি।”

দিনহাটা মূলত উদয়ন গুহের গড় হিসেবেই পরিচিত। সেই জায়গায় দলের নতুন প্রজন্মের কর্মীরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। যুব তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়। তাঁরও দিনহাটায় প্রভাব রয়েছে। সংগঠনের আর এক নেতা অভিজিৎ দে ভৌমিক। হিপ্পি বলে পরিচিত ওই নেতা নিশীথবাবুর মতোই অভিযোগ তুলে কোচবিহার শহরে মিছিল বের করেন। যদিও কেউই নির্দল বা গোঁজ প্রার্থীদের সরাসরি সমর্থন করছেন না। প্রতীক পাওয়া প্রার্থীদের কথাই বলছেন তাঁরা। দিনহাটার তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ, নিশীথবাবু প্রকাশ্যে দলীয় প্রার্থীদের হয়ে কথা বললেও তাঁর অনুগামীরা সব গোঁজ প্রার্থীর সমর্থনে মিছিল, মিটিং করছেন। নিশীথবাবু ভেটাগুড়িতে। একসময় স্থানীয় দলের একটি অংশের সঙ্গে বচসার জেরে এলাকা ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। ধীরে ধীরে ভেটাগুড়ি তো বটেই, গোটা মহকুমায় বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। নিশীথবাবু নিজে অবশ্য এই নিয়ে সরাসরি মন্তব্য করতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE