Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

দলের রাশ টানতে নরমে-গরমে চলার নীতি বিমল-রোশনের

পুলিশ ও গোয়েন্দাদের অনুমান ঠিক হলে, গুরুঙ্গ একজন সিকিম-পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে দিয়ে যাওয়া রঙ্গিত নদীর আশেপাশে রয়েছে। রোশন দিল্লিতে ঘাঁটি গাড়লেও আপাতত দেহরাদূনের কাছাকাছি রয়েছেন।

কিশোর সাহা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৫৯
Share: Save:

ইউএপিএ মামলায় অভিযুক্ত হয়ে বিমল গুরুঙ্গ পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। রোশন গিরিও পাহাড়ে নেই। এই অবস্থায় দলের রাশ অনেকটাই বিনয় তামাঙ্গ-অনীত থাপা জুটির দিকে ঢলে রয়েছে। তাই দলের রাশ ফিরে পেতে সেই নরমে-গরমে চলার নীতিই বেছে নিয়েছেন বিমল-রোশন জুটি।

যেমন, নদীর ধারের রিসর্ট কিংবা হোম স্টে-তে বসে গুরুঙ্গ নিয়মিত হুমকি-হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। আর একজন মানে মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন পাহাড়-সমতলের মিডিয়ার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে বোঝানোর চেষ্টা করছেন তাঁরা এত সহজে পাহাড়ের রাজনীতিতে অপ্রাসঙ্গিক হওয়ার ‘বান্দা’ নন। গুরুঙ্গ পাহাড়ে আরও অশান্তি হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। রোশন দিল্লিতে নানা স্তরের আইনজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে মামলায় আগাম জামিনের উপায় খুঁজছেন।

পুলিশ ও গোয়েন্দাদের অনুমান ঠিক হলে, গুরুঙ্গ একজন সিকিম-পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে দিয়ে যাওয়া রঙ্গিত নদীর আশেপাশে রয়েছে। রোশন দিল্লিতে ঘাঁটি গাড়লেও আপাতত দেহরাদূনের কাছাকাছি রয়েছেন।

বিনয়-অনীত জুটির সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার চেষ্টাও জারি রেখেছেন বিমল-রোশন শিবির। যেমন, দু’দিন আগে বিনয় মোর্চার হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ থেকে বাদ দিয়েছেন রোশনকে। ওই গ্রুপের ‘অ্যাডমিন’ (যিনি তা চালান) তিনিই। ফলে, রোশনের হাত কামড়ানো ছাড়া কিছু করার ছিল না। কিন্তু, গুরুঙ্গের নির্দেশে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রোশন পাল্টা একটি ‘হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ’ খুলে ফেলেছেন। ‘জিজেএম নিউজ অ্যান্ড প্রেস রিলিজ’ শীর্ষক গ্রুপে কাকে অ্যাড করেননি রোশন। কলকাতা-দার্জিলিং-সিকিম-দিল্লি সব জায়গার মিডিয়ার প্রতিনিধিকে সামিল করেছেন তিনি।

দল সূত্রের খবর, মোর্চা সভাপতি পাহাড়ে ফেরার রাস্তা খোলাতে দিল্লিতে নানা জায়গায় যোগাযোগের দায়িত্ব দিয়েছেন রোশনকে। কিন্তু, রোশনের বিরুদ্ধেও ‘লুক আউট’ নোটিস জারি করেছে রাজ্য পুলিশ। যে কোনও মুহূর্তে সিআইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে তাঁর। তাই সভাপতির নির্দেশে দিল্লি-দেহরাদূন করে বেড়াতে হচ্ছে মোর্চার সাধারণ সম্পাদককে।

উপরন্তু, সেখানে বসেই পাহাড়-সমতলের মিডিয়ার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে দলের নানা বিবৃতি দেওয়ার দায়িত্বও দিয়েছেন গুরুঙ্গ। গুরুঙ্গ শিবিরের কয়েক জন নেতা জানান, নানা মামলায় আগাম জামিনের জন্যও দিল্লিতে চেষ্টা চালানোর দায়িত্বও রয়েছেন রোশনের উপরে। তবে রোশন আপাতত সব সময়ে ফোন ধরছেন না। তবে গুরুঙ্গ শিবিরের এক প্রবীণ নেতা জানান, পাহাড়ের বাইরে থেকে বিনয়-অনীত জুটির সঙ্গে লড়াই চালানোটা যে সহজ হবে না সেটা ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে।

অদূর ভবিষ্যতে কী হবে তা সময়ই বলবে। আপাতত দুটি জুটির রাজনৈতিক লড়াই নিয়েই চলছে পাহাড়ের মোড়ে মোড়ে আলোচনা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE