Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পর্যটকদের আশায় গুচ্ছ ছাড় বিনয়ের

এই প্রশ্নকে আরও উস্কে দিল এ দিন উৎসবের প্রতি স্থানীয়দের সতর্ক মনোভাব। তিস্তা রঙ্গিত পর্যটন উৎসবে যোগ দেয়নি গোর্খা লিগ, সিপিআরএম।

সৌমিত্র কুণ্ডু ও প্রতিভা গিরি
দার্জিলিং শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৫৬
Share: Save:

হইহই করে উৎসবের উদ্বোধন হল দার্জিলিং ম্যালে। মঞ্চে জিটিএ-র কেয়ারটেকার বোর্ডের মাথারা তো ছিলেনই, ছিলেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্যও।
দু’পক্ষই পর্যটকদের প্রতি পাহাড়ে আসার ডাক দিলেন। সঙ্গে বিনয় তামাঙ্গরা জুড়ে দিলেন একগুচ্ছ পর্যটনকেন্দ্রিক ছাড়। কিন্তু শেষ অবধি এত ঘোষণা পর্যটকদের পাহাড়মুখো করবে কিনা, সেই জিজ্ঞাসা থেকেই গেল।

এই প্রশ্নকে আরও উস্কে দিল এ দিন উৎসবের প্রতি স্থানীয়দের সতর্ক মনোভাব। তিস্তা রঙ্গিত পর্যটন উৎসবে যোগ দেয়নি গোর্খা লিগ, সিপিআরএম। দেখা মেলেনি জিএনএলএফেরও। স্থানীয়দের অনেকেই বলছেন, ঢাক ঢোল পিটিয়ে এই যে উৎসব শুরু হল, এ তো আসলে মোর্চার আলোচনাপন্থীদের। ম্যালে ভিড়ও জমিয়েছেন বিনয় তামাঙ্গপন্থীরাই। ফলে বিমল গুরুঙ্গপন্থী কট্টরপন্থীদের নিয়ে একটু চিন্তাই রয়েছে পাহাড়বাসীদের মধ্যে। তাই ঝকঝকে রোদ, দিগন্তে কাঞ্চনজঙ্ঘা এবং গানবাজনার মাধ্যমে উৎসবের সূচনা হলেও স্বতঃস্ফূর্ত উন্মাদনা দেখা গেল না স্থানীয়দের অনেকের মধ্যেই।

আস্থা ফেরাতে অবশ্য চেষ্টার কসুর রাখলেন না বিনয় তামাঙ্গরা। জিটিএ চেয়ারম্যান এ দিন জানান, এই উৎসবই শেষ নয়। আগামী ফেব্রুয়ারিতে এখানে বাণিজ্য সম্মেলন করবে জিটিএ। তাঁরা মনে করেন, দেশের বিশিষ্ট শিল্পপতিরা আসবেন সেই বাণিজ্য সম্মলেনে। এর পাশাপাশি বেশ কিছু ছাড়ের ঘোষণা করলেন তিনি। জানালেন, বুধবার থেকেই ফ্রি ওয়াইফাই জোন হয়ে গেল ম্যাল চৌরাস্তা। আগামীতে দার্জিলিং চকবাজার, কালিম্পং, কার্শিয়াংয়ের বাজার এলাকাকেও একই ভাবে ওয়াইফাই জোন করা হবে। টাইগার হিল, নাইটেঙ্গল পার্ক-সহ দার্জিলিঙে যত ট্যুরিস্ট স্পট আছে, সেখানে ঘুরতে, গাড়ি দাঁড় করাতে আলাদা কোনও টিকিট লাগবে না। জিটিএ-র তরফে সমস্ত নিঃশুল্ক করা হল। আগামী জানুয়ারি থেকে রোহিনী টোল গেটেও টাকা দিতে হবে না।

এত কিছু ঘোষণা করে বিনয়ের আশা, ‘‘অনেক দিন পরে আবার উৎসবের মেজাজে ফেরার সূচনা হল। দেখলাম, দেশ-বিদেশের পর্যটকেরাও উৎসবে সামিল হচ্ছেন। এটাই তো আশার আলো। পাহাড়ের সকলের মুখেই হাসি ফোটাবে উৎসব।’’

স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্য রাজ্যের পার্বত্য বিষয়ক দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিবও। তিনি বলেন, ‘‘দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াং-সহ গোটা পাহাড়ই সারা দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র। আশা করছি, জিটিএ এবং রাজ্য আগামীতে একযোগে কাজ করে পুরনো জায়গা উদ্ধার করবে।’’

পাহাড় শান্ত হয়েছে শুনে তিন দিন আগে কলকাতা থেকে সপরিবার ঘুরতে এসেছেন সঞ্জয় শ্রীবাস্তব। তিনি বলেন, ‘‘একটা কিন্তু-কিন্তু মনোভাব নিয়েই এসেছিলাম। এসে ভালই ঘুরলাম। একটু থমথমে ভাব ছিল। কিন্তু, উৎসবের মেজাজটা দেখে মনে হচ্ছে সেটা কেটে যাবে।’’

পাহাড়ে গত বছরের তুলনায় এ বারে বড়দিনের মরসুমে ব্যবসা হয়েছে ৩০-৪০%। ঘুরে দাঁড়াতে সঞ্জয়ের এই কথাই এখন জিটিএ-র বড় বিজ্ঞাপন হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Binay Tamang tourism discount Darjeeling
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE