Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কর্মসূচিতে বাধা, হুমকি বিজেপির

দলীয় কর্মীদের আক্রান্ত হওয়া ও পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে সোমবার দুপুরে ময়নাগুড়ি থানা ঘেরাওয়ের ডাক দেয় বিজেপি৷ এ জন্য ময়নাগুড়ি শিশু উদ্যানের কাছের মাঠে জমায়েত হন দলের নেতা-কর্মীরা৷

সকাল থেকেই জেলা ও উত্তরের অন্য থানা থেকে পুলিশ এসে ময়নাগুড়িতে বিজেপির অবরোধে বাধা দেয়। নিজস্ব চিত্র

সকাল থেকেই জেলা ও উত্তরের অন্য থানা থেকে পুলিশ এসে ময়নাগুড়িতে বিজেপির অবরোধে বাধা দেয়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৩২
Share: Save:

পুলিশের বাধায় ভেস্তে গেল বিজেপির ময়নাগুড়ি থানা ঘেরাও কর্মসূচি৷ থানা ঘেরাওয়ে বাধা পেয়ে বিজেপির নেতা-কর্মীরা ময়নাগুড়ি-ধূপগুড়ি জাতীয় সড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে, পুলিশ সেখান থেকেও হটিয়ে দেয় তাদের। ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিজেপি নেতারা জলপাইগুড়ির পুলিশ কর্তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করার হুমকি দিয়েছেন৷

গত শনিবার ময়নাগুড়ির জোরপাকড়িতে বিজেপির একটি সভা হয়৷ সেই সভার আগেই সেখানে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল ও বিজেপির কর্মী সমর্থকরা৷ সংঘর্ষে দুই পক্ষের ১৪ জন জখম হন৷ এঁদের মধ্যে চারজনকে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷ ওইদিনই ছোট দোমহনী এলাকায় বিজেপির দু’জন তৃণমূল নেতা-কর্মীদের হাতে আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ৷ আরও অভিযোগ, জোরপাকড়ির ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিবার ভোটপট্টি এলাকায় বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে বিজেপির দুই কর্মীকে বেধড়ক মার দেওয়া হয়৷

দলীয় কর্মীদের এ ভাবে আক্রান্ত হওয়া ও পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে সোমবার দুপুরে ময়নাগুড়ি থানা ঘেরাওয়ের ডাক দেয় বিজেপি৷ এ জন্য ময়নাগুড়ি শিশু উদ্যানের কাছের মাঠে জমায়েত হন দলের নেতা-কর্মীরা৷ গোলমালের আশঙ্কায় থানা মোড়ে বিশাল পুলিশ ও র‌্যাফ মোতায়েন করা হয়৷ জেলার প্রায় সব থানা থেকেই পুলিশ কর্মীদের ময়নাগুড়ি পাঠানো হয়৷ ময়নাগুড়িতে যান খোদ পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) নিমা নর্বু ভুটিয়া সহ জেলা পুলিশের কর্তারা৷ দুপুর আড়াইটে নাগাদ বিজেপির নেতা কর্মীদের মিছিল শুরু হয়৷ মিছিলের নেতৃত্ব দেন দলের জেলা সভাপতি দেবাশিস চক্রবর্তী৷ কিন্তু মিছিল থানা মোড়ে পৌঁছতেই পুলিশ তাদের আটকে দেয়৷ এরপরই ময়নাগুড়ি থেকে ধূপগুড়িগামী জাতীয় সড়কের উপর বসে পড়ে রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করেন বিজেপির নেতারা৷ কিন্তু পুলিশের বাধায় সেই কর্মসূচি থেকেও পিছু হটতে বাধ্য হয় তাঁরা৷ এরপর বিজেপি নেতা-কর্মীরা ফের শিশু উদ্যানের কাছে মাঠের মধ্যে জমায়েত করলে পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে সেখান থেকে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়৷

ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিজেপি নেতারা জেলার পুলিশ কর্তাদের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার হুঁশিয়ারি দেন৷ বিজেপির জেলা সম্পাদক বাপি গোস্বামী বলেন, ‘‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পুলিশকে স্মারকলিপি দিতে চেয়েছিলাম৷ কিন্তু স্মারকলিপি নেওয়া তো দূরের কথা, পুলিশ আমাদের থানা পর্যন্ত যেতেই দেয়নি৷ তাই আমরা এ বার পুলিশ কর্তাদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাব৷’’ জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘এ দিন বিজেপির দলীয় কর্মসূচির কোনও অনুমতি ছিল না৷ বেআইনিভাবে ওরা জমায়েত, মিছিল ও থানা ঘেরাওয়ের চেষ্টা করে৷ তাই ওদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হবে৷’’

তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী আবার কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘‘বিজেপি নেতারা দাবি করলেন, যে তাদের দলে প্রচুর মানুষ যোগ দিয়েছেন৷ অথচ এ দিন ময়নাগুড়িতে ওদের কর্মসূচিতে মানুষেরই দেখা নেই৷ এর থেকেই স্পষ্ট, বিজেপি নেতারা তাদের দলে যোগদান নিয়ে যে প্রচার করছেন তা ডাহা মিথ্যা কথা৷’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE