Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কেরলে উদ্ধার কিশোর, বাংলাদেশি গ্রেফতার

কেরলে এক বাংলাদেশি নাগরিকের হেফাজতে ছিল এক কিশোর। তাকে উদ্ধার করল কালিয়াচক থানার পুলিশ। ওই কিশোরের বাড়ি কালিয়াচকের রাজনগরের বেগুনটোলায়। গ্রেফতার করা হয়েছে সাহাদাত হোসেন (৩৯) নামে ওই বাংলাদেশিকেও। 

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:০৫
Share: Save:

কেরলে এক বাংলাদেশি নাগরিকের হেফাজতে ছিল এক কিশোর। তাকে উদ্ধার করল কালিয়াচক থানার পুলিশ। ওই কিশোরের বাড়ি কালিয়াচকের রাজনগরের বেগুনটোলায়। গ্রেফতার করা হয়েছে সাহাদাত হোসেন (৩৯) নামে ওই বাংলাদেশিকেও। সাহাদাত বেআইনি ভাবে এদেশে ঢুকেছিলেন। কালিয়াচক থানার পুলিশ গিয়ে কেরালা থেকে ওই কিশোরকে উদ্ধার করে বুধবার জেলায় ফিরেছে।

অভিযুক্তকেও কেরলের আদালতে তুলে ট্রানজিট রিমান্ডে মালদহে নিয়ে আসে পুলিশ। বুধবার দু’জনকে মালদহ জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। কিশোরকে বাড়ি পাঠানো হয়। অভিযোগ উঠেছে, কাজ দেওয়ার নাম করে ভিন্‌ রাজ্যে নিয়ে গিয়ে ওই কিশোরকে সম্ভবত বিক্রি করে দেওয়া হত। তাতে উৎকণ্ঠায় পড়েছেন এলাকার মানুষ। গোটা ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। প্রশ্ন উঠেছে, এই জেলায় কী এ বার বাংলাদেশি শিশু ও কিশোর পাচারকারীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে?

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কিশোরের বাড়ি কালিয়াচকের রাজনগর এলাকার বেগুনটোলা গ্রামে। রাজনগর হাই স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। জানা গিয়েছে, গত ৩ নভেম্বর দুপুরে বাড়ির কাছেই ১৬ মাইল এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় সামিম। আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবদের বাড়িতে খোঁজ নেওয়া হলেও তার কোনও হদিস মেলেনি। গত ১৩ নভেম্বর ওই কিশোরের মা কালিয়াচক থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি একজনের কাছে টাকা পেতাম। সেই টাকা আনতে গিয়েছিল সামিম। তারপর থেকেই ছেলের আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।’’

গত ২৪ নভেম্বর ছেলে তাঁকে কেরল থেকে ফোন করে। সেখানকার পুলিশও তাঁর সঙ্গে কথা বলে। কিন্তু ভাষাগত সমস্যার কারণে তিনি পুলিশের কথা বুঝতে পারেননি। সে সময় ছেলেই মাকে কালিয়াচক থানায় গিয়ে ফোন করতে বলে। সেই মতো তিনি কালিয়াচক থানায় যোগাযোগ করেন।

তারপরে দুই রাজ্যের পুলিশ কথাবার্তা বলে সামিমকে কেরল থেকে ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট হয়। পুলিশ জানিয়েছে, কালিয়াচক থানার পুলিশের একটি দল কেরলের কালিকট থানায় গিয়ে সামিমকে উদ্ধার করে। পরে ওই থানার পুলিশেরই সহযোগিতা নিয়ে এলাকারই এক ডেরা থেকে অভিযুক্ত সাহাদাতকে গ্রেফতার করে। তাকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, সাহাদাতের বাড়ি বাংলাদেশের চাপাই নবাবগঞ্জ জেলার নবাবগঞ্জ থানা এলাকায়। বেআইনিভাবে কয়েকবছর আগে সে বাংলাদেশ থেকে এপারে চলে আসে। কালিয়াচকে সে জিনিস ফেরি করে বেড়াত।

ওই কিশোর জানিয়েছে, সাহাদাত কাজ দেওয়ার নাম করে তাকে প্রথমে শিলিগুড়ি, পরে অসম, কলকাতা হয়ে কেরলে নিয়ে যায়। সেখানে গোপন ডেরায় রেখে অত্যাচার চালানো হত। কাজও দেওয়া হয়নি। গত ২৪ নভেম্বর সুযোগ পেয়ে সে পালিয়ে কাছেই কালিকট থানায় গিয়ে সব খুলে বলে। এরপরই কালিকট থানার পুলিশ কালিয়াচক থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে। মালদহের শিশু সুরক্ষা আধিকারিক অরুণায়ন শর্মা বলেন, এই ঘটনায় পাচারের যোগ থাকতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arrest Bangladesh Kerala
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE