প্রতীকী চিত্র।
ভুল ইঞ্জেকশন দেওয়ায় একটি শিশুর মৃত্যুর অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল। বৃহস্পতিবার রাতে উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি গ্রামীণ হাসপাতালে ওই শিশুর মৃত্যুর পরে তাঁর পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা অভিযুক্ত চিকিত্সক ও নার্সদের শাস্তির দাবিতে হাসপাতাল চত্বরে প্রায় এক ঘণ্টা বিক্ষোভ দেখান। পাশাপাশি, সেই সময় জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত মনোজিৎ রায় নামে এক চিকিত্সককে মারধর করে করণদিঘি থানায় নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ।
পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। শুক্রবার শিশুটির দেহ রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত করেছে পুলিশ। করণদিঘি থানার আইসি গৌতম চক্রবর্তীর দাবি, এখনও পর্যন্ত কোনও পক্ষের তরফে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধার বক্তব্য, উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-৩ শ্যামলকুমার বিশ্বাস এ দিন ওই হাসপাতালে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন। স্বাস্থ্যকর্তার বক্তব্য, হাতুড়ে চিকিত্সককে দেখানোর পর ওই শিশুটিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তবে কোনও চিকিত্সকের বিরুদ্ধে চিকিত্সায় গাফিলতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশের কাছে মনোজিৎবাবুকে মারধরের অভিযোগ জানানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই শিশুর নাম সুরজিৎ রায়। বয়স চার। বাড়ি করণদিঘি থানার রানিগঞ্জ এলাকায়। সুরজিতের বাবা পেশায় হাট ব্যবসায়ী অনিল রায়ের দাবি, গত বুধবার থেকে বাড়িতে মাঝে মাঝে বমির সমস্যা শুরু হয় সুরজিতের। স্থানীয় এক হাতুড়ে চিকিত্সককে দেখানোর পর তিনি সুরজিতকে হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। সেই মতো বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ তাঁরা সুরজিতকে করণদিঘি গ্রামীণ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। তাঁর অভিযোগ, সেই সময় জরুরি বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিত্সক মনোজিৎবাবুর পরামর্শে নার্সরা সুরজিৎকে স্যালাইন দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু শিশুটির হাতে শিরা খুঁজে না পেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে রেফার করেন। কিন্তু রেফার করার পর মনোজিৎবাবুর পরামর্শে একজন নার্স সুরজিৎকে বমির বন্ধ করার ইঞ্জেকশন দেন। সেই ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরেই সুরজিতের মৃত্যু হয় বলে তার পরিবারের লোকজনের দাবি।
সুরজিতের বাবা অনিলবাবু ও প্রতিবেশী পল্লব সিংহের দাবি, তাঁরা কোনও চিকিত্সককে মারধর করেননি। ওই চিকিত্সক নিজেই থানায় গিয়েছিলেন। তাঁদের কথায়, ‘‘ইঞ্জেকশন দেওয়ার আগের মুহূর্তেও সুরজিত সুস্থ ছিল। সে আমাদের সঙ্গে কথাও বলেছে। কিন্তু ভুল ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরেই তার মৃত্যু হয়।’’ তিনি প্রশ্ন করেন, ‘‘রেফার করার পরেও কেন ভুল ইঞ্জেকশন দিয়ে শিশুটিকে মারা হল?’’ তাঁরা জানান, সত্কারের পর অভিযুক্ত চিকিত্সকের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy