Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

পোস্টার ছেঁড়ায় তপ্ত গৌড়বঙ্গ

বারবার ঘেরাও বিক্ষোভ এবং পোস্টার দেওয়ার ঘটনায় অস্থিরতা তৈরি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্ম লাটে উঠেছে বলে অভিযোগ।

অভিযোগ: চলছে পোস্টার ছেঁড়া। নিজস্ব চিত্র

অভিযোগ: চলছে পোস্টার ছেঁড়া। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:০২
Share: Save:

পোস্টার টাঙানোকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল মালদহের গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। সোমবার দুপুরে একদল ছাত্র-ছাত্রী উপাচার্য গোপালচন্দ্র মিশ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়ে পোস্টার দেয় বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে। আর সেই পোস্টার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মী সমর্থকেরা ছিঁড়ে ফেলে বলে অভিযোগ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় বচসা হয়। পরে দু’পক্ষই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে বলে অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষীরাই পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।

বারবার ঘেরাও বিক্ষোভ এবং পোস্টার দেওয়ার ঘটনায় অস্থিরতা তৈরি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্ম লাটে উঠেছে বলে অভিযোগ। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোপাল মিশ্র বলেন, “ফোনে শুনেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখব।” ক্ষুব্ধ গোপালবাবু বলেন, “খুব অল্প সময়ের মধ্যে ভালো সুনাম হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের। তাই কিছু মানুষ সুনাম নষ্ট করার জন্য অশান্তির পরিবেশ তৈরি করছেন।”

তবে এটাও ঠিক, বিতর্ক কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের। কখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের ইস্তফা নিয়ে গোলমাল শুরু হয়ে যাচ্ছে, কখনও নম্বর বৃদ্ধিতে ছাত্র-ছাত্রীরা আন্দোলনে নামছেন। সপ্তাহ খানেক আগে জেলা কংগ্রেসের নেতৃত্ব প্রায় সাত ঘণ্টা ধরে ভর্তিতে অনিয়মের অভিযোগ তুলে উপাচার্য গোপালবাবুকে ঘেরাও করে রাখা হয়।

এমনকী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে রাস্তায় নামেন একদল ছাত্র-ছাত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর ছবি নিয়ে আন্দোলনের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছিল উচ্চ শিক্ষা দফতর। তারপরেও রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়ে গত, ৮ নভেম্বর একদল ছাত্র-ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে পোস্টার দেন। অভিযোগ, এম.ফিল, স্নাতকোত্তর সহ বিভিন্ন পরীক্ষা হলেও এখনও ফলাফল প্রকাশিত হয়নি। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটও বন্ধ রয়েছে। যার জন্য অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন বন্ধ রয়েছে।

এ দিন ফের একই ইস্যুতে বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে পোস্টার দেন ওই ছাত্র-ছাত্রীরা। এরপরই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থক ছাত্র-ছাত্রীরা সমস্ত পোস্টার টেনে ছিঁড়ে দেয়। এই নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়।

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দাবি, মাস খানেক ধরে বিজেপি এবং কংগ্রেস সমর্থিত কিছু ছাত্র-ছাত্রী রাজ্য সরকারকে বদনাম করার জন্য কখনও মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দিয়ে আন্দোলনে নামছে, আবার কখনও পোস্টার দিচ্ছে। যার প্রতিবাদ এদিন করা হয়েছে।

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি প্রসূন রায় বলেন, “বিজেপির কিছু অধ্যাপক পড়ুয়াদের উস্কে মিছিল আন্দোলন করাচ্ছে। এদিনও অশান্তির চেষ্টা করে তারা। এমন চলতে থাকলে আমরা রুখে দাঁড়াব।” তবে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন যে ঋতুপর্ণা দাস, তিনি টিএমসিপি-রই নেত্রী। তবে ঋতুপর্ণা বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। তাই আমরা আন্দোলনে নেমেছি। এখানে দলের কোনও
বিষয় নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE