প্রতীকী ছবি।
তিন ঘণ্টায় কমে গেল ছয় ডিগ্রি। এ বছরের জানুয়ারির ‘রেকর্ড’ তাপমাত্রায় এটি আরও এক নজির বলে দাবি আবহাওয়াবিদদের। বুধবার শিলিগুড়িতে দিনের তাপমাত্রা ছিল ২০। বিকেলের পর থেকেই তরতর করে তাপমাত্রা নামতে শুরু করে। কনকনে হাওয়া আরও ধারালো হতে থাকে। তিন ঘণ্টার মধ্যে ৬ ডিগ্রি কমে যায়। বিকেল চারটের সময়ে শিলিগুড়ির ২০ ডিগ্রি তাপমাত্রা সন্ধ্যের সময়ে কমে হয় ১৪। শুধু শিলিগুড়ি নয়, কোচবিহার থেকে আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, বালুরঘাট সর্বত্রই দুপুর থেকে সন্ধেয় তাপমাত্রা নেমেছে হু হু করে।
শীতের কামড়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, অফিসে হাজিরা কমেছে। উধাও হয়েছে বিভিন্ন স্টেশনে সকালের চেনা ভিড়। সকাল ছ’টা দশ মিনিটের ধুবুরি ইন্টারসিটি ধরতে ভোর থেকে টিকিটের লম্বা লাইন পড়ে শিলিগুড়ি জংশন স্টেশনে। শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষাতে এর ব্যতিক্রম হয় না বলে দাবি। কিন্তু রাতারাতি বদলে গিয়েছে ছবিটা। রেলের কর্মীদের দাবি, লম্বা লাইন তো দূরঅস্ত। টিকিট বিক্রিও কমে গিয়েছে গত কয়েকদিন ধরে। ট্রেন ছাড়ার সময়েও সুনসান থাকছে স্টেশন। এক রেলকর্মীর কথায়, ‘‘ধুবুরিতে ভিড় নেই, এটা তো একটা রেকর্ড।’’ তেপান্ন বছরের ঠান্ডার রেকর্ডও ভেঙেছে এ বছর।
এতদিন উত্তরবঙ্গে শীতলতম বলে চিহ্নিত ছিল ১৯৬৪ সাল। এ বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের ঠান্ডাতেই ৬৪ র রেকর্ড টলে গিয়েছে। সোমবার শিলিগুড়ি শহরের তাপমাত্রা ২ এর থেকেও কমে গিয়েছিল। আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী সোমবারের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গ্যাংটকের থেকেও কমে গিয়েছিল শিলিগুড়ির তাপমাত্রা। গ্যাংটকে সে দিন সর্বনিম্ন ছিল ২.১ ডিগ্রি। ওই দিনই জলপাইগুড়ির তাপমাত্রা ছিল ৩.৮ এবং সে দিনই মধ্যরাতের পরে কোচবিহারের তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল ৩ ডিগ্রিতে।
১৯৬৪ সালে ৩০ জানুয়ারি জলপাইগুড়ির তাপমাত্রা নেমেছিল ৪ ডিগ্রিতে। তারপর দিন কোচবিহারের তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল ৩.৩ ডিগ্রিতে। এ বছর ঠান্ডার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে পশ্চিমী ঝঞ্ঝাকেই দায়ী করছেন আবহাওয়াবিদরা। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের পুর্বাভাস তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘‘এ বছর গ্যাংটকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২ তে নেমে গিয়েছিল। সাত বছরে এমনটা হয়নি। আকাশে মেঘ নেই, তাপমাত্রা আরও কমবে।’’ বুধবার তাপমাত্রার দ্রুত নেমে যাওয়া প্রসঙ্গে গোপীনাথবাবু বলেন, ‘‘আকাশে মেঘ না থাকায় বিকেলের পরই দ্রুত উষ্ণতা কমে যাচ্ছে। হাওয়ায় কনকনে ভাব বেশই থাকায় এ বছর তাপমাত্রা নেমে যাওয়ার গতি বেশি।’’ বুধবার সন্ধেয় শিলিগুড়ির সদাব্যস্ত হিলকার্ট রোডও ছিল তুলনামূলক ফাঁকা। সুনসান হয়ে যায় শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ির ৩১ডি জাতীয় সড়কও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy