Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

রক্ত বিক্রি নিয়ে ‘নিষ্ক্রিয়’ পুলিশ

রক্ত বিক্রির চেষ্টার অভিযোগে দুই যুবককে পাকড়াও করে পুলিশের হাতে দিয়েছিলেন রায়গঞ্জের দু’টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দুই কর্তা। কিন্তু পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তারা আদালত থেকে জামিন পেয়ে গেল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:২৩
Share: Save:

রক্ত বিক্রির চেষ্টার অভিযোগে দুই যুবককে পাকড়াও করে পুলিশের হাতে দিয়েছিলেন রায়গঞ্জের দু’টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দুই কর্তা। কিন্তু পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তারা আদালত থেকে জামিন পেয়ে গেল। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রক্তের বেআইনি কারবারের তদন্ত নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তা ও উদাসীনতার অভিযোগ উঠেছে।

রক্তের বেআইনি কারবার রুখতে কেন পুলিশ ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন মনে করল না, সেই প্রশ্ন তুলে বৃহস্পতিবার রায়গঞ্জ থানার আইসির দ্বারস্থ হন ওই দুই সংস্থার কর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য ও মৃণালকান্তি সিংহ। আইসি সুমন্ত বিশ্বাসের দাবি, ‘‘পুলিশ আইন মেনেই তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করেছে।’’

বুধবার মৃণালকান্তি ফেসবুকে সাহিদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করে সাত হাজার টাকার বিনিময়ে এক ইউনিট বি-নেগেটিভ রক্ত কেনার টোপ দিয়ে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের রায়গঞ্জ ডিপোর বাসস্ট্যাণ্ডে তাকে ডেকে আনেন। সাহিদুর ও তার সঙ্গী আতিউর রহমান বাসস্ট্যান্ডে আসার পরে মৃণালকান্তি ও কৌশিকবাবু তাঁদের পুলিশের হাতে তুলে দেন।

ইংরেজবাজারের যদুপুর আমবাগান এলাকার বাসিন্দা ওই দুই অভিযুক্তকে এ দিন রায়গঞ্জের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে তোলে পুলিশ। পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতা, প্রতিশ্রুতিভঙ্গ ও প্রতারণার অভিযোগে জামিনযোগ্য ৪০৬, ৪১৭ ও ৪২০ ধারায় মামলা দায়ের করায় আদালত অভিযুক্তদের ব্যক্তিগত এক হাজার টাকা করে বন্ডে জামিন মঞ্জুর করে। ধৃতদের দাবি, ‘‘আমাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। আমরা রক্ত কেনাবেচার সঙ্গে কোনওভাবেই জড়িত নই।’’

পুলিশের যুক্তিতে তাঁরা সন্তুষ্ট হতে পারেননি বলে দাবি করেছেন কৌশিক ও মৃণালকান্তি। তাঁদের দাবি, প্রাথমিক জেরায় অভিযুক্তরা বেআইনি রক্ত কেনাবেচার সঙ্গে যুক্ত একাধিক ব্যক্তি ও কলকাতার ভবানীপুরের একটি বেসরকারি ব্লাডব্যাঙ্কের নাম বলেছেন। কিন্তু পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জামিনঅযোগ্য ধারায় বেআইনি কারবার বা চোরাকারবারের অভিযোগে মামলা দায়ের না করায় এ দিন তারা জামিন পেয়ে গেল। তাঁদের ক্ষোভ, ‘‘পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জামিনঅযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করে হেফাজতে নিয়ে জেরা করলে রাজ্যজুড়ে রক্ত বিক্রির চক্র ধরা পড়ত। কিন্তু পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় তা সম্ভব হল না।’’

পুলিশের পাল্টা দাবি, মানব অঙ্গ বিক্রি বা পাচারের মামলার নির্দিষ্ট ধারা থাকলেও রক্ত বিক্রির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ধারা নেই। তাছাড়া ধৃতেরা আগে কোনওদিন রক্ত বিক্রি করেছে বা রক্ত বিক্রির সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পুলিশের দাবি, ওইদিন তারা রক্ত বিক্রির নামে মৃণালবাবুকে প্রতারণা করে টাকা রোজগার করতেই রায়গঞ্জে এসেছিল। তাই মামলার গতিপ্রকৃতি অনুযায়ী পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারাতেই মামলা দায়ের করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Blood Blood Sellers police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE