Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

লড়াই করতে খোঁজ ‘খাঁটি কমরেডের’

গত পঞ্চায়েতে দলের টিকিটে জিতেও অনেকে দলবদল করেছেন। সদস্যদের শিবির বদলে হাতছাড়া হয়েছে বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েত, একটি পঞ্চায়েত সমিতিও। এ বারও তাই সর্ষের মধ্যে ‘ভূত’ থাকার ভয় তৈরি হয়েছে।

অরিন্দম সাহা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৮ ০৬:২৪
Share: Save:

ভোটে জেতা সহজ নয়। তবে জিতেও নিশ্চিন্ত হওয়ার উপায় নেই! জেতা প্রার্থী দল বদলে চলে যেতে পারেন শাসক শিবিরে। এই আশঙ্কাতেই কোচবিহারে এখন ‘খাঁটি কমরেড’ খুঁজছে সিপিএম।

গত পঞ্চায়েতে দলের টিকিটে জিতেও অনেকে দলবদল করেছেন। সদস্যদের শিবির বদলে হাতছাড়া হয়েছে বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েত, একটি পঞ্চায়েত সমিতিও। এ বারও তাই সর্ষের মধ্যে ‘ভূত’ থাকার ভয় তৈরি হয়েছে। সেই ভূত তাড়াতেই প্রার্থী বাছাইয়ে বাড়তি সতর্ক জেলা সিপিএম।

দলের জেলা কমিটির বৈঠকে সম্প্রতি সিদ্ধান্ত হয়েছে, তিনস্তরেই স্থানীয় নেতৃত্ব কিংবা তাঁদের পরিবারের সদস্যদের টিকিট দেওয়ায় অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তা মাথায় রেখেই সম্ভাব্য তালিকা তৈরি করার ব্যাপারে নীচু তলায় নির্দেশ পাঠান হয়েছে। দলীয় সূত্রের দাবি, নেতা বা পরিবারের সদস্যরা জিতলে অন্তত গত বারের মত অবস্থা হবে না। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, “শাখা, বুথ, এরিয়া কমিটির নেতৃত্ব বা সক্রিয় পার্টি সদস্যদের মধ্য থেকেই আমরা যতটা সম্ভব প্রার্থী চূড়ান্ত করতে চাইছি। কোথাও সংরক্ষণ বা অন্য সমস্যা থাকলে তাদের পরিবারের সদস্যদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।”

দলীয় নেতৃত্বের ব্যাখা, ওই নেতারা কঠিন সময়েও দলে রয়েছেন। তাই তাঁরা বা তাঁদের পরিবারের লোকেরা জিতে এলে ‘ঘোড়া কেনাবেচা’ এড়ানো যাবে। তবে তারপরেও যদি দল বা ফ্রন্টগতভাবে কোনও আসনে যোগ্য প্রার্থী দেওয়া সম্ভব না হয় তাহলে তৃণমূল, বিজেপি বিরোধী সাহসী ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূতির নির্দল প্রার্থীকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

দল সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোচবিহারের ১২৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ২৪টির বেশি গ্রাম পঞ্চায়েত বোর্ড গড়েছিল বামেরা। অর্ধেকের বেশি ছিল সিপিএমের নিয়ন্ত্রণাধীন। কোচবিহার ২ পঞ্চায়েত সমিতিতে সভাপতি পদও পেয়েছিল সিপিএম। জেলা পরিষদেও সিপিএমের ৩ সদস্য জয়ী হন।

পরবর্তী সময়ে দলের টিকিটে জেতা ওই জনপ্রতিনিধিদের অনেকেই শিবির বদল করেন। বাণেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান জীবেন্দ্র দেবসিংহ তাদেরই একজন। পঞ্চায়েত ভোটের পর সিপিএমের দখলে যাওয়া ওই পঞ্চায়েতের প্রধান হন তিনি। দলবদল করেও তিনিই তৃণমূলেরও প্রধান হন। জীবেন্দ্রবাবু বলেন, “রাজ্যের উন্নয়ন যজ্ঞে সামিল হতে ওই দলবদল।”

তুফানগঞ্জ থেকে মেখলিগঞ্জেও এমন নজির রয়েছে। সিপিএমের অবশ্য অভিযোগ, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কর্মী ও প্রার্থীদের ভয়ভীতি দেখান হয়। প্রলোভনের টোপও রয়েছে। তৃণমূলের কোচবিহার ২ ব্লক সভাপতি পরিমল বর্মন বলেন, “ভিত্তিহীন অভিযোগ। সবাই স্বেচ্ছায় দলে এসেছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CPM Cooch Behar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE