Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ভিড়ের সঙ্গে আশাও বাড়ছে পাহাড়ে

সোমবার ছিল শিলা বৃষ্টি, ঝোড়ো হাওয়া। মঙ্গলবার তা বদলে গেল উজ্জ্বল সকালে। দার্জিলিঙের দিগন্তে ঝকঝক করছিল কাঞ্চনজঙ্ঘা। জিপ স্ট্যান্ডের কাছে বিখ্যাত রুফ টপ রেস্তোরাঁয় ভিড় করে চা-সসেজের প্রাতরাশ সারতে লাইন পড়ে গিয়েছিল। দেখে মনে হচ্ছিল, পুরনো পর্যটন মরসুম এসে গিয়েছে দার্জিলিঙে।

উৎসাহ: বাণিজ্য সম্মেলনের জায়গার সামনে নিজস্বী তোলায় মগ্ন স্থানীয় বাসিন্দারা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

উৎসাহ: বাণিজ্য সম্মেলনের জায়গার সামনে নিজস্বী তোলায় মগ্ন স্থানীয় বাসিন্দারা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

কিশোর সাহা
দার্জিলিং শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৮ ০৩:০৯
Share: Save:

সোমবার ছিল শিলা বৃষ্টি, ঝোড়ো হাওয়া। মঙ্গলবার তা বদলে গেল উজ্জ্বল সকালে। দার্জিলিঙের দিগন্তে ঝকঝক করছিল কাঞ্চনজঙ্ঘা। জিপ স্ট্যান্ডের কাছে বিখ্যাত রুফ টপ রেস্তোরাঁয় ভিড় করে চা-সসেজের প্রাতরাশ সারতে লাইন পড়ে গিয়েছিল। দেখে মনে হচ্ছিল, পুরনো পর্যটন মরসুম এসে গিয়েছে দার্জিলিঙে।

সত্যিই কি এসেছে পুরনো মরসুম? এই প্রশ্ন স্থানীয় ব্যবসায়ী থেকে রেস্তোরাঁ, এমনকী শিল্প সম্মেলনে হাজির প্রতিনিধিদের মধ্যেও। এই কৌতূহল কিছুটা মেটালেন হাজির পর্যটকেরা। নৈহাটির দত্ত পরিবার, সব মিলিয়ে ১৪ জনের দল নিয়ে হাজির পাহাড়ে। সোমবার শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং পৌঁছে হোটেলে ঢোকার আগে তুমুল বৃষ্টিতে সকলেই কমবেশি ভিজেছেন। তাতেও উৎসাহ কমেনি। মঙ্গলবার ভোরে গাড়ি নিয়ে সোজা টাইগার হিল। ফিরে সকলে পালা করে রুফ টপ রেস্তোরাঁটির সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছিলেন। সমর দত্ত বললেন, ‘‘শিল্প সম্মেলনের দিনক্ষণ জানতেই সটান বুকিং করেছিলাম হোটেল। বাতানুকুল বাসে শিলিগুড়ি। এ কটা দিন পুরোপুরি নিরাপদে কাটবে জেনেই এসেছি।’’

কিন্তু শুধু কি ভিআইপি-দের ভিড়ে নিরাপত্তা থাকার আশ্বাসেই আসছেন পর্যটকেরা? দার্জিলিঙের নামী রেস্তোরাঁর কর্ণধার অজয় এডওয়ার্ড বললেন, ‘‘মার্চের শেষে গ্রীষ্মের পর্যটন মরসুমের শুরু হয়ে থাকে। এ বার বিজনেস সামিটের ছোঁয়ায় তার আগাম বোধন হয়ে গেল। দীর্ঘ বন্‌ধের ধাক্কায় কাবু পাহাড়ের হোটেল, রেস্তোরাঁ, গাড়ি চালকদের মুখে ফের হাসি ফুটছে।’’

বুকিংও ভাল হচ্ছে হোটেল, হোম স্টে-গুলিতে। ট্যুর অপারেটরদের সংগঠনের তরফে জানানো হল, জুনের শেষ অবধি বুকিং আছে। ‘হাউস ফুল’ না হলেও খুব খারাপও নয়। সংগঠনের মুখপাত্র প্রদীপ লামাও আশাবাদী, ‘‘এখন ভিড় আছে। তাতে সরকারি লোকজন, ব্যবসায়ী, অনুষ্ঠানের জন্য আসা লোকই বেশি। সেই সুযোগে বহু পর্যটকও এসেছেন। তবে এ বারের গরমের মরসুমটা ভালই হওয়া উচিত।’’

আসলে আশঙ্কার চোরাস্রোত এখনও বইছে পাহাড়ে। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর সফর, বাণিজ্য সম্মেলনে কিছুটা ঢাকা পড়েছে সে সব। বিনয় তামাঙ্গ, মন ঘিসিঙ্গদের এক মঞ্চে তুলে মুখ্যমন্ত্রী বোঝাতে চাইলেন, আশঙ্কার দিন আর ফিরবে না। তবু, ভয় পুরোপুরি যাচ্ছে না। চকবাজারের মধ্য পঞ্চাশের গাড়িচালক দীপক লামা তাই বলেন, ‘‘হুট করে আবার কেউ গোলমাল না পাকালে আশা করছি বর্ষা অবধি ভিড় থাকবে।’’

এই আশাতেই আপাতত ভরসা রাখছে পাহাড়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE