সর্পিল: টয় ট্রেনে সফর। নিজস্ব চিত্র
হেরিটেজ তকমা পাওয়া দার্জিলিঙের টয় ট্রেন পর্যটকদের কাছে বরাবরের আকর্ষণের বিষয়। সেই পরিষেবাকে আরও ঢেলে সাজার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে রেল বোর্ড। নতুন পর্যটন প্যাকেজ তৈরির নির্দেশ দিয়েছে রেলবোর্ড। স্থানীয় শিল্পকলা, সংস্কৃতি, স্থানীয় খাবার সবই সেই প্যাকেজের মধ্যে আনার কথা ভাবা হচ্ছে। রেল সূত্রের খবর, ২৫ এপ্রিল দিল্লিতে রেল বোর্ডের বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দু’দিন আগে রেলের এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর (হেরিটেজ) সুব্রত নাথের নির্দেশিকা উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষের হাতে এসে পৌঁছেছে। দু’পাতার ওই নির্দেশিকায় হেরিটেজ রেলওয়ের বাড়তি দায়িত্ব নিতে বলা হয়েছে ডিভিশনের ডিআরএমকে। এতদিন টয় ট্রেনের দায়িত্ব এককভাবে একজন ডাইরেক্টরের উপরে ছিল।
১৮৮১ সালে বৃটিশদের হাত ধরে চালু হয় দার্জিলিং টয় ট্রেন। পরে ১৯৯৯-তে ইউনেস্কোর তরফে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের মর্যাদা দেওয়া হয় এই রেলকে। তারপরে নানা সময়ে সমস্যায় পড়েছে এই রেল লাইন। ২০১০-এ তিনধারিয়াতে ধস নেমে লাইন বন্ধ হয়ে যায়। তার পরের বছরেই ফের একই জায়গায় ধসের কারণে ওই অংশে বন্ধ হয়ে যায় টয় ট্রেন চলাচল। প্রায় বছর পাঁচেক ধরে চেষ্টার পরে ২০১৬ থেকে ধীরে ধীরে শুরু তা। পাশাপাশি নানা সময়ে পাহাড়ে আন্দোলনের জেরেও প্রভাব পড়ে টয় ট্রেন পরিষেবার উপরে। ২০১৭-র জুন থেকে টানা ১০৪ দিন বন্ধ চলে পাহাড়ে, যার জেরে মারাত্মক ধাক্কা খায় পর্যটন, প্রভাব পড়ে টয় ট্রেনের উপরেও। সেসময় আন্দোলন চলাকালীন গয়াবাড়ি, ঘুম, সোনাদা এবং দার্জিলিং স্টেশনে ভাঙচুর চলে, অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। সবমিলিয়ে গোটা দেশ তো বটেই বিশ্বের দরবারেও এই হেরিটেজ ট্রেন নিয়ে বিরূপবার্তা যায়।
নতুন নির্দেশিকায় ডিআরএমকে প্রয়োজন মাফিক নতুন পরিষেবা, কামরা এবং প্যাকেজ তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জয়রাইড, হলিডে স্পেশ্যালের মত ট্রেন নামিয়ে যাত্রী সংখ্যা বাড়াতে বলা হয়েছে। টয়ট্রেনে দার্জিলিং-ঘুম জয়রাইড, এনজেপি-তিনধারিয়া জঙ্গল সাফারি চালু রয়েছে। সম্প্রতি কার্শিয়াং-মহানদী স্টেশনের মধ্যে ঘোষণা হয়েছে ‘হিমালয়া অন হুইল’ জয় রাইড। স্টেশন চত্বরের মধ্যে স্থানীয় শিল্পীদের দিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খাবার, হস্তশিল্প বিক্রির কথাও ঠিক হয়েছে। পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান, টয়ট্রেনের প্রতিটি স্টেশনে সংগ্রহশালা, নানা দুর্লভ ছবি রয়েছে। তার মাধ্যমেও পর্যটকদের কাছে টানা যায়। টয় ট্রেন স্বমহিমায় ফিরলে পর্যটন শিল্পে জোয়ার আসার আশাও করছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy