বিষক্রিয়া: জলপাইগুড়ির মণ্ডলঘাটে। নিজস্ব চিত্র।
রাতের অন্ধকারে কেউ বিষ মিশিয়ে দিয়েছিল নদীতে। সকাল থেকে তাই মরে ভেসে উঠল বিস্তর মাছ। এবং সেগুলি তুলে বিক্রিও হল দেদার। সোমবার জলপাইগুড়ির মণ্ডলঘাটে তিস্তার এই ঘটনা কিন্তু ধামাচাপা রইল ২৪ ঘণ্টা। মঙ্গলবার জানাজানি হতেই এলাকায় যান মৎস্য দফতরের কর্তারা। কী বিষ দেওয়া হয়েছে জানতে তাঁরা পরীক্ষার জন্য পাঠান সেই মরা মাছ।
উত্তরবঙ্গে নদীতে বিষ দিয়ে মাছ মারার ঘটনা নতুন নয়। কয়েক বছর আগে জলপাইগুড়িরই করলা নদীতে রাতারাতি ভেসে উঠেছিল রাশি রাশি মৃত মাছ। সে বার হস্তক্ষেপ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নদীর জল পরিশ্রুত করতে একাধিক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। ময়নাগুড়ির রামসাই কিংবা রাজগঞ্জের করতোয়া নদীতেও একই ঘটনা ঘটেছে এর আগে। মৎস্য দফতরের তরফে সচেতনতামূলক প্রচারও হয়েছে। কিন্তু কোনও কিছুতেই যে পরিস্থিতি বদলায়নি, তা এ বারে স্পষ্ট হয়ে গেল। অনেকেই বলছেন, অন্য নদীতে এমন হয় ঠিকই, কিন্তু তিস্তায় বিষ দিয়ে মাছ মারার ঘটনা সচরাচর মনে পড়ে না।
জলপাইগুড়ি শহর থেকে হলদিবাড়ি দিকে ১০-১২ কিলোমিটার গেলে তিস্তার ধারে মণ্ডলঘাট। এখানে কিছু মৎস্যজীবী পরিবারের বাস। স্থানীয় জইরুল হকেরা বলেন, ‘‘রবিবার রাতেই কেউ বা কারা নদীতে বিষ মিশিয়ে দেয়। সোমবার সকাল থেকে শয়ে শয়ে মাছ মরে ভেসে ওঠে।’’ সেই মৃত মাছ দ্রুত চালান হয়ে যায় কাছাকাছি বাজারগুলিতে। জইরুলের অভিযোগ, কম করে দশ কুইন্ট্যাল মাছ মারা গিয়েছে।
মঙ্গলবারের আগে কিন্তু খবরটি জানতে পারেনি প্রশাসন। তাদের বক্তব্য, মণ্ডলঘাট প্রত্যন্ত এলাকা। তাই খবর আসতে সময় লেগেছে। কিন্তু অনেকেই বলছেন, এখন ইন্টারনেটের যুগে প্রত্যন্ত এলাকা থেকেও খবর আসতে বেশি সময় লাগে না। তাঁদের অভিযোগ, এক বারে কম আয়াসে বেশি মুনাফা করতেই কেউ কেউ জলে বিষ দিয়েছে এবং মাছও দ্রুত বাজারে বেচে দিয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের কথায়, বোয়াল, আর, বৈরালি, বাটা-সহ নানা প্রজাতির মাছ মারা গিয়েছে এই বিষক্রিয়ায়। মৎস্য দফতরের উত্তরবঙ্গের অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর আরএফ লেপচা বলেন, ‘‘বিষক্রিয়ার ফলেই এটা হয়েছে৷ তবে কী ধরনের বিষ, তা জানতে পরীক্ষা করা হবে৷’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy