বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় এক তরুণীর মুখে অ্যাসিড ছুড়েছিল এক যুবক। তারপরে চার বছর ধরে প্রাণ পণ রেখেই বেঁচে থাকার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। খেতে পর্যন্ত কষ্ট হত। তারপরেও পরীক্ষা দিয়ে স্নাতক হয়েছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। মঙ্গলবার কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে মারা যান দীপাবলি রজক (২৩) নামে ওই তরুণী।
দীপাবলির বাড়ি মালদহের বৈষ্ণবনগরে। বাবা বিড়ি কারখানার শ্রমিক। এক ছোট ভাই রয়েছে। ২০১৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি সাটাঙ্গাপাড়া গ্রামে বাড়িতে মায়ের সঙ্গে টিভি দেখছিলেন। আচমকা ঘরে ঢুকে প্রতিবেশী উজ্জ্বল মণ্ডল তাঁর মুখে অ্যাসিড ছুড়ে মারে। তাঁর মুখ তো পুড়ে যায়ই, অ্যাসিড ঢুকে যায় খাদ্যনালীতেও। তাই আস্তে আস্তে মুখের বাইরের ক্ষত সারলেও খেতে পারতেন না। অনেক দিন ধরে কেবল তরল খাবারই ভরসা ছিল তাঁর।
তরল খাবার খেতেও কখনও কখনও খুবই কষ্ট হত। সরকার থেকে যে টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছিলেন, তা দিয়েই তাঁর চিকিৎসা হত। দীর্ঘ দিন ধরে মালদহ ও এসএসকেএমে চিকিৎসা হয়েছে তাঁর। কিন্তু খাদ্যনালী এবং পাকস্থলীর সমস্যা থেকে মুক্তি পাননি। মাঝে মধ্যেই তাঁকে এসএসকেএমে নিয়ে এসে চিকিৎসা করাতে হত।
দীপাবলির পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২২ সেপ্টেম্বর তাঁকে আবার কলকাতায় এনে ভর্তি করানো হয়। তারপরে ১ ও ৩ অক্টোবর দু’দফায় অস্ত্রোপচার হয়। কিন্তু বাঁচানো য়ায়নি। মঙ্গলবার রাত আটটা নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। বুধবার তাঁর দেহ গ্রামে পৌঁছয়। গ্রামের মানুষের শোক ক্ষোভে বদলে গিয়েছে। দীপাবলির প্রতিবেশীরা চান, উজ্জ্বলের আরও কড়া সাজা হোক। উজ্জ্বলকে গ্রেফতার করা হয়েছিল ঘটনার পরপরই। তাকে দশ বছরের কারাদণ্ড গিয়েছে মালদহ নগর দায়রা আদালত। দীপাবলির গ্রামের মানুষের দাবি, এ বার উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের হোক। দীপাবলির বাবা বলেছেন, ‘‘আমার মেয়ে চার বছর ধরে প্রচণ্ড কষ্ট পেয়ে মারা গেল। এ বার আমরা চাই উজ্জ্বলকে দৃষ্টান্তমূলক সাজা দিক আদালত।’’ তিনি জানিয়েছেন, উচ্চ আদালতে মামলা করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy