আদালতে হাজির করানো হচ্ছে ধৃতদের। — নিজস্ব চিত্র
মান বাঁচাতে চলন্ত বাস থেকে তরুণীর ঝাঁপিয়ে পড়ার ঘটনায় ধৃত চালক ও কন্ডাক্টরকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত। মঙ্গলবার ধৃতদের কোচবিহারের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে তোলা হয়। পুলিশ এ দিন ধৃতদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা (৩০৭ ধারা) ও অপহরণের (৩৬৩ ধারা) জামিন অযোগ্য ধারা যুক্ত করে। কোচবিহারের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতের বিচারক সেলিম আনসারি ধৃতদের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন। ৯ জানুয়ারি ফের ধৃত চালক, কন্ডাক্টরকে আদালতে তোলা হবে।
ধৃতদের আইনজীবী বিমল সাহা বলেন, “মামলার শুরুতে পুলিশ জামিন যোগ্য ধারা দিয়েছিল। এ দিন খুনের চেষ্টা, অপহরণের ধারা যুক্ত করার আবেদন করে। ওই দু’জন নির্দোষ। পরবর্তী শুনানির দিন ফের তাদের জামিনের আবেদন জানান হবে।” সরকারি কৌঁসুলি ললিতচন্দ্র বর্মন বলেন, “ওই তরুণীকে একা নিয়ে রওনা হয়েও বাসটি কেন দাঁড় করানো হয়নি, সেই প্রশ্নেও এদিন জামিনের বিরোধিতা করা হয়।” তিনি জানান, সামগ্রিক অভিযোগের ধরন, তদন্তে উঠে আসা তথ্যে এখনও পর্যন্ত যা দেখা যাচ্ছে তাতে নির্ভয়ার মত ঘটনা থেকে শিক্ষা না নিয়ে ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তির চেষ্টার ইঙ্গিত মিলেছে বলে তিনি আদালতে জানিয়েছেন।
পুলিশ অবশ্য ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে চেয়ে এদিন কোন আবেদন করেনি। পুলিশের এক আধিকারিক জানান, ধৃতদের সনাক্তকরণের জন্য টিআই প্যারেড করানো-সহ বেশ কিছু পদ্ধতিগত ব্যাপার রয়েছে। সেক্ষেত্রে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে সুবিধে হয়। সেসব ভেবেই পর্যায়ক্রমে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবালের সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, “তদন্ত হচ্ছে।”
অভিযোগ, ২৩ ডিসেম্বর শুক্রবার সন্ধে নাগাদ কোচবিহার স্ট্যান্ড থেকে দেওয়ানহাটের বাসিন্দা এক তরুণী ফাঁকা একটি বাসে ওঠেন। স্ট্যান্ড থেকে ছাড়ার পরেই বাসের দরজা বন্ধ করে দেন কন্ডাক্টর। বাসের গতি বাড়িয়ে দেন চালক। ভয়ে কোনও মতে দরজা খুলে তিনি রাস্তায় ঝাঁপ দেন। ২৪ ডিসেম্বর ওই ব্যাপারে কোচবিহার কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। শুরুতে জেনারেল ডায়েরি করা হয়। এমনকি ঘটনার আটচল্লিশ ঘন্টা পরেও বাস চিহ্নিত করা, অভিযুক্তদের গ্রেফতার না হওয়া নিয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন ওঠে। সোমবার পুলিশ দুইজনকে গ্রেফতারের করে। আদালত চত্বরে এ দিন ধৃত চালক হাফিজুল রহমান ও কন্ডাক্টর মৃণাল সরকার দাবি করেন, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছে। ঘটনার পরে বাস থামানোও হয়েছিল।’’
ওই তরুণীকে এ দিন নার্সিংহোম থেকে বাড়িতে নিয়ে যান পরিবারের লোকেরা। রবিবার তাঁর হাঁটুতে অস্ত্রোপচার করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy