Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ভাঙনে আতঙ্ক কালিয়াচকে

Kaliyachalkদুপুরের মধ্যেই ভাঙনে তলিয়ে যায় ওই গ্রামেরই নির্মল সরকার, নীলকমল মণ্ডল, চিত্ত বিশ্বাস, কিশোর বিশ্বাসের বাড়িও। পরানপাড়া গ্রামে ঘর হারান সীমান্ত হালদার ও কালাচাঁদ বৈদ্য।

নদীগর্ভে: পাড় ভাঙছে নদী। জলে ভেসে গিয়েছে বাড়ির দালান। বুধবার পারদেওনাপুরে। —নিজস্ব চিত্র।

নদীগর্ভে: পাড় ভাঙছে নদী। জলে ভেসে গিয়েছে বাড়ির দালান। বুধবার পারদেওনাপুরে। —নিজস্ব চিত্র।

জয়ন্ত সেন
মালদহ শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৭ ০২:৪৮
Share: Save:

ফের গঙ্গা ভাঙনের আতঙ্ক কালিয়াচক ৩ ব্লকের পারদেওনাপুর-শোভাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে। বুধবার ভোর থেকেই ওই এলাকার প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ব্যাপক গঙ্গা ভাঙন শুরু হয়েছে। এ দিন দুপুর পর্যন্ত ওই পঞ্চায়েতের গঙ্গা তীরবর্তী চারটি গ্রামের অন্তত ৮টি পরিবারের ঘরবাড়ি গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছে। তাঁরা কেউ অন্যের বাড়িতে বা কেউ স্থানীয় শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।

ভাঙনের জেরে আরও অন্তত ২৫টি পরিবারের ঘরবাড়ি গঙ্গায় তলিয়ে যাওয়ার মুখে। নদীর গ্রাসে গিয়েছে চাষের জমিও। আতঙ্কে ওই এলাকার বেশ কিছু পরিবার নিজেরাই ঘরবাড়ি ভেঙে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। সন্ধে পর্যন্ত ওই এলাকায় প্রশাসনের তরফে কোনও ত্রাণ এসে না পৌঁছনোয় ক্ষোভ ছড়িয়েছে বাসিন্দাদের মধ্যে।

এ দিন ভোর থেকে গোলাপ মন্ডলপাড়া থেকে শুরু হয়ে পরানপাড়া, পার অনুপনগর হয়ে পারলালপুর পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে ভাঙন শুরু হয়। বুধবার সকালেই পার অনুপনগরের বাসিন্দা ধনঞ্জয় রায়ের দু’টি পাকা ঘর নদীতে তলিয়ে যায়। তাঁরই দাদা অমরচন্দ্র রায়ের রান্নাঘর ও শৌচাগার চলিয়ে যায় নদীতে। আতঙ্কে তিনি তাঁর পাকা বাড়ি নিজেই ভেঙে নিতে শুরু করেছেন।

দুপুরের মধ্যেই ভাঙনে তলিয়ে যায় ওই গ্রামেরই নির্মল সরকার, নীলকমল মণ্ডল, চিত্ত বিশ্বাস, কিশোর বিশ্বাসের বাড়িও। পরানপাড়া গ্রামে ঘর হারান সীমান্ত হালদার ও কালাচাঁদ বৈদ্য। পার অনুপনগর গ্রামের বাসিন্দা প্রফুল্ল বিশ্বাস, হরিহর বিশ্বাস, মনোরঞ্জন মণ্ডলদের ঘরবাড়ির দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছে গঙ্গা। ওই বাসিন্দারা ঘরের আসবাবপত্র সরিয়ে নেওয়া শুরু করেছেন।

গত বছরেও পারদেওনাপুর-শোভাপুর পঞ্চায়েত এলাকায় ব্যাপক ভাঙন হয়েছিল। প্রায় ৫০টি পরিবার ভিটেমাটি হারিয়েছিল। অভিযোগ, এখনও ওই পরিবারগুলোর পুনর্বাসনের কোনও ব্যবস্থা হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কয়েক বছর ধরেই এই এলাকায় ভাঙন হলেও তা ঠেকানোর ব্যাপারে ফরাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ বা সেচ দফতরের কোনও হেলদোল নেই। তাই প্রতি বছরই ভিটে হারিয়ে ঘরছাড়া হতে হয় বহু পরিবারকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পঞ্চায়েতকে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে বলে জানান কালিয়াচক ৩ ব্লকের বিডিও খোকন বর্মন।

পারলালপুরে একটি পুরনো মন্দিরকে ভাঙন থেকে রক্ষার জন্য ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে সেচ দফতর। ভাঙন কবলিত এলাকা ফরাক্কা ব্যারাজের অধীনে পড়ে বলে সেচ দফতরের দাবি। কিন্তু পরিস্থিতি গুরুতর হওয়ায় পার অনুপনগরে শীঘ্র ভাঙন রোধের কাজ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন সেচ দফতরের মালদহ ডিভিশনের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার প্রণব সামন্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE