Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

ডিম-ভাতেই আপ্যায়ন তৃণমূলের সম্মেলনে

মেনু সাদামাটা৷ আয়োজন কিন্তু বিশাল৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের জেলা সম্মেলনে জলপাইগুড়ির বিভিন্ন গ্রামগঞ্জ থেকে ময়নাগুড়িতে আসা দলের কর্মীদের ‘আপ্যায়নে’ কোনও ত্রুটি রাখছেন না তৃণমূল নেতৃত্ব৷

তোড়জোড়: সম্মেলনের প্রস্তুতি ময়নাগুড়িতে। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক

তোড়জোড়: সম্মেলনের প্রস্তুতি ময়নাগুড়িতে। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:৪৪
Share: Save:

মেনু সাদামাটা৷ আয়োজন কিন্তু বিশাল৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের জেলা সম্মেলনে জলপাইগুড়ির বিভিন্ন গ্রামগঞ্জ থেকে ময়নাগুড়িতে আসা দলের কর্মীদের ‘আপ্যায়নে’ কোনও ত্রুটি রাখছেন না তৃণমূল নেতৃত্ব৷

তৃণমূল সূত্রের খবর, ময়নাগুড়ি ফুটবল ময়দানে এই সম্মেলনে প্রধান বক্তা রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস৷ থাকছেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব ও দলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী। পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়াই কোন পথে কর্মীদের সামনে সেটাই তুলে ধরবেন তারা৷ বক্তব্য শুনতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অন্তত পঞ্চাশ হাজার মানুষ আসবেন বলে দাবি দলের জেলা নেতৃত্বের৷ সম্মেলনে আসা মানুষদের জন্য দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করছেন তারা৷

তৃণমূল সূত্রের খবর, মেনুতে থাকবে- ভাত, ডাল, তরকারি ও ডিমের কারি৷ যারা ভাত খাবেন না, তাদের জন্য রুটি, সব্জি ও লাড্ডু৷ এত মানুষের রান্নার দায়িত্বে থাকছেন প্রায় চারশো জন৷ তারা সবাই দলের কর্মী বলেই দাবি নেতাদের৷ দলের নেতারা জানিয়েছেন, ময়নাগুড়িতে থাকা আটটি অঞ্চলের তৃণমূল কর্মীরা খাবারের দায়িত্বে থাকবেন৷

মেনু সাদা-মাটা হলেও, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলের জেলা সম্মেলনে এমন বিপুল খাওয়া-দাওয়ার আয়োজনের খরচ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন বিরোধীরা৷ বিজেপির উত্তরবঙ্গের সহকারী আহ্বায়ক দীপেন প্রামাণিকের অভিযোগ, ‘‘পঞ্চায়েতের চুরির টাকা দিয়েই সম্মেলনের নামে গ্রাম-গঞ্জের লোককে খাইয়ে-ভুলিয়ে ভোট আদায় করতে চাইছেন তারা৷’’ তৃণমূলের ময়নাগুড়ির ব্লক সভাপতি মনোজ রায় পাল্টা বলেন, ‘‘আসলে বিজেপি নেতারা নিজেরা যেমন, বাকিদেরকেও তেমনটাই ভাবেন৷ এতবড় সম্মেলন হচ্ছে দেখে দলের প্রচুর কর্মী স্বেচ্ছায় খাওয়ার আয়োজনের জন্য চাঁদা দিতে এগিয়ে এসেছেন৷’’

ময়নাগুড়ি ফুটবল ময়দানে সম্মেলন। কিন্তু খেলার মাঠ বাঁচাতে নামমাত্র খুড়েই সম্মেলনের বিশাল প্যান্ডেল তৈরি করছেন ডেকোরেটার্সের কর্মীরা৷ প্যান্ডেল তৈরির বরাত পাওয়া ডেকোরেটার্স কর্মীদের দাবি, এরফলে গোটা মাঠ সামিয়ানায় ঢাকা থাকলেও, এতটুকুও ক্ষতি হবে না মাঠের৷

আগামীকাল, রবিবার এই জেলা সম্মেলন ৷ বিশাল এই মাঠে মঞ্চ ও প্যান্ডেল তৈরির দায়িত্বে রয়েছে তৃণমূলের ময়নাগুড়ি ১ নম্বর ব্লক৷ ব্লক সভাপতি বলেন, ‘‘এই মাঠটাকে বাঁচাতে এক সময় আমরাই আন্দোলন করেছিলাম৷ সেই মাঠের ক্ষতি করে তো আর আমরা সম্মেলন করতে পারি না৷ তাই ডেকোরেটার্স কর্মীদেরও তেমনটাই বলা হয়েছিল৷’’ বরাত পাওয়া ডেকোরেটার্সের কর্তা হীতেন রায় জানান, বাঁশগুলিকে মাটিতে না পুতে বাঁশের সঙ্গেই একেবারে সরু একটা লোহার রড মাটিতে পোতা হবে৷ তারপর বাঁশের গোড়া সেই রডের সঙ্গে বেধে দেওয়া হবে৷

কিন্তু মাঠ বাঁচাতে এ ভাবে তৈরি প্যান্ডেল এত মানুষের ভিড়ের চাপে আবার ভেঙে পড়বেনা তো? ইতিমধ্যে সেই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের মধ্যেই৷ যদিও হীতেনবাবু তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন।

আলিপুরদুয়ার জেলা সন্মেলনের জোরদার প্রস্তুতি চলছে বীরপাড়ার জুবিলি ক্লাব মাঠে। এখানেও মেনুতে থাকবে ডিমের ঝোল-ভাত। সঙ্গে বাঁধাকপির তরকারি। সভাস্থল তৈরি ও রান্নার প্রস্তুতি নিজেই দাঁড়িয়ে থেকে তদারকি করছেন তৃণমূল কংগ্রেসের আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি মোহন শর্মা। তিনি জানান, সভায় জে ৪০ হাজার কর্মী-সমর্থক আসবেন। তাঁদের জন্য খাবার তৈরি হবে। সভায় সমর্থকদের আনার জন্যে ২ হাজারের বেশি গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE