ডুয়ার্সে ফের ট্রেনের চাকায় খণ্ড বিখণ্ড হয়ে গেল একটি অপ্রাপ্তবয়স্ক দাঁতালের দেহ। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক
ছড়িয়ে ছিটিয়ে প্রায় তিনশো মিটার রেল লাইন জুড়ে রক্তের ছিটে। দেহটা ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে রয়েছে কিছুটা দূরে। উত্তরবঙ্গের রেল পথে হাতির মৃত্যু মিছিলে শেষ সংযোজন।
শনিবার রাতে, চাপড়ামারি রেল গেট থেকে কিলোমিটার খানেক দূরে মালগাড়ির ধাক্কায় ফের মৃত্যু হল একটি দাঁতালের এবং এ ক্ষেত্রেও বন দফতর, অভিযোগের আঙুল তুলল রেল কর্তৃপক্ষের দিকে— নির্ধারিত ৪৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার চেয়ে অনেক বেশি জোরেই ছুটছিল মালগাড়িটি।
বন দফতর জানাচ্ছে, রাত সওয়া দশটা নাগাদ গরুমারা উত্তর রেঞ্জের কর্মীদের কাছে খবর আসে, চাপড়ামারিতে রেল লাইনের উপর একটি হাতি দাঁড়িয়ে রয়েছে৷ ওই রেঞ্জের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সঙ্গে সঙ্গে আমরা সেখানে ছুটি কারণ ওই সময়ে একটি মালগাড়ি যাওয়ার কথা। কিন্তু পৌঁছে দেখি দেরি হয়ে গেছে।’’
যা আশঙ্কা করেছিলেন তাই, শিলিগুড়িমুখী মালগাড়ির চাকায় পেঁচিয়ে কয়েক টুকরো হয়ে গিয়েছে হাতিটি। মালগাড়িটি খানিক পিছিয়ে এনে তবেই দেহাংশগুলো উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল।
প্রাথমিক তদন্তের পরে বন দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, দাঁতালটি চালসার জঙ্গল থেকে চাপরামাড়ির দিকে যাচ্ছিল৷ দুর্ঘটনার খবর রাতেই দেওয়া হয় বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মনকে।
তিনি বলেন, ‘‘জঙ্গলের ভিতর দিয়ে ট্রেন চালানোর সময় গতিবেগ যাতে নির্দিষ্ট সীমায় থাকে, তা নিশ্চিত করতে কিছু দিন অন্তর রেল কর্তাদের সতর্ক করা হয়। শীর্ষ আদালতেরও নির্দেশ সত্ত্বেও সে কথা গায়েই মাখেন না তাঁরা।’’
এ দিন নাগরাকাটা থানায় মালগাড়ির চালক ও গার্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে বন বিভাগ। নাগরাকাটা থানা সূত্রের খবর, ঘটনাটি যেহেতু লাইনের উপরে, তাই সে অভিযোগ নিউ মাল জিআরপি-র কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক প্রণবজ্যোতি শর্মা অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘মালগাড়িটি কম গতিতেই যাচ্ছিল৷ কিন্তু হাতিটি কোনও ভাবে সামনে চলে আসাতেই বিপত্তি ঘটে।’’
পরিবেশ প্রেমী সংগঠন ন্যাফের মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলছেন,‘‘ রেল যতোই বলুক, গতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টাই করে না রেল। তাই হাতি-মৃত্যুর বিরাম নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy