Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

খেতে গেলে ছাঁট মাংসের ভয় বাড়ছে

বাসিন্দাদের দাবি, শহরে রেস্তরাঁ, হোটেল বা ফাস্টফুডের দোকানে ঠিক মাংস দিয়ে রান্না হচ্ছে কি না, তা তো পুরসভারই দেখার কথা। বাজারে বাজে মাংস বিক্রি আটকাতে দুই তরফে সমন্বয়ে কাজ করাটা জরুরি।

ধন্দ: কিসের মাংস, তা নিয়ে থেকে যাচ্ছে ভাবনা। নিজস্ব চিত্র

ধন্দ: কিসের মাংস, তা নিয়ে থেকে যাচ্ছে ভাবনা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:০৮
Share: Save:

গত বছরের পুজোর সময়ের ঘটনা। শহরের দুটি বিরিয়ানির দোকানে মাংস নিয়ে শোরগোল বেঁধে যায়। একটি দোকানের সামনে রীতিমতো হাতাহাতি লেগে যায়। অভিযোগ ওঠে, এমন কোনও প্রাণীর মাংস বিরিয়ানিতে দেওয়া হয়েছে, যা খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত নয়। সাধারণত মুরগি বা পাঁঠার মাংস দিয়েই বিরিয়ানি হয়, কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা হয়নি বলেই দাবি ওঠে। তবে পুলিশ এবং পুরসভার অফিসারেরা দোকানটি বন্ধ করে নমুনা পরীক্ষা করে মাংসে কোনও গোলমাল পাননি।

দুই মাস আগেও মুরগির মাংস নিয়ে শিলিগুড়ি শহরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। বিভিন্ন স্তর থেকে অভিযোগ ওঠে, যে মুরগির মাংস ব্যবহার করা হচ্ছে, তার মান ভাল নয়। বিভিন্ন দোকানেও ছাঁট মুরগি, নাড়িভুড়ি দিয়ে রান্না হয়। রোজ মুরগি বা পাঁঠার মাংসের দোকান থেকে ছাঁট মাংস এবং নাড়িভুড়ি ফাস্টফুডের দোকানগুলোতে যায়। তা চপ থেকে মোমোতে ব্যবহারের মাংসতে মেশানো হয়। নতুন চল ‘মাংস ফ্রাই’। তাতে বাজারে বেঁচে যাওয়া মাংস ব্যবহার করা হয়। যা খেয়ে যে কোনও সময় বিপদ ঘটতে পারে। বাসিন্দাদের দাবি, ‘‘অবিলম্বে শিলিগুড়িতে ছাঁট মাংস বিক্রি বন্ধ করার নির্দেশিকা জারি হোক।’’

তবে ছাঁট মাংস বিক্রি বন্ধ করবে কে! কারণ, মাংস নিয়ে পুরসভা এবং প্রাণী সম্পদ সম্পদ বিকাশ দফতরের মধ্যে টানাপড়েন অব্যাহত রয়েছে। পুরসভার দাবি, মাংসের সব কিছুই দেখার কথা প্রাণী সম্পদ দফতরের। পুরসভার এ সব কিছু দেখার নেই। পুরসভার স্যানিটারি অফিসার গনেশ ভট্টাচার্য বিষয়টি নিয়ে কিছুই বলতে চাননি। তবে গত মাসে অভিযানে নেমেছিল প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতর। দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর মিলন হালদার বলেন, ‘‘আমরা বিভিন্ন বাজারের মাংসের নমুনা বেলগাছিয়া ল্যাবেরোটরিতে পাঠিয়েছিলাম। দুই সপ্তাহ আগে রিপোর্ট এসেছে। ভেজাল বা খারাপ কিছু মেলেনি। কোন দোকানে খাবারে কী ব্যবহার হচ্ছে, সেটা তে পুরসভারই দেখা দরকার।’’

বাসিন্দাদের দাবি, শহরে রেস্তরাঁ, হোটেল বা ফাস্টফুডের দোকানে ঠিক মাংস দিয়ে রান্না হচ্ছে কি না, তা তো পুরসভারই দেখার কথা। বাজারে বাজে মাংস বিক্রি আটকাতে দুই তরফে সমন্বয়ে কাজ করাটা জরুরি। চম্পসারি থেকে বিধানমার্কেট, মহাবীরস্থান উড়ালপুল থেকে সুভাষপল্লি, গেটবাজার, হায়দারপাড়া বাজার সর্বত্র ছাঁট মাংস বিক্রি চলছে।

ব্যবসায়ীদের একাংশ জানিয়েছেন, ২০-৫০ টাকা কিলো দরে ছাঁট মাংস বিক্রি হয়। মুরগির ক্ষেত্রে গলা, মাথা, পায়ের অংশের সঙ্গে সঙ্গে পেটের ফেলে দেওয়া কিছু অংশও বিক্রি হয়। তেমনই, খাসি বা পাঁঠার ক্ষেত্রে চামড়ার পর্দা, নাড়ি মেশানো হয়। যা থেকে পেটের রোগের সম্ভাবনা থাকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Meat Dumping ground Dead animals
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE