Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

গেছোদাদার কলার বন দফতরের হাতে

শিকার ধরতে কোন দিকে ছুটছে, কখনই নদীতে নামছে, সবই যেন বন দফতরের হাতের মুঠোয়। সৌজন্য, ‘রেডিও কলার’। যা কি না পরানো হয়েছে শিলিগুড়ির উপকণ্ঠের সুকনা বনাঞ্চলের একটি পূর্ণবয়স্ক পুরুষ চিতাবাঘকে।

ফাঁদে: গলায় রেডিও কলার থেকে মিলছে সব খবর। নিজস্ব চিত্র

ফাঁদে: গলায় রেডিও কলার থেকে মিলছে সব খবর। নিজস্ব চিত্র

কিশোর সাহা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:১৯
Share: Save:

ইনিও ‘গেছোদাদা’! এতদিন এরও গতিবিধি ছিল ধরাছোঁয়ার বাইরে। কিন্তু, এখন কোন দিকে কখন তার যাতায়াত, কখন কোন গাছে উঠছে, প্রায় সেই মানচিত্র বানিয়ে ফেলা যাচ্ছে। শিকার ধরতে কোন দিকে ছুটছে, কখনই নদীতে নামছে, সবই যেন বন দফতরের হাতের মুঠোয়। সৌজন্য, ‘রেডিও কলার’। যা কি না পরানো হয়েছে শিলিগুড়ির উপকণ্ঠের সুকনা বনাঞ্চলের একটি পূর্ণবয়স্ক পুরুষ চিতাবাঘকে।

গত শনিবার তা পরানো হয়েছে। সেই থেকে আর মহানন্দা অভয়ারণ্যের ভিতর থেকে বেরোয়নি সে। যেখানে ছাড়া হয়েছিল, তার ৪-৫ কিলোমিটারের মধ্যেই ঘোরাফেরা করছে সে। তাতে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে বন লাগোয়া একাধিক চা বাগানের শ্রমিকদের অনেকেই। কারণ, গত ৩ মাসে মাঝেমধ্যেই চিতাবাঘের হানা চলছিল বন লাগোয়া চা বাগানের শ্রমিক বস্তির গবাদি পশু, হাঁস-মুরগির উপরে।

বন অফিসার-কর্মীদের কয়েকজন জানান, গত শনিবার বনাঞ্চলের কাছে একটি চা বাগানে খাঁচায় ধরা পড়ার পরে ঘুমপাড়ানি গুলিতে অজ্ঞান করে কলার পরানো হয়েছে চিতাবাঘটিকে। বনকর্মীদের একাংশের ধারণা, সেই ঘোর হয়তো এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি ‘গেছোদাদা’। তার উপরে গলায় একটা মোটা বেল্ট পরানোয় হয়তো খানিকটা ঘাবড়েও রয়েছে সে। বন দফতরের এক কর্তা জানান, ঘোর কাটিয়ে উঠতে ৭-১০ দিন লাগতে পারে। উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, ‘‘ওয়াইল্ড লাইফ ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়ার তরফে গবেষণার জন্য প্রথমে ডুয়ার্সের জলদাপাড়ায় একটি চিতাবাঘকে রেডিও কলার পরানো হয়। দ্বিতীয় দফায় মহানন্দা অভয়ারণ্যে একটিকে পরানো হয়েছে। সেটি এখনও জঙ্গলের বাইরে বেরোয়নি।’’ মুখ্য বনপাল জানান, রেডিও কলার পরানোয় একই জন্তু বারবার একই জায়গায় ঘোরাফেরা করছে কি না, সেটা বোঝা যাবে। অনেক সময়ে একটি চিতাবাঘকে ধরে গভীর বনে ছেড়ে দেওয়ার পরে দেখা যায়, ক’দিন পরেই সেখানে ফের উপদ্রব শুরু হয়েছে। কলারের সুবাদে এখন বন দফতর বুঝতে পারবে, একই চিতাবাঘ ফিরে আসছে কি না। শুধু তাই নয়, লোকালয়ে হানা দেওয়ার ‘রুট’ প্রবণতা নিয়েও আরও স্পষ্ট তথ্য মিলতে পার বলে ওই বন কর্তা জানান।

ঘটনাচক্রে, খাঁচাবন্দি আরেকটি চিতাবাঘকে রেডিও কলার পরানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন গবেষকরা। আপাতত বন্দি চিতাবাঘটি দার্জিলিং বনবিভাগের কাছে রয়েছে। আজ, শুক্রবার সেটিকে রেডিও কলার পরানোর কথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Radio Caller Leopard Forest Department
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE