Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

হাতির দাঁতের সঙ্গে ডলারও

সোমবার রাতে সেই আন্তর্জাতিক যোগ আবার সামনে এল। শিলিগুড়ির ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে অভিযানে নেমে হাতির দাঁতের সঙ্গে আমেরিকান ডলার উদ্ধার করলেন বন দফতরের অফিসারেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:৩৪
Share: Save:

সম্প্রতি জলদাপাড়ার জঙ্গলে এক শৃঙ্গ গন্ডারের সিং-এর খোঁজে নেমে একে-৪৭ রাইফেল, কার্তুজ উদ্ধার হয়েছিল। সিআইডির স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের (এসওজি) কয়েকজন অফিসার জানিয়েছিলেন, গত কয়েক বছরে বন্যপ্রাণ শিকার বা দেহাংশের ব্যবসা আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছে গিয়েছে। আধুনিক অস্ত্র তো বটেই বিদেশি টাকায় এ ব্যবসা চলছে। নেপাল, চিন, ভুটানে সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে উত্তরবঙ্গ। টার্গেট—বিভিন্ন জাতীয় উদ্যান, অভয়াণ্যের বনপ্রাণ।

সোমবার রাতে সেই আন্তর্জাতিক যোগ আবার সামনে এল। শিলিগুড়ির ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে অভিযানে নেমে হাতির দাঁতের সঙ্গে আমেরিকান ডলার উদ্ধার করলেন বন দফতরের অফিসারেরা। দুই বাসিন্দাকে গ্রেফতারের পর তাঁদের দাবি, নেপালে হাতির দাঁত পাঠিয়ে বিদেশি মুদ্রা আয় করার চেষ্টা চলছিল।

বন দফতর সূত্রের খবর, খবর এসেছিল নেপালে বন্যপ্রাণীর দেহাংশ পাচারের চেষ্টা চলছে৷ সেই মতো ফাঁদ পেতে দুই পাচারকারীকে ধরে ফেলেছিলেন বন দফতরের কর্তারা৷ কিন্তু তাঁদের কাছ থেকে একটি হাতির দাঁতের টুকরোর পাশাপাশি গাঁজা, নেশার জন্য ব্যবহৃত কাশির ওষুধ, কিছু আমেরিকান ডলার সমেত বিদেশি কয়েন মেলায় রীতিমতো চোখ কপালে ঠেকে যায় বনকর্তাদের৷

তাঁদের অনুমান, বন্যপ্রাণ শুধু নয়, টাকার কারবারেও ধৃতেরা জড়িত থাকতে পারে। হাতির দাঁত বাদ দিয়ে বাকি বিষয়ের তদন্তভার পুলিশের হাতে দেওয়ার কথা ভাবতে শুরু করেছেন বনকর্তারা৷

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত দুই ব্যক্তির নাম জঙ্গ বাহাদূর বিশ্বকর্মা ও জুলফিকর আনসারি৷ দু’জনেরই বাড়ি কালিম্পঙে৷ বন দফতরের বেলাকোবা রেঞ্জের কর্তাদের কাছে খবর আসে সিকিম থেকে হাতির দাঁত সহ বন্যপ্রাণীর দেহাংশ নেপালে পাচারের চেষ্টা হচ্ছে। রেঞ্জ অফিসার সঞ্জয় দত্তের নেতৃত্বে বনকর্তারা শিলিগুড়ির ইন্দিরা গাঁধী ময়দানের সামনে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে অপেক্ষা করেন। ছোট গাড়িতে ছ’জন ছিল। গাড়ি থামিয়ে ধরার সময় ৪ জন দৌড়ে পালায়। জঙ্গ ও জুলফিকর ধরা পড়ে যায়৷

বন দফতরের কর্তারা জানান, এরপর তল্লাশি চালিয়ে তাদের কাছ থেকে দেড় কেজি ওজনের একটি হাতির দাঁত এবং দুই প্যাকেট গাঁজা, কাশি ও ঘুমের ওষুধ সহ বিদেশি মুদ্রা মেলে৷ রেঞ্জ অফিসার সঞ্জয়বাবু জানান, ধৃতদের জেরা করে বাকি পাচারকারীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে৷ কোথা থেকে তারা এই হাতির দাঁত, বিদেশি মুদ্রা পেল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঠিক কত ডলার তাদের কাছে ছিল, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বন দফতরের সঙ্গে সঙ্গে রাজ্য সরকারের নির্দেশ মিললে বন্যপ্রাণ মামলায় সিআইডিও তদন্ত করে থাকে। কয়েকজন অফিসার জানান, নেপালকে ঘিরে বন্যপ্রাণের বড় ব্যবসার রাস্তা তৈরি হয়েছে। এতে উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন গোষ্ঠীর লোকজন রয়েছে। স্থানীয় একাংশ যুবককে টাকা দিয়ে কাজে নামান হচ্ছে। আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র, ডলার এ সব সেখান থেকেই আসছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

elephant teeth US Dollars Forest officials
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE