Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

গ্রিনবেঞ্চের নির্দেশে মহানন্দার দূষণ কমার দাবি

রাজ্যের ৯৭টি নদী থেকে নিয়মিত জলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা চালায় পর্ষদ। প্রতি মাসে প্রকাশিত হয় রিপোর্ট। গত নভেম্বরের প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে মহানন্দায় ‘বিষ’ কলির্ফমের উপস্থিতি স্বাভাবিক।

দূষিত: শিলিগুড়ির প্রাণভোমরা মহানন্দা। শহর ও শহর লাগোয়া বাসিন্দাদের জীবন, জীবিকার সঙ্গে যুক্ত এই নদী নিয়ে রয়েছে চিন্তা। নিজস্ব চিত্র

দূষিত: শিলিগুড়ির প্রাণভোমরা মহানন্দা। শহর ও শহর লাগোয়া বাসিন্দাদের জীবন, জীবিকার সঙ্গে যুক্ত এই নদী নিয়ে রয়েছে চিন্তা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৪০
Share: Save:

গ্রিনবেঞ্চের কড়া নির্দেশের ফলেই বিষের পরিমাণ কিছুটা কমেছে মহানন্দায়। এমনই মত সংশ্লিষ্ট মহলের। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ থেকে প্রকাশিত হওয়া সর্বশেষ রিপোর্টে মহানন্দার স্বাস্থ্য উদ্ধারের কথা জানানো হয়েছে।

রাজ্যের ৯৭টি নদী থেকে নিয়মিত জলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা চালায় পর্ষদ। প্রতি মাসে প্রকাশিত হয় রিপোর্ট। গত নভেম্বরের প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে মহানন্দায় ‘বিষ’ কলির্ফমের উপস্থিতি স্বাভাবিক। গত বছর মহানন্দার জলে কলিফর্মের মাত্রা ছিল অস্বাভাবিক রকমের বেশি। ১০০ মিলিলিটারে ১ লক্ষেরও বেশি ইউনিট পেয়েছিল পর্ষদ। নদীতে দূষণ মাপার আরও একটি মাপকাঠি জলে মিশে থাকা নানা কঠিন পদার্থ তথা বর্জ্য। যাতেও এ বছর মহানন্দার রিপোর্ট সন্তোষজনক। গত বছর জলের নমুনায় ২১৮ ইউনিট মিলেছিল, এ বছর তার মাত্রা ৯৮।

এই দুই মাপকাঠিতেই বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছেন, নদীর জলের হাল তুলনামূলক ভাল। মহানন্দা সেতু লাগোয়া এলাকা থেকে নেওয়া নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে মিলেছে এই তথ্য।

গ্রিন বেঞ্চের নির্দেশেই জলের এই পরিবর্তন এসেছে বলে দাবি। মহানন্দা দূষণ নিয়ে গ্রিন বেঞ্চে মামলা দায়ের করেছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। সেই মামলায় প্রশাসন-পুর কর্তৃপক্ষের থেকে হলফনামা চেয়েছিল বেঞ্চ। অর্ন্তবর্তী নির্দেশে নদীবুক থেকে খাটাল উচ্ছেদের নির্দেশ দেওয়া হয়। পুজোর আগে এক নির্দেশে গ্রিনবেঞ্চ জানায়, ভাসান-পুজোর সময়ে নদীতে কোনও কাঠামো নির্মাণ করা যাবে না। কঠোর ভাবে নির্দেশ পালন করতে জেলা প্রশাসন এবং পুলিশকে জানায় বেঞ্চ। তাতেই নড়েচড়ে বসে নদীতে নজরদারি শুরু করে পুলিশ-প্রশাসন। জলে দূষণের মাত্রা এ কারণেই কমেছে বলে দাবি।

পরিবেশকর্মী সুভাষবাবুর কথায়, ‘‘প্রতিবার নদী রক্ষায় আদালতকে নির্দেশ দিতে হয়। কিম্তু প্রশাসন একটু সজাগ থাকলেই তো নদীতে দূষণ কমানো যায়।’’

বছর দেড়েক আগেই মহানন্দার জলের নমুনায় মাত্রাতিরিক্ত দূষণের খোঁজ পেয়ে পুরসভাকে জানানো হয়েছিল। নদীতে বিষের মাত্রা এতটাই বেড়ে যায় যে পান করা তো দূরের কথা হাতে-পায়ে জল ছোঁয়ালেই চর্মরোগ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়। রিপোর্টে মহানন্দার জলকে ‘কালো’ এবং ‘মাত্রাতিরিক্ত ঘোলা’ বলেও উল্লেখ করা হয়।

১৪ নভেম্বর প্রকাশিত পর্ষদের রিপোর্টে মহানন্দার জলের বর্ণনায় লেখা হয়েছে ‘হালকা খয়েরি’। এই পরিবর্তন কতদিন বজায় থাকে তাই এখন প্রশ্ন পরিবেশপ্রেমীদের। মহানন্দা সেতু এলাকায় নজরদারি বেশি ছিল বলে সেখানে দূষণের মাত্রা কমেছে বলে দাবি। নদীর অন্যান্য অংশের জল হাল আগের মতোই বলে দাবি পরিবেশ কর্মীদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE