Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বিয়ের ভোরে মৃত্যু বরের

বিয়ের দিন ভোরে হবু বরের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের খবরে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছিল দুই পরিবারেই। বরের মৃত্যুর কারণ জানার চেষ্টার সঙ্গেই চলে  পাত্রীকে লগ্নভ্রষ্টা হওয়া থেকে বাঁচানোর উপায়ের খোঁজ। শেষে এক যুবক নিজেই এগিয়ে এসে বিয়েতে রাজি হন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৫৯
Share: Save:

বিয়ের দিন ভোরে হবু বরের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের খবরে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছিল দুই পরিবারেই। বরের মৃত্যুর কারণ জানার চেষ্টার সঙ্গেই চলে পাত্রীকে লগ্নভ্রষ্টা হওয়া থেকে বাঁচানোর উপায়ের খোঁজ। শেষে এক যুবক নিজেই এগিয়ে এসে বিয়েতে রাজি হন। বৃহস্পতিবার রাতে আশিঘর এলাকার পাত্রীর বাড়িতে তৈরি ছাদনাতলাতেই বিয়ে হল তাঁদের।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক মাসের দেখাশোনা, কথাবার্তার পর আশিঘরের ওই পাত্রী সঙ্গে ডাবগ্রামের জয়দেব ঘোষের (৪১) বিয়ে ঠিক হয়। এ দিনই রাতে ছিল বিয়ের লগ্ন। বুধবার রাতে বিয়ে বাড়ির হইহল্লা, খাওয়াদাওয়ার পর সবাই শুয়ে পড়েন। ভোরে দধিমঙ্গলের জন্য উঠে বিষয়টি নজরে আসে জয়দেবের মা জ্যোৎস্নাদেবীর। তাঁর চিৎকারে প্রতিবেশী ও আত্মীয়রা ছুটে আসেন।

পুলিশ জানিয়েছে, বারান্দায় টিনের চালে একটি হুকের থেকে ঝুলছিল দেহটি। তবে কোনও সুইসাইড নোট মেলেনি। বিয়েতে রাজি হওয়ার পরেও বিয়ের দিন জয়দেব এমন কাজ কেন করলেন তা পরিবারের লোকেদের কাছেও পরিষ্কার নয়। বাড়ির সামনে একটি স্টেশনারি দোকান ছিল তাঁর। শিলিগুড়ির ডিসি (পূর্ব) গৌরব লাল জানান, মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্ত হচ্ছে। দেহের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে।

জয়দেবের ভাই টোটন ঘোষ বলেন, ‘‘অনেকদিন ধরেই দাদার বিয়ের কথাবার্তা চলছিল। তিনমাস আগে দেখাশুনোর পর আশিঘরে বিয়ে ঠিক হয়। দাদাকে দেখে অস্বাভাবিক কিছুই মনে হয়নি। বিয়ের বাজারহাট নিজেই করছিল। রাতে বলেছিল, সকালে অনেক কাজ করতে হবে, তাড়াতাড়ি উঠে পড়িস। কোনও কিছুই বুঝতে পারছি না।’’

পাত্রের বাড়ি থেকে হবু পাত্রীর বাড়িতে টেলিফোন যেতেই কান্নার রোল পড়ে। পাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। অধিবাসের আচার পালন বন্ধ হয়ে যায়। উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন পাত্রীর মা কল্পনা দাস। উদ্বেগ ছড়ায় আত্মীয়, বন্ধু ও প্রতিবেশীদের মধ্যেও। দুপুর নাগাদ স্থানীয় পরিবহণ ব্যবসায়ী এক যুবক এবং তার জামাইবাবু এগিয়ে আসেন। ওই যুবক বিয়েতে রাজি আছেন বলে জানান। নতুন করে দুই পরিবারের মধ্যে আলোচনার পর বিয়ে চূড়ান্ত হয়। নতুন পাত্র বলেন, ‘‘বিয়ের জন্য পাত্রী খুঁজছিলাম। এমন বিপদে একটি পরিবারের পাশে থাকতে পারাটা দায়িত্ব মনে হয়েছে।’’ সুস্থ হন পাত্রীও। রাতে নিয়ম আচার মেনেই দুই হাত এক হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Groom Marriage Suicide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE