Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পাহাড় জুড়েই চলল প্রবল শিলাবৃষ্টি

এ দিন সকাল থেকে তাপমাত্রার পারদ অনেকটা নিচেই ছিল। বেলা বাড়তেই কনকনে হাওয়া শুরু হয়। একসময় আকাশ ভেঙে নেমে আসে প্রবল শিলাবৃষ্টি।

শিলাবৃষ্টি: কালিম্পং শহরে বৃষ্টির সঙ্গে শিল। নিজস্ব চিত্র

শিলাবৃষ্টি: কালিম্পং শহরে বৃষ্টির সঙ্গে শিল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:০৬
Share: Save:

এগারো বছর আগে ভালেন্টাইনস ডে-তেই গোটা পাহাড় সাদা বরফের চাদরে মুড়ে গিয়েছিল। সকাল থেকে পাহাড়াবাসী তো বটেই সমতলের বাসিন্দারাও তুষারপাতকে উপভোগ করতে পৌঁছে গিয়েছিলেন পাহাড়ের আনাচে কানাচে। ২০০৭ সালের পর ২০১৮। তুষারপাত না হলেও বুধবার বিকালে প্রবল শিলাবৃষ্টিতে সাদা হয়ে গেল পাহাড়। কালিম্পং, দার্জিলিঙের সঙ্গে লাগায়ো দক্ষিণ সিকিমের রাবাংলা-সহ বিভিন্ন প্রান্তে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। সিকিমের লাচেনে বিকেলের পর বরফও পড়েছে।

এ দিন সকাল থেকে তাপমাত্রার পারদ অনেকটা নিচেই ছিল। বেলা বাড়তেই কনকনে হাওয়া শুরু হয়। একসময় আকাশ ভেঙে নেমে আসে প্রবল শিলাবৃষ্টি। এখনও বরফ না পড়ায় দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে অনেকেই রাস্তায় নেমে, দোকান-বাড়ির সামনে বার হয়ে শিল কুড়োতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। অল্পবয়সীদের মধ্যে চলে শিল ছোড়াছুড়িও। আধঘণ্টা পর ঝড়বৃষ্টি কমলে পাহাড়ের তাপমাত্রা আরও খানিকাটা নেমে যায়।

দার্জিলিঙের তাপমাত্র ৫/৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে। তাপমাত্রা নামলেও মরসুমে পাহাড়ে তুষারপাতের সম্ভাবনা এখনও দেখছেন না আওয়াবিদরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, গত এক সপ্তাহ ধরে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার দাপটে আবহাওয়ার কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। দিনের বেলায় হিমালয়ের পাদদেশের এলাকায় তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। রাতের দিকে তা কমছে। আগামী কয়েকদিন পরিস্থিতি এমনই থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা জানান, বাতাসে একটা প্রবল অস্থিরতা চলছিল। তেমনি প্রচুর পরিমাণ আদ্রতা ছিল। দিনের বেলায় তাপমাত্রা অল্প অল্প করে বাড়তে থাকায় অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়। শেষে পাহাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। গোপীনাথবাবুর কথায়, ‘‘এটা পুরোটাই একটি বিক্ষিপ্ত বিষয়। তাপমাত্রার কিছুটা হেরফের হলেও তুষারপাতের সম্ভাবনা এখনও দেখা যাচ্ছে না।’’

২০০৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি এখনও মনে দাগ কেটে রয়েছে অনেক পাহাড়বাসীর। তেমনই, ২০০৮ সালের ২৬ জানুয়ারি। সেবার তুষারপাতে ঢেকে যায় দার্জিলিং শহর, ঘুমের মত পাহাড়ি জনপদ। দার্জিলিঙের ইতিহাসে যা অত্যন্ত বিরল ঘটনা বলেই থেকে গিয়েছে। এর পরে শেষবার ২০১২ সাল টাইগারহিল ঢেকেছিল সাদা চাদরে। আবহাওয়াবিদেরা জানিয়েছেন, প্রতিবছরই পাহাড়ের উপরের দিকের অংশে বরফ পড়ে। সিকিমে তো বটেই দার্জিলিঙের সান্দাকফু, ফালুট ও মানেভঞ্জনে নিয়মিত বরফ পড়ে। অনেক সময়ই বাসিন্দারা তুষারপাতের আনন্দকে উপভোগ করতে উঁচু এলাকাতেও পৌঁছান।

গত কয়েকদিনের তুলনায় শিলিগুড়ির তাপমাত্রাও কিছুটা কম ছিল। সকালে কুয়াশায় ছেয়ে ছিল বিভিন্ন অঞ্চল। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রির আশেপাশে ঘুরেছে। সর্বনিম্ন ছিল ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের। কোথাও বৃষ্টি হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hailstorm Siliguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE