ফাইল চিত্র।
সাতজন ছিলেন সেলে। শীতের রাতে বন্দিদের সকলেই চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়েছিলেন বলে দাবি। ভোরে রাউন্ড দিতে এক নিরাপত্তারক্ষী দেখেন সেলের এক কোণে জানলায় জামার সঙ্গে দেহ ঝুলছে এক বন্দির। তিনি চিৎকার করতেই বাকিরা জেগে ওঠেন। বুধবার ভোরে শিলিগুড়ির বিশেষ সংশোধনাগারের ঘটনা।
বাকি বন্দিদের অন্য সেলে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। রাতে কেউ কিছু দেখেননি বলে প্রাথমিক তদন্তে দাবি করেছেন। শিলিগুড়ি থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে। কর্তব্যে অবেহলার অভিযোগে দু’জন কারারক্ষীকে শোকজ করে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন কারা দফতরের অফিসারেরা।
সংশোধনাগার ও পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম ভুষা বিরজা (৬৫)। শিলিগুড়ির মহকুমার খড়িবাড়ির গাজিজোতে তাঁর বাড়ি। সোমবার বেআইনি মদের ঠেক চালানোর অভিযোগে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। মঙ্গলবার শিলিগুড়ি আদালতে তোলার পরে বিচারক তাঁর জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। বিকালের পর ভুষাকে শিলিগুড়ি সংশোধনাগারে নিয়ে আসা হয়। শিলিগুড়ি বিশেষ সংশোধনাগারের সুপার কুপাময় নন্দী বলেন, ‘‘বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আপাতত দু’জনকে শোকজ করা হয়েছে। ওই বিচারাধীন বন্দির বয়সও বেশি ছিল। চুপচাপই ছিলেন। কোনও অসুবিধা বা শারীরিক সমস্যার কথা বলেননি।’’
এ দিন দুপুরে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দেহ নামিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। সংশোধনাগারে অবশ্য মৃতের পরিবারের কেউ আসেননি। পরে বিকেলে খড়িবাড়ি থেকে কয়েকজন মেডিক্যাল কলেজে যান। রাত পর্যন্ত সংশোধনাগার বা খড়িবাড়ি থানায় পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। মৃতের এক আত্মীয় জানান, বয়সের জন্য ভুষা অসুস্থ থাকতেন। মঙ্গলবার রাতে খাওয়ার সময়েও ভুষা বিরজা চুপচাপ ছিলেন বলে বাকি বন্দিরা কারা দফতরের অফিসারদের জানিয়েছেন।
শিলিগুড়ি সংশোধনাগারে থাকার কথা ২০০ জন বন্দির। যদিও এখন রয়েছেন ৩৯০ জন। পাহাড়ের গোলমালের পরে ওই সংখ্যা ৪৫০ পার হয়ে গিয়েছিল। সমস্যা মেটানোর জন্য জেলে নতুন সেল তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ডরমেটরি সেল তারই একটি। কারা দফতরের কয়েকজন অফিসার জানান, ২০০৬ সালের নভেম্বরে নেপালের বাসিন্দা সুর্য লিম্বুর ঝুলন্ত দেহ একটি সেল থেকে উদ্ধার হয়েছিল। তার দেড় বছর আগে ফুলমণি রাই নামের আরেক বন্দির ঝুলন্ত দেহ শিলিগুড়ি সংশোধনাগারের সেল থেকে উদ্ধার হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy