ভরা: রাক্ষুসে মাগুর। নিজস্ব চিত্র
বৈজ্ঞানিক নাম ক্ল্যারিয়াস গ্যারিপিনাস। হাইব্রিড মাগুর বা রাক্ষুসে মাগুর হিসেবেই যার পরিচিতি। মত্স্য দফতর জানাচ্ছে, রাজ্যে এই হাইব্রিড মাগুর চাষ নিষিদ্ধ। কেননা এই মাছ যে পুকুরে থাকে, সেখানকার অন্য সমস্ত মাছ খেয়ে ফেলে। কিন্তু মত্স্য দফতরের নিষেধাজ্ঞাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে কালিয়াচকের সুজাপুর ও বামনগ্রাম-মোসিমপুর পঞ্চায়েতের কয়েকশো পুকুরে এর চাষ চলছে রমরমিয়ে।
সেখান থেকে লরি বোঝাই হয়ে প্রায় প্রতিদিনই হাড়িতে করে কুইন্টাল কুইন্টাল মাছ চলে যাচ্ছে বিহার হয়ে নেপাল, ভূটান ও অন্যত্র। এদিকে এই মাছ চাষের জেরে এলাকায় পরিবেশ দূষণের অভিযোগ উঠেছে। ছেয়ে গিয়েছে চর্মরোগ। ঠুঁটো জগন্নাথ মত্স্য দফতর, প্রশাসনও।
কারবারিদের সূত্রেই জানা গিয়েছে, ২০ থেকে ৩০ গ্রামের পোনা ৩ থেকে ৫ টাকায় নিয়ে আসা হচ্ছে বসিরহাট, কুলতলি, জয়নগর থেকে। তিন মাস পুকুরে রাখার পরেই সেই মাছ বেড়ে হচ্ছে এক থেকে দেড় কেজি ওজনের এবং প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা দরে। মাছের খাবার হিসেবে দেওয়া হচ্ছে বাজারে বিক্রি হওয়া মুরগি ও খাসির নাড়ি-ভুড়ি, হোটেলের উচ্ছিষ্ট ও বাসি-পচা খাবার। এক বিঘার পুকুরে তিন মাসে লাভ হচ্ছে অন্তত ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা।
জানা গিয়েছে, পুলিশ এলাকায় বেআইনি পোস্ত চাষ বন্ধ করে দিয়েছে। বিকল্প হিসেবে সেই কারবারিদেরই একাংশ এখন গ্রামের কয়েকশো পুকুরে এই নিষিদ্ধ মাছ চাষ করছে। ওই কারবারিদের ভয়ে এলাকার বাসিন্দারা কোনও উচ্চবাচ্য করতে সাহস পাচ্ছেন না।
এক পঞ্চায়েত সদস্য তো বলেই ফেললেন, তিনি এ নিয়ে যদি প্রতিবাদ করেন তবে তাঁকে মেরে হাত-পা ভেঙে হাসপাতালে ভর্তি করে দেবে। এ দিকে, এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুকুরে নানা অস্বাস্থ্যকর খাবার দেওয়ায় এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। অধিকাংশ বাসিন্দা নানা চর্মরোগে ভুগছেন। মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রেও খবর, ওই দুই এলাকা থেকেই প্রতিদিন চর্মরোগে আক্রান্ত অসংখ্য রোগী আউটডোরে চিকিত্সার জন্য আসছেন। জেলা মত্স্য দফতরের সহকারী অধিকর্তা পার্থপ্রতিম দাস বলেন, ওই নিষিদ্ধ মাছ চাষ বন্ধ এলাকায় প্রচার চলছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক পদম সুনম বলেন, ‘‘জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy