Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ফেসবুকে কটু মন্তব্যে জেরা

বালুরঘাট শহরের আর্য সমিতি এলাকার বাসিন্দা প্রাথমিক শিক্ষক কৌশিকরঞ্জন খাঁ এবং চকভৃগু এলাকার চিত্রশিল্পী ব্রতীন সরকারের বিরুদ্ধে ফেসবুকে অশালীন ও করুচিপূর্ণ মন্তব্য এবং উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টার অভিযোগে পুলিশ আইটি অ্যাক্ট সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করেছে বলে অভিযোগ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৭ ০২:২৫
Share: Save:

পুজোর দিনে বালুরঘাট শহরে বাইক ও গাড়ি চলাচলের উপর প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ করে পুলিশি জেরার মুখে পড়লেন এক শিক্ষক এবং এক চিত্রশিল্পী। বৃহস্পতিবার সমন পাঠিয়ে বালুরঘাট থানায় ডেকে পাঠিয়ে তাদের দীর্ঘ ক্ষণ জেরা করা হয় বলে অভিযোগ।

বালুরঘাট শহরের আর্য সমিতি এলাকার বাসিন্দা প্রাথমিক শিক্ষক কৌশিকরঞ্জন খাঁ এবং চকভৃগু এলাকার চিত্রশিল্পী ব্রতীন সরকারের বিরুদ্ধে ফেসবুকে অশালীন ও করুচিপূর্ণ মন্তব্য এবং উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টার অভিযোগে পুলিশ আইটি অ্যাক্ট সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করেছে বলে অভিযোগ। তার মধ্যে জামিন অযোগ্য ধারাও রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে শহরের একাংশ মহলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

যানজট ও দূষণমুক্ত পরিবেশে প্রতিমা দেখার ব্যবস্থা করতে এ বারে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট এবং গঙ্গারামপুর শহরে ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত বিকেল ৪টে থেকে পর দিন ভোর ৪টা পর্যন্ত বাইক ও গাড়ি চলাচলের উপর সম্পূর্ণভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল জেলা পুলিশ প্রশাসন। তার বদলে টোটোয় চড়ে মণ্ডপের প্রতিমা দেখতে বার্তা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পুলিশের ওই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে সরব হন বালুরঘাটের ওই শিক্ষক কৌশিকবাবু। ফেসবুকে তীব্র সমালোচনা করে নাতিদীর্ঘ একটি মন্তব্য পোস্ট করেন তিনি। তাঁর ওই পোস্টটিকে শেয়ার করেন চিত্রশিল্পী ব্রতীন। এরপরই তা ভাইরাল হয়ে পড়ে। পুলিশের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নানা ভাবে সমালোচনামূলক পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তে থাকে।

বৃহস্পতিবার থানা থেকে সমন পাঠিয়ে প্রথমে কৌশিকবাবুকে ডেকে দীর্ঘ সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে অভিযোগ। এরপরই ডেকে পাঠানো হয় ব্রতীনবাবুকে। এ দিন তাঁদের বক্তব্য, তাঁরা তাদের মত প্রকাশ করছেন মাত্র। তাই নিয়ে কারও খারাপ মন্তব্যের দায় তাদের ওপর বর্তায় না। অথচ পুলিশ তাদের থানায় ডেকে জেরা করে তাঁদের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছে বলে তাদের দাবি।

প্রশ্ন উঠেছে, ফেসবুকে কেউ কোনও মন্তব্য করলে, কেন তাঁকে পুলিশি জেরার মুখে পড়তে হবে।

জেলা পুলিশ কর্তৃপক্ষের দাবি, কোনও সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিরূপ মত প্রকাশ করে সমালোচনায় কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু সমালোচনার নামে সোস্যাল মিডিয়ায় কুকুরের আচরণের সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকার তুলনা করে অশালীন ও কুরুচিকর মন্তব্য করা হয়েছে। কৌশিক ও ব্রতীনের ওই পোস্টে উৎসাহিত হয়ে আরও কয়েক জন পুলিশ প্রশাসনকে গালাগাল করে বলেও অভিযোগ।

তাই ফেসবুকে পোস্ট করে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে বলে জেলা পুলিশ কর্তৃপক্ষের দাবি। কৌশিক ও ব্রতীনদের পাশাপাশি ফেসবুকে কু-মন্তব্য করে শেয়ার করা অন্যান্য ব্যক্তিদের খোঁজেও পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছঠে। তদন্তের স্বার্থে ফের কৌশিকবাবুদের থানায় ডাকা হতে পারে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

বালুরঘাট Balurghat Facebook
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE