Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

মমতার নির্দেশেও জমি মেলেনি কাওয়াখালিতে

সব ঠিক থাকলে আজ, শুক্রবার উত্তরকন্যায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গের সচিবালয়ের অফিসারদের কাছে তা জমা দেবে ওই সংগঠন। সে খবর পৌঁছেছে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তীর কাছেও।

কিশোর সাহা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৩৩
Share: Save:

সিঙ্গুরে কৃষকদের জমি ফেরানোর কাজ শেষ। অথচ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পর ৬ বছর কেটে গেলেও সাড়ে ৩৩ বিঘা জমি এখনও ফেরত পাননি শিলিগুড়ির কাওয়াখালি উপনগরী প্রকল্পের ৫২টি অনিচ্ছুক পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, সরকারি লাল ফিতের ফাঁসে থমকে গিয়েছে জমি ফেরতের কাজ। উদ্বেগে-হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন পরিবারগুলি। ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ৪টি পরিবারের কর্তার। তাই মুখ্যমন্ত্রীর আসন্ন শিলিগুড়ি সফরের সময় বিষয়টির নিষ্পত্তি করতে আসরে নেমেছে কাওয়াখালি থিকনিকাটা ল্যান্ডওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন।

বৃহস্পতিবার সংগঠনের সভাপতি মণিমোহন বিশ্বাস বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী তাড়াতাড়ি জমি ফেরাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। আমরা ৫২টি পরিবার ৯৯ বছরের লিজের জন্য হলফনামাও দিয়েছি। কখনও শুনি ফাইল রয়েছে ভূমি দফতরে, কখনও বলা হয় নগরোন্নয়ন দফতরে। কখনও বলা হয় ফাইল রয়েছে নবান্নে। ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছেন জমি দিতে অনিচ্ছুক ৪ টি পরিবারের কর্তা। মুখ্যমন্ত্রীকে এই দুর্দশার বিষয়টি জানানো হবে।’’

সব ঠিক থাকলে আজ, শুক্রবার উত্তরকন্যায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গের সচিবালয়ের অফিসারদের কাছে তা জমা দেবে ওই সংগঠন। সে খবর পৌঁছেছে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তীর কাছেও। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘দুশ্চিন্তার কিছু নেই। সব দফতরের সবুজ সংকেত মেলার পরে ফাইল নগরোন্নয়ন দফতরে গিয়েছে। সেখান থেকে নির্দেশ পেলেই পদক্ষেপ করা হবে।’’

অবশ্য জমির কাগজ হাতে না পাওয়া পর্যন্ত স্বস্তি মিলবে না বলে জানিয়েছেন অনিচ্ছুক জমিদাতারা। কারণ, ২০০৪ সালে ওই প্রকল্পের জন্য কাওয়াখালিতে ৩০২ একর জমি অধিগ্রহণের পর থেকে তাঁরা বহু আশ্বাস শুনেছেন। গোড়ায় তৎকালীন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য আশ্বস্ত করেছিলেন, অনিচ্ছুকদের দাবি মেনে নেওয়া হবে। কিন্তু সেই আশ্বাস পূরণ না হওয়ায় আন্দোলনে নামেন অনিচ্ছুকরা। তাতে সামিল হন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, গৌতম দেব, দীপা দাশমুন্সিও। তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে অনিচ্ছুক জমিদাতাদের জমি ফেরানোর নির্দেশ দেন মমতা। সেই মতো এসজেডিএর তৎকালীন চেয়ারম্যান গৌতম দেব প্রক্রিয়া শুরু করেন। ৫ বছরের মেয়াদ কাটার পরেও অনিচ্ছুকরা জমি না পেয়ে গত মার্চ মাসে উত্তরবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সামনে দাবি পেশের সুযোগ পান। সেই সময়ে মুখ্যমন্ত্রী দ্রুত জমি ফেরানোর নির্দেশ দেন।

তা সত্ত্বেও কাজের কাজ হচ্ছে না কেন, সেটাই প্রশ্ন এই পরিবারগুলির। সরকারি সূত্রের খবর, এসজেডিএ জমি ফেরানোর ফাইল প্রথমে ভূমি দফতরে পাঠিয়েছিল। সেখানেই প্রায় ৪ বছর ফাইল পড়ে ছিল বলে অভিযোগ অনিচ্ছুকদের। যদিও ভূমি দফতরের একটি সূত্রের দাবি, ফাইলটি মাঝে নবান্নে পর্যালোচনার জন্য গিয়ে আটকে গিয়েছিল। এই মুহূর্তে ফাইল কোথায় সেই প্রশ্নে এসজেডিএর চেয়ারম্যান সৌরভ বলেন, ‘‘ভূমি সচিবের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। কাওয়াখালির জমি ফেরানো সংক্রান্ত ফাইল নগরোন্নয়ন দফতরে গিয়েছে। সেখান থেকে নির্দেশ আসার সঙ্গে সঙ্গে জমি ফেরানো শুরু হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE