লাইনের কিছু অংশই গায়েব। নিজস্ব চিত্র
রেললাইন থেকে উধাও প্রায় এক ফুট লোহার পাত। বড় পাতের একেবারে শেষ ওই এক ফুট লোহার লাইনের কোনও খোঁজও এলাকায় মেলেনি। তাই এই ঘটনা অন্তর্ঘাত, না দুর্ঘটনা তা নিয়ে সংশয় কাটেনি।
ওই লাইনের উপর দিয়েই কয়েক মিনিট বাদে পরপর যাওয়ার কথা ছিল রাধিকাপুর সহ তিনটি এক্সপ্রেস ট্রেনের। তেমন হলে বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা ছিল। কিন্তু রেলকর্মীদের তত্পরতায় দুর্ঘটনার হাত থেকে একাধিক এক্সপ্রেস ট্রেন রক্ষা পেলেও ওই ঘটনাকে ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের সামসি স্টেশনে রবিবার ভোরের ঘটনা। বিষয়টি অন্তর্ঘাত নাকি অন্য কিছু তা নিয়ে রেলের অন্দরেই জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কেননা তন্নতন্ন করে খুঁজেও দুপুর পর্যন্ত রেল লাইনের ভাঙা টুকরোর হদিস মেলেনি। ফলে অন্তর্ঘাতের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না রেলকর্মীদের একাংশ।
ঘটনার জেরে ভোর পাঁচটা থেকে সাড়ে নটা পর্যন্ত রেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। সামসি, কুমারগঞ্জ স্টেশনে একাধিক ট্রেন দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। পরে লাইন মেরামত করার পর সাড়ে ন’টা থেকে রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়।
দুপুরে সামসিতে নিজেই ঘটনার তদন্তে আসেন উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহারের ডিআরএম উমাশঙ্কর সিংহ যাদব। তিনি বলেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে রেলকর্মীরা সজাগ ছিলেন বলে বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ভোর পাঁচটায় সামসি রেলগেটের অদূরে বিষয়টি নজরে আসে রেলকর্মীদের। তাঁরা দেখেন যে এনজেপিগামী আপ লাইনে প্রায় এক ফুট লাইন উধাও।
সঙ্গে সঙ্গে স্টেশন ম্যানেজারকে বিষয়টি জানানো হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় ট্রেন চলাচল। সামসিতে রাধিকাপুর, হাটেবাজারে এক্সপ্রেস ও কুমারগঞ্জে পদাতিক এক্সপ্রেসকে আটকে দেওয়া হয়। তড়িঘড়ি রেলের ইঞ্জিনিয়াররা এসে লাইন সংস্কার করার কাজ শুরু করেন।
সামসির স্টেশন ম্যানেজার বিমলেন্দু রায় জানান, এটা নাশকতা নয় বলেই মনে হচ্ছে। আবহাওয়া পরিবর্তন বা প্রচণ্ড চাপে এমনটা হতে পারে বলে ইঞ্জিনিয়াররা জানিয়েছেন।
এ দিন ভোরে বিষয়টি নজরে আসে ট্র্যাকম্যান বিমল ঘোষ সহ দুই রেলকর্মীর। শনিবার রাত দশটা থেকে এদিন ভোর পর্যন্ত লাইন পরিদর্শনের দায়িত্বে ছিলেন তাঁরা। রাতে ডাউন লাইন দেখে মালাহার থেকে আপ লাইন দিয়ে ফেরার সময় বিষয়টি তাদের নজরে আসে।
বিমলবাবু বলেন, ‘‘আপ লাইন দিয়ে একটি মালগাড়ি যাচ্ছিল। তখন বিকট শব্দ শুনতে পাই। তারপরেই লাইন ধরে চলতে গিয়ে দেখি, ফুটখানেক লাইন উধাও।’’ যদিও ভেঙে পড়া ওই পাতের সন্ধান না মেলায় নাশকতার সম্ভবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না রেলকর্মীদের একাংশ। চাপে ভাঙলে অত ভোরে কে ওই পাত নিয়ে যাবেন, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy