অকেজো: স্টেশনে স্ক্যানার যন্ত্র এমনিই দাঁড়িয়ে। নিজস্ব চিত্র
ছ’মাস ধরে বিকল স্টেশনে ঢোকার মুখে থাকা তিনটি ‘লাগেজ স্ক্যানার’। পার্কিং লটে নজরদারি করার ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ছবি এতই অস্পষ্ট যে কিছুই বোঝা যায় না।
উত্তরবঙ্গের ব্যস্ততম নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) স্টেশনের নিরাপত্তা ব্যবস্থার চিত্র এমনই। প্রজাতন্ত্র দিবস এগিয়ে আসায় এখন রোজই প্রশিক্ষিত কুকুর দিয়ে তল্লাশি চলছে। যদিও, স্টেশনে দৈনন্দিন নিরাপত্তার হাল ‘ফস্কা গেরো’ বলেই মনে করছেন রেল কর্তাদের একাংশের।
স্টেশনের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে স্ক্যানার বসানো হয়েছিল উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই স্টেশনে ঢোকার তিনটি পথেই। আরপিএফের তরফেই সেগুলি বসানো হয়।
স্বয়ংক্রিয় বেল্টে ব্যাগ বসিয়ে দিলে স্ক্যানারের ভিতরে ঢুকে অন্য প্রান্ত দিয়ে বেরিয়ে আসত। ব্যাগের ভিতর যা যা রয়েছে সবই ফুটে উঠত স্ক্যানারে সঙ্গে থাকা মনিটরে। বিস্ফোরক থেকে মাদক অথবা যে কোনও নাশকতার সরঞ্জাম লুকিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কিনা তা পরিষ্কার দেখা যেত। স্ক্যানারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতেন নিরাপত্তা কর্মীরা।
তাঁরাই প্রত্যেক যাত্রীকে ব্যাগ পরীক্ষা করাতে বাধ্য করাতেন। মঙ্গলবার দুপুরে গিয়ে দেখা গেল স্ক্যানারের সামনে আরপিএফ এবং সিভিক ভলান্টিয়ররা দাঁড়িয়ে রয়েছেন, কিন্তু যন্ত্রটি অচল।
গত বছরের জুন মাসে পরপর তিনটি যন্ত্রই বিগড়ে যায়। সে সময়ে আরপিএফের তরফে জানানো হয়েছিল কিছুদিনের মধ্যেই দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার কর্মীরা এসে ঠিক করে দেবেন। তিন মাসেই কর্মীদের কারও দেখা মেলেনি। ইতিমধ্যে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ওই সংস্থার চুক্তির মেয়াদ ফুরিয়ে যায়।
আরপিএফের তরফে দাবি করা হয়, নতুন সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ করা হচ্ছে। তার পরে চার মাস পার হয়ে গেলেও পদক্ষেপ হয়নি। লাগেজ স্ক্যানার মেরামত করতে ছ’মাস সময় লাগে শুনে বিস্মিত আরপিএফের কর্মী-অফিসারেরাই। উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার বিভাগের আরপিএফের নিরাপত্তা কমিশনার অরুণ চৌরাসিয়া বলেন, ‘‘প্রক্রিয়াটি যতটা তাড়াতাড়ি শেষ করা সম্ভব তা দেখা হচ্ছে।’’ নিরাপত্তার এমন হালের নমুনা রয়েছে সিসি ক্যামেরাতেও। যে কোনও স্টেশনের পার্কিং এলাকাকে নিপাত্তার দিক থেকে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বলে ধরা হয়। কেউ বাইক, গাড়ি রেখে কোথায় যাচ্ছেন তার ওপর সর্বক্ষণ নজর রাখতে শক্তিশালী স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরা লাগানো হয়েছিল।
সেই ক্যামেরার ছবি ঘোলা হয়ে রয়েছে মাস দু’য়েক ধরে। ওই ক্যামেরার মনিটরে ওঠা ছবি দেখে কিছুই বোঝা যায় না বলে দাবি। বাইশটি ক্যামেরার মধ্যে ৪টি বিকল হয়ে রয়েছে। প্ল্যাটফর্মে একাংশের ছবি ক্যামেরাতে ধরা পড়ে না। সব জানার পরে পরিবর্তন হয়নি ক্যামেরায়।
এক রেলকর্তা তাই বলছেন, ‘‘হাতে আধুনিক বন্দুক নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেই নাশকতা ঠেকানো যায় না। এটা যত তাড়াতাড়ি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বুঝবেন, ততই ভাল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy