Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

পরীক্ষার পর উত্ত্যক্ত ছাত্রী গেল থানায়

হরিশ্চন্দ্রপুর থানার সামনে সোমবার রাতে ওই পরীক্ষার্থীকে রাতে একা দেখে এগিয়ে যান স্থানীয় তৃণমূল নেতা পবন পাশোয়ান। পরে এসডিপিওর হস্তক্ষেপে নড়েচড়ে বসে পুলিশ। অভিযুক্ত দুই যুবকের খোঁজে হানা দেয় পুলিশ।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাঁচল শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৮ ০৪:১১
Share: Save:

রাত হলেই বাড়ির টালির ছাদে, উঠোনে দুমদাম করে ঢিল ছুড়ত। পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময়ও রাস্তা আটকে নিয়মিত উত্ত্যক্ত করত দুই যুবক। তার প্রতিবাদ করেছিলেন মা-বাবা। অভিযোগ, তাতে বাড়িতে চড়াও হয়ে মা, বাবা ও দাদুকে বেধড়ক মারধর করে প্রতিবেশী দুই যুবক। দাদুকে ভর্তি করানো হয় হাসপাতালে। চোখের সামনে সব দেখেও মনের জোরে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল দিনমজুরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মেয়েটি। এর মধ্যে অভিযুক্ত দুই যুবকের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানান মেয়েটির পরিজনেরা। কিন্তু তাতে সুরাহা দূরের কথা। পরীক্ষা দিয়ে বেরোতেই ফের হুমকির মুখে পড়তে হয় ওই পরীক্ষার্থীকে। তাই পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি না ফিরে রাত পর্যন্ত থানার কাছেই ঘোরাঘুরি করছিল সে।

হরিশ্চন্দ্রপুর থানার সামনে সোমবার রাতে ওই পরীক্ষার্থীকে রাতে একা দেখে এগিয়ে যান স্থানীয় তৃণমূল নেতা পবন পাশোয়ান। পরে এসডিপিওর হস্তক্ষেপে নড়েচড়ে বসে পুলিশ। অভিযুক্ত দুই যুবকের খোঁজে হানা দেয় পুলিশ। পাশাপাশি পৌঁছে দিতে চাইলেও রাতে বাড়িতে ফিরতে চায়নি সে। এক আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে মঙ্গলবার শেষ পরীক্ষা দিতে চায় বলে পুলিশকে জানিয়েছে ওই পরীক্ষার্থী।

চাঁচলের এসডিপিও সজলকান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘‘পুলিশের কোনও গাফিলতি রয়েছে কি না, তা দেখা হচ্ছে। ওই দুই যুবকের খোঁজে তল্লাশি চলছে। দু’জনেই বাড়িতে নেই। তাদের বিরুদ্ধে মারধর, উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ আনা হয়েছে। ওই ছাত্রীর পরীক্ষা দিতে যাতে কোনও সমস্যা না হয় তা আমরা দেখছি।’’

পুলিশ ও পরীক্ষার্থীর পরিজনদের সূত্রে জানা গিয়েছে, চকসাতনের বাসিন্দা ওই ছাত্রীর বাবা পেশায় দিনমজুর। প্রতিবেশী দুই যুবক বিশাল দাস ও সুরজ ঘোষ তাকে স্কুলে যাতায়াতের পথে হামেশাই উত্ত্যক্ত করে বলে অভিযোগ। পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর সেই মাত্রা আরও বেড়ে যায়। সোমবার অঙ্ক পরীক্ষার আগের দিন সন্ধে থেকে বাড়িতে লাগাতার ঢিল ছোড়ার পর সোমবার সকালেও তারা বাড়ির বাইরে থেকে ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। প্রতিবাদ করায় দুই যুবক বাড়িতে ঢুকে অসুস্থ দাদু, মা ও বাবাকে মারধর করে বলে অভিযোগ। ওই অশান্তির মধ্যে ওই ছাত্রীর পরীক্ষা দিতে বেরিয়ে যায়। কিন্তু পরীক্ষা দিয়ে বাড়ির পথ ধরতেই সে জানতে পারে, বাড়ির লোকজন বিশাল ও সুরজের নামে অভিযোগ করেছে। অভিযোগ না তুললে তাকে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়ায় আর বাড়ি না ফিরে থানার সামনে বসে থাকে ওই ছাত্রী।

ওই ছাত্রী জানায়, ‘‘ওই দুই যুবক দিল্লিতে থাকে। বাড়ি ফিরলেই আমাকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করে। ওরা পড়াশোনা করেনি। আমি মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছি, সেটা মনে হয় ওদের সহ্য হচ্ছে না। কিন্তু অভাব থাকলেও আমি পড়তে চাই।’’

তৃণমূল নেতা পবনবাবু জানান, থানার সামনে স্কুলের পোশাক পরা মেয়েটিকে রাতে ঘুরতে দেখে খটকা লাগায় এগিয়ে গিয়ে সব জানতে পারি। অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ ব্যবস্থা নিলে এমনটা ঘটত না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

eve-teasing Madhyamik student চাঁচল
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE